আজ শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ইং

নৈতিকতা ও আদর্শ বিবর্জিতরা কোনদিন নেতা হতে পারেনা

:: মওদুদ আহমদ আকাশ ::

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৫-০৬ ২৩:০০:৪১

নৈতিকতা ও আদর্শ বিবর্জিত মানুষ কোনদিন নেতা হতে পারেনা। যার মধ্যে নীতি আদর্শ নেই, তার কোনো মূল্যবোধও নেই। নীতি আদর্শ বিবর্জিত লোক দ্বারা যে কোনো অন্যায় কাজ সম্ভব। নীতি আদর্শহীন লোক সবসময় স্বার্থের পিছনে দৌঁড়াতে থাকে, তাদের উদ্দেশ্য একটাই নিজেদের আখের গোছানো। দলের কর্মীদের মূল্যায়ন হচ্ছে কিনা, সেদিকে তাদের কোনো খেয়াল থাকেনা। তারা সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকে নিজেকে নিয়ে এবং কিভাবে দলের সৎ ও আদর্শবান নেতা ও কর্মীদের দূরে রাখা যায় সেই চেষ্টায় তারা মরিয়া।

যাদের মধ্যে নীতি ও আদর্শ আছে তাদের প্রতি মানুষের ভালোবাসাও আছে। আর যাদের মধ্যে নীতি আদর্শ নেই তাদের প্রতি মানুষের ভালোবাসাও নেই।  উদীয়মান ছাত্রনেতাদের বলছি নীতি ও আদর্শের পিছনে ছুটোছুটি করুন, নীতি আদর্শ ঠিক থাকলে সবাই আপনার পিছনে ছুটবে। সবাই আপনাকে ভালোবাসবে, চারিদিকে আপনার জয়গানও শোনা যাবে।

জননেত্রী শেখ হাসিনা তার একটি প্রবন্ধে ছাত্র রাজনীতির মূল লক্ষ সম্পর্কে লিখেছেন- ‘ছাত্র রাজনীতির মূল লক্ষ্য হচ্ছে সমাজ, দেশ ও রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বদানে নিজেকে গড়ে তোলা।’ (শেখ হাসিনা রচনাসমগ্র ১, পৃ-১৭৯)। এজন্য তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার উপযুক্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছিলেন ১৯৯৪ সালের প্রথম থেকেই। নেত্রীর এই প্রত্যাশা অনুসারে আমি চাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিজেকে উৎসর্গ করে দিতে।

যে আদর্শ ও স্বপ্ন নিয়ে ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর সেই আদর্শের সংগঠনকে সুশৃঙ্খল ও শক্তিশালী করতে আমি যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছি। ছাত্রলীগের একজন ক্ষুদ্রকর্মী হিসেবে আমি চাই বাংলাদেশের প্রতিটি ক্যাম্পাসে সব সময় শিক্ষার ভাল পরিবেশ বজায় থাকুক। সবসময় সাধারণ ছাত্রের দাবী আদায়ের জন্য ও শিক্ষার উত্তম পরিবেশ বজায় রাখার জন্য আমরা সব ধরনের কাজ করে যাব।

জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ‘স্কুল জীবনের কিছু স্মৃতিকথা’ (সাদা কালো) প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘আমাদের দেশে ছাত্র রাজনীতির ঐতিহ্য ছিল অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার আন্দোলন করার জন্য। ছাত্র রাজনীতির এই ঐতিহ্য নষ্ট করার জন্য এবং আইয়ুব খানের আমলেই ছাত্র রাজনীতিতে অস্ত্রধারীদের মহড়া শুরু হয়। মেধাবী গরিব ছাত্রদের অর্থ দিয়ে ছাত্র রাজনীতি ধ্বংসের এই চক্রান্ত আজও বিদ্যমান।’

ক্যাম্পাসে অস্ত্রধারীদের মহড়া করিয়ে ছাত্র রাজনীতি ধ্বংসের ষড়যন্ত্র যদি কেউ করে তাহলে আমরা তা প্রতিরোধ করে শিক্ষার পরিবেশ রক্ষা করব। আমাদের এটা মনে রাখতে হবে সব সময় ছাত্র রাজনীতির মধ্য দিয়ে ভবিষ্যৎ রাজনীতিবিদ তৈরি হয়। ছাত্ররাজনীতি হলো রাজনীতির প্রাইমারি লেভেল। আমি মনে করি যে নেতা অতীতে ছাত্ররাজনীতি করেননি তার রাজনীতি পরিপক্ক নয়। ছাত্র রাজনীতির মধ্য দিয়ে রাজনীতির প্রকৃত শিক্ষা-অর্জিত হয়। ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মী বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আদর্শ ধারণ করে। আর যারা এ আদর্শ ধারণ করে না, তারা তো ছাত্রলীগ নয়। ছাত্রলীগ মানেই তো বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা। ছাত্র রাজনীতিকে কেন্দ্র করে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে আমরা তা কঠোর হস্তে দমন করব। কেননা, শৃঙ্খলা ছাত্রলীগের অন্যতম প্রধান শর্ত। যেখানে শৃঙ্খলা নেই, সেখানে শান্তি থাকতে পারে না। আর যেখানে ছাত্রলীগের মূলনীতি হল- শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতি- সেখানে ছাত্রলীগ বিশৃঙ্খলা মেনে নিতে পারে না। বিভিন্ন বাস্তবধর্মী কর্মশালার মাধ্যমে ছাত্রলীগের কর্মীদের আদর্শ ও নৈতিকতার শিক্ষা দেওয়া হয়। জননেত্রী শেখ হাসিনা সব সময় বলে থাকেন, ‘জনগণের ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই আমার রাজনীতি।’ আমিও তাই মনে করি। আমি আমার ব্যক্তিগত স্বার্থের চেয়ে দেশ ও দলের স্বার্থকে বেশি প্রাধান্য দেই। প্রান প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ভিশন ও মিশন বাস্তবায়নে আমি আমার জায়গা থেকে কাজ করে যাচ্ছি এবং করে যাব ইনশাল্লাহ।

লেখক : সাবেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, সিলেট জেলা।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন