আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং
শাকির আহমদ, কুলাউড়া :: ১৯৯৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে কুলাউড়ায় নৌকা প্রতিকে নির্বাচন করে এমপি হয়েছিলেন ঢাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ। এরপর থেকে জাতীয় নির্বাচন, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা নির্বাচনে নৌকার পালে হাওয়া লাগাতে পারেন নি কেউ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দলই এর কারণ। যদিও বিগত ইউনিয়ন নির্বাচনে ১৩ ইউনিয়নের ৪ ইউনিয়নে নৌকা ভাসলেও উপেক্ষিত বেশীরভাগ ইউনিয়ন।
কুলাউড়ার অথৈই সাগরে (জনস্রোত) যখন নৌকা কোন কূল কিনারা পাচ্ছিলো না, ঠিক তখন এবারের পৌর নির্বাচনে নৌকার মাঝি হয়ে তা ভাসালেন অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ।
পরিকল্পিত মাঠ প্রচার, পৌরবাসীর কাঙ্ক্ষিত প্রতিশ্রুতি বিনিময়ে তিনি ছিলেন বেশ কৌশলী। শক্ত হাতে বৈঠা বেয়ে নৌকাকে ঠিকই তীরে ফেরালেন তিনি। মঞ্চটা ছিলো কুলাউড়া পৌরসভা।
প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী থেকে ১৫৩ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী অধরা নৌকার বিজয়ে তিনি হাওয়া লাগালেন অবশেষে। তাঁর প্রাপ্ত ভোট হল ৪ হাজার ৮৩৮ ভোট।
উনার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী স্বতন্ত্র প্রার্থী শাজান মিয়া জগ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৪ হাজার ৬৮৫ ভোট। এছাড়া আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র মো. শফি আলম ইউনুছ নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২ হাজার ৯৯৪ ভোট এবং বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী ও সাবেক মেয়র কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ ১৭৭৬ ভোট পেয়ে চতুর্থ হয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুলাউড়ার এক সুশীল ব্যক্তি বলেন, নানা সংগ্রাম, নির্যাতন, ত্যাগ স্বীকার করে আজ সফলতার এপর্যায়ে অধ্যক্ষ সিপার। উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক থাকাকালীন বা এর পরবর্তী সময়ে অনেকটা স্রোতের বিপরীতে নিজের দক্ষতায় তিনি আজ এপর্যায়ে। উনাকে ভাগ্যবান বললে কম হয়ে যায়। এই বয়সে উনি একাধারে একটি কলেজের অধ্যক্ষ, কুলাউড়ার জনপ্রিয় একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক আর এখন পৌর মেয়র।
শনিবার রাত ৮টায় উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে নির্বাচনী কন্ট্রোলরুমে বেসরকারীভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন কুলাউড়া পৌরসভা নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নি অফিসার ও সিলেটের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শুকুর মাহমুদ মিঞা।
নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এ বিজয় সমগ্র কুলাউড়া পৌরবাসীর। জননেত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত নৌকা প্রতীকের বিজয়ে কুলাউড়া পৌরসভার সম্মানিত ভোটার, দলীয় নেতাকর্মী, প্রশাসন ও শোভাকাঙ্ক্ষীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, দ্বিতীয় ধাপের কুলাউড়া পৌরসভা নির্বাচনে ৪ জন মেয়র পদপ্রার্থী, ৩৩ জন কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ও ১৬ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদপ্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ৯টি ভোট কেন্দ্রে ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে র্যাব, বিজিবি ও পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্স ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৭জানুয়ারি২০২১/শাকির