Sylhet View 24 PRINT

আলোকোজ্জ্বল স্বপ্নময় সন্ধ্যায় আমেরিকায় এইডেডিয়ানদের মিলন মেলা

গোলাম সাদত জুয়েল

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৭-০৭ ১২:৪১:৪৩

গোলাম সাদত জুয়েল

৩০ জুন শনিবার মোটর সিটি খ্যাত মিশিগানের ডেট্রয়টে বসেছিল সিলেটের এইডেড হাই স্কুলের আমেরিকার রি-ইউনিয়ন । আবেগ ও উচছাস ভরা একটি প্রানের মেলা বসেছিল কনান্ট ষ্টিটের গ্রেট অব কলাম্বাসে। এই প্রথম বারের মত আমেরিকায় এইডেড হাই স্কুলের ছাত্রদের পুন:মিলন এর উদ্যেক্ত এইডেডিয়ান ৯৩ ব্যাচ হলেও তা উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। কানাডা ও ইংল্যান্ড থেকে ও অনেকে অংশগ্রহন করেন। এছাড়াও মিশিগান, নিউ ই্য়র্ক, নিউ জার্সি, নাভেডা, ফ্লোরিডা, লাস ভেগাস ,ওয়াশিংটন ডিসি, কানাডার টরেন্টো, মিন্ট্রিয়ল, লন্ডন, ওয়াটারলো থেকে প্রাত্তন ছাত্ররা মিশিগানে জড়ো হতে থাকেন ।

অনুষ্টানটা শুরু হবার কথা ছিল সন্ধ্যা সাতটায় ,কিন্তু ডেট্রয়েটে সন্ধা হয় সাড়ে আটকার আগ পিছু,তাই অনুষ্টানটা ইচছা থাকা সত্বেও সময়মত শুরু করা যায় নি। মুল অনুষ্টান শুরু হয় সোয়া নয় টায়। ততক্ষনে গ্রেট অব কলাম্বাসের আশ পাশে এইডেডিয়ানদের পদচারনায় মুখরিত। বেলুন দিয়ে এইডেড স্কুলের নাম লেখা প্রবেশ মুখে যাবার পরই দেখা মেলে ৯৩ ব্যাচের স্বেচ্ছাসেবকরা সবাইকে বিভিন্ন ব্যাচের নাম সম্বলিত ব্যাচ পরিয়ে দিচেছন। তার পর মুল ভেন্যুতে প্রবেশ করে যে কেউ অবাক হবেন অসাধারন ভেন্যু পরিপাঠি করে সাজানো ও সুন্দর একটি মনকাড়া ব্যানার। রাত ৯ টায় গ্রেট অব কলাম্বাস পুর্ন হয়ে যায় ।

যারা উপস্থিত ছিলেন, তাদের সকলেই এইডেড স্কুলেন প্রাত্তন ছাত্র পরিবার পরিজন সহ । উদ্যেক্তা মাসুদ, রানা, রনি, বেলাল,তানভির, লিটু ভাই, বাপ্পি, ইজদানি,তাইফ,এজাজ,আদিল,নাছির,মোরশেদ এর মুন্সিয়ানার ছাপ। রাত বাড়ে আমরা কানাডা থেকে বাপ্পির অপেক্ষায় তখনও, ব্প্পাীরা চলে আসে সাড়ে নয় টায় মধ্যে। অসম্ভব সাজানো গোছানো একটি অডিয়েন্স, পরিপাটি করে সাজানো। রনি ও তানভির মঞ্চে উঠে নাটকের মত করে অনুষ্টানটা শুরু করেন । প্রথমে কেউ বুঝে উঠতে পারেনি রনি ও্ তানভির কি বলতে চাচেছ। তারপর তানভির ছোট একটা ইন্ট্রডাকশন দিয়ে রিইউনিয়নের উদ্বোধন করেন । রনি ও তানভির বলে ,৯৩ ব্যাচের একটি প্লাটফর্ম আন অফিশিয়ালী কাজ করছে ,তাদের রিইউনিয়নটিকে সার্বজনিন করার বহি:প্রকাশ আজকের ৩০ জুনের রিইউনিয়ন । আগামীতে আরও বৃহদ আকারে করার প্রত্যয় ব্যাক্ত করে কোরআন তেলায়াতের মাধ্যমে অনুষ্টানের শুচনা করা হয় । তখন রাত ঘড়ির কাটা দশটায় , আমেরিকার জাতীয় সংগীত ও ইউডেড স্কুলের এস এম্বলি স্লাইড শো তে দেখে জাতীয় সংগীত সকলে পরিবেশন করেন তত্ক্ষনে পুরো অডিয়েন্স পুর্ন । এর পর ৯৩ ব্যাচের উজ্জল নক্ষত্র লন্ডনের কীল উইনিভার্সিটির এসোসিয়েট ডা: নাজিম আলী প্রজেক্টরের মাধ্যমে “প্রজেক্ট ৯৩” উপস্থাপন ও ব্যাখ্যা করেন । বিশেষ করে ৯৩ ব্যাচের এইডেডিয়ারা বেশ কয়েক বছর থেকে সিলেটে চ্যারিটি করে আসছেন । ডা: নাজিম আলী কিভাবে আরও বৃহদ আকারে সম্মিলিত ভাবে প্রজেক্ট ৯৩ কে বেগবান করা যায় তা তুলে ধরেন । সিলেটে বিভিন্ন সুবিধা বঞ্চিত স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের কিভাবে হেল্প করা যায় তা তুলে ধরেন ডা: নাজিম । তখন উপস্থিত সকলকে প্রজেক্টগুলো বিস্তারিত বিবরন এর প্রিন্টিং সুভেনির প্রদান করা হয় । একটি ব্যাচের কয়েক জন প্রাত্তন ছাত্র কিভাবে একত্রিত ভাবে চ্যারিটি পরিচালনা করে আসছেন তা সকলের নিকট প্রশংসিত হয় । ডা: নাজিমের সুন্দর উপস্থাপনার পর নামাজের বিরতি ও এপিটাইজারের বিরতি প্রদান করা হয় ।তখন ৯৮ ব্যাচের পক্ষ থেকে আরেকটি চ্যারেটিচলমান তার একটি ব্যাখ্যা পাওয়া ৯৮ ব্যাচের কাছ থেকে ।

তানভির ও রানার চম্যকার হাস্য রসাত্বক উপস্থাপনা অনুষ্টানকে গতিশীল করে । এর পর তানভীর সকল ব্যাচের শিক্ষার্থিদের মঞ্চে ডাকেন । তখন সকলে আমরা মঞ্চে উঠে যাই । কানাডা থেকে আসেন ব্প্পাী রহমান, সাদিক রহমান,তানভীর মোরশেদ, লন্ডন থেকে মিনহাজ হোসেন ও ডা: নাজিম, মাসুদ আহমদ ( লাস ভেগাস ) ওয়াসিমুজ্জামান রনি, রানা লস্কর , বেলাল ,শিপু জায়গিরদার, দিপু চৌ:জিয়া চৌ:, সাকী ইসলাম , মিশু ভাই , লিটু ভাই

( মিশিগান ) সাইফুল আলম ইজদানি ( মনট্রিল ) ,হুম্য়াুন কবির, জাহিদ রহামান, রন্জু দত্ত ( নিউ ইয়ক ) আদিল,শিপন চৌ :( নিউ জাসি ) , নাজমুল,ফারুক আহমদ ( বাফেলো ) , জুয়েল সাদত ( ফ্লোরিডা ) , আমজাদ আলী ( অনটারিও ) আরও ছিলেন মিশিগানের অনেকে । অনেক কে ডেকে সরাসরি মঞ্চে তুলা হয় । প্রায় শ খানেক এইডেডিয়ান উপস্থিত হন ।
 
মঞ্চে আলোর ঝলকানিতে চলে ফটো সেশন, বিভিন্ন ব্যাচের এইডেডিয়ানরা তখন মঞ্চে । তার পর উন্মুক্ত স্মৃতি চারন পর্বে প্রথমেই কথা বলার সুযোগ পাই আমি জুয়েল সাদত ( ৯০ ব্যাচ ) , বা্প্িপ একটু বাড়িয়ে ও আমার কথা বলেন । রনির কাছ থেকে মাইকটা পেয়ে আমি কিছুটা আবেগে কথা বলি । কিভাবে ৯৩ ব্যাচের সাথে সংযুক্ত হলাম , মিশিগান থেকে চলে যাবার কথা থাকেলেও অনুষ্টানের জন্য নতুন টিকেট কেটে আজকের অনুষ্টাকে থাকা , ছোটদের সুন্দর কাজ দেখে কিভাবে জড়িয়ে যাওয়া । সুন্দর এ্ই ব্যয়বহুল ভেন্যুটি নিয়ে আপত্তি থাকলে আজ অসাধারন লাগছে । মাসুদ,রনি,রানা,বেলাল অসাধারন একটা সন্ধ্যা উপহার দিল । আজ না থাকলে জীবনে অনেক বড় একটি অনুষ্টান মিস করতাম । ছোট ভাইয়েরা অনেক বড় কাজ করে আমাদের দেখিয়ে দিল চাইলেই পারা যায় ।

