আজ শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ইং

তারেকের ইন্ধনে বি. চৌধুরীর উপর প্রতিশোধ নিলেন ড. কামাল

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১০-১৬ ২৩:৫১:৫০

সিলেটভিউ ডেস্ক :: বিভিন্ন সময় বিএনপির বদনাম করা এবং বিএনপিতে বিভেদ সৃষ্টির অপচেষ্টার জন্য বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সভাপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরীর উপর প্রতিশোধ নিয়েছেন লন্ডনে পলাতক বিএনপি নেতা তারেক রহমান।

সূত্র বলছে, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় না নিয়ে নির্বাচনের পূর্বে দেশবাসীর সামনে বি. চৌধুরী ও তার ছেলেকে হতাশার সাগরে ডুবিয়েছেন তারেক রহমান। তারেক রহমানের প্রতি হিংসাত্মক ও অপমানসূচক মন্তব্য করার জন্যই মূলত নির্বাচনের পূর্বে বিকল্পধারাকে উচিত শিক্ষা দিয়েছেন ড. কামাল।

বিশিষ্টজনরা বলছেন, বিএনপির শর্ত মেনে না নেওয়া এবং বিএনপি ও জামায়াতের সম্পর্ক নষ্ট করার চেষ্টার অভিপ্রায়ের অভিযোগে তারেক রহমানের রোষানলে পড়ে দুকূল হারিয়েছেন বি. চৌধুরী ও তার ