আজ মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪ ইং
শুয়াইব আহমদ :: মধ্য প্রাচ্যের দেশ কাতারে বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে।
২১ শে ফেব্রুয়ারী মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি কাতারস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে পালিত হয়। আয়োজনের অংশ হিসেবে, ২০ ফেব্রুয়ারি, শনিবার কাতারে অবস্থানরত বাংলাদেশী নাগরিকদের অংশগ্রহণে অনলাইনে বাংলা ভাষায় বক্তৃতা প্রতিযোগিতা এবং কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বক্তৃতা প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিন। বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় মোট তিনটি গ্রুপে ৩ জন করে যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেন মোট ৯ জন প্রতিযোগী।
এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা হলেন উম্মে হানি, সামরিন জাহান সারা, সামিয়া আকতার, মো. দিদার উজ্জামান, মহসিন, মাহজেবিন বিনতে হাসান, মাইশা জামান, রাহনুমা আন্জুম এবং মাহমুদুল আলম। কুইজ প্রতিযোগিতায় মোট ১০ জন প্রতিযোগী সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। বিজয়ীরা হলেন দুররিয়া আলিশা, ফকরুল আলম, বিল্লাল হোসেন, মিফতাহুল ফালহা, ওবাইদুল্লা আল রাফি, জান্নাতুল মাওয়া, মাহমুদুর রহমান, কামাল উদ্দিন, কামাল হোসেন এবং জাহাঙ্গীর কবির।
করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত স্থানীয় বিধিনিষেধ মেনে ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গনে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয় এবং ঘরোয়াভাবে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত, ভাষা শহিদসহ সকল শহিদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। ভাষা শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতাও পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।
অমর একুশে আলোচনায় কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিন বায়ান্নর শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন যে, ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনা হয়, যার ফলশ্রুতিতে ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় প্রবাসীদের অবদান রাখার আহ্বান জানিয়ে আরো বলেন যে, এ অবদানের মধ্য দিয়ে ভাষা শহিদ এবং স্বাধীনতার সূর্য সন্তানদের আত্নত্যাগের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা সম্ভব হবে। তিনি করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের সাফল্য এবং অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সাফল্যের কথা উল্লেখ করে প্রবাসে বাংলাদেশের ইতিবাচক অর্জনসমূহ তুলে ধরার উপর গুরুত্বারোপ করেন। মুজিববর্ষ পালন উপলক্ষে দূতাবাস কর্তৃক গৃহীত কর্মসূচী প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন যে, মার্চ থেকে ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত ‘বঙ্গবন্ধু সংলাপ’ নামে একটি সাক্ষাৎকার সিরিজের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে যেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধা, কাতারের বিভিন্ন পেশাজীবি শ্রেণী, নারী উদ্যোক্তা ও নতুন প্রজন্মের শিশু কিশোরদের অংশগ্রহণ থাকবে। এছাড়া, সমকালীন এবং সর্বকালীন প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধু শীর্ষক একটি ভিডিও চিত্র নির্মাণেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তী উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে বলে রাষ্ট্রদূত জানান। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের উপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।
এর আগে দোহাস্থ বাংলাদেশ এমএইচএম স্কুল ও কলেজে রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিন জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। এ সময় দূতাবাসের কাউন্সেলর ড. মো. মুস্তাফিজুর রহমান, কাউন্সেলর মো. নাজমুল হাসান, কাউন্সেলর মো. মাহবুর রহমান, প্রথম সচিব তন্ময় ইসলাম, স্কুলের পরিচালক মো. আনোয়ার খুরশীদ, অধ্যক্ষ মো. জসীম উদ্দিনসহ শিক্ষক শিক্ষীকাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডিজেএস-২০