পিনপতন নিরবতায় অনেকে আমার কথা গুলো শুনেন । আগামীতে আরও বিশাল আকারে নিউ ইয়ক, ফ্লোরিডা বা টরেন্টতে আমার রিইউনিয়নের ঘোষনা দেই । আর আগামীতে ৯৩ ব্যাচের সাথে অকুন্ঠ সম্পৃক্ত থাকার প্রত্যয় ব্যাক্ত করি । যে কথাটা বলা হয় নি , মহিউদ্দিন স্যারের কাঠের কাজের ক্লাস করে ই আজ আমারা বিদেশে বাসা বাড়ীর ঠিক করতে পারি , এই শিক্ষাটাই কাজে লাগল । আর টিফিনের পর ফজলুল হক স্যার সাটারিং এর বাশ দিয়ে পেটাতেন জোহরের নামাজ না পড়ার জন্য , আজ আমরা সবাই নামাজ পড়ি । এটাই কাজে লাগল জীবনে ।

 আরও কয়েকজন স্মৃতি চারন করেন তারা হলেন , ৭৬ ব্যাচের মনওয়ার হোসেন , ৮১ ব্যাচের আমিনুর রহমান , ৯০ ব্যাচের আহবাবুর রহমান, ৯০ ব্যাচের বেলাল , ২০০৩ ব্যাচের সায়েম ,২০০৫ সালের ফজলুল আমিন । ৯০ ব্যাচের মোরশেদ আহমদ প্রমুখ । স্মৃতি চারনে বেশির ভাগই মহিউদ্দিন স্যারের সাথে সবার বেশী স্মৃতি চারন করেন । ফজলুল আমিন টিফিনের সময় বেশী খাবারের আশায় ক্যাপ্টেইন এর বন্ধু হবার কথা বলেন । মহিউদ্দিন স্যার যে ভাবে চিমটি কাটতেন তা সবাই দেখান । স্মৃতি চারন এর পর তানভির আয় ব্যায়ের একটি হিসাব দেন ও স্পন্সরদের ধন্যবাদ দেন বিশেষ করে আলাউদ্দিনের লিটু ভাই ( ৮৮ ব্যাচ ) খাবার প্রদান করেন , কুইক সেন্ট এর বেলাল ( ৯০ ব্যাচ ) সুফিয়ান কোরেশী , কোরেশী হোলসেল ( বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী ,মিশিগান ) । তার পর রাতের ডিনারের আহবান জানান তানভির । আলাদিনের আসাধারন খাবার ছিল , খাবারের চেয়ে গল্প গুজবে ছিল সবার মন । তারপরও হোষ্টদের পক্ষ থেকে সবাইকে খাবার পেির্বশন করা হয় । ছিল সিলেটের পান ও আলাউদ্দিনের অসাধারন মিষ্টি । একটি পরিচছন্ন ও গোছালো অনুষ্টানের পুরোটা খুজে পাওয়া যায় , রাত ৮ টা শুরু হয়ে তা চলে রাত ১ টা পযন্ত । ছিল বাচ্চাদের ফেস পেন্টিং । বাচ্চারা মুখে নানান কারেকটার একে মজা করে ঘুরে বেড়ায় ।

খাবার চলাকালে মঞ্চে চলে আসেন ৯৩ ব্যাচের সফি , টিপু ও দিপু । তিন জন ব্যান্ডের অসাধারন জনপ্রিয় গান পরিবেশন করেন । প্রায় দেড় ঘন্টা এক নাগারে দিপু , টিপু ও সফি গান পরিবেশন করেন । তাদের গান পরিবেশনের সময় অনেক বাচচা মঞ্চে নেচে আনন্দ করে । রাত তখন দেড় টা গান চলে সাথে চলে আড্ডা কেউ বাসায় যেতে রাজি নন । আমরা ৯০ ব্যাচের চার জন বেলাল, আহবাব, মোরশেদ ,জুয়েল মিলিত হলাম ২৮ বছর পর । মিলন মেলা যখন পুরোপুরি শেষ হল তখন ঘড়ির কাটা ২ টায় । অনেকের ফেরার পালা,যারা কানাডা ও বিভিন্ন ষ্টেট থেকে ড্রাইভ করে এসেছেন তারা সেখান থেকেই একটি সুন্দন স্মুতি নিয়ে যাত্রা করেন । আবার দেখা হবার প্রত্যয় ব্যাক্ত করে আমরা সবাই বাড়ির পথ ধরি ।

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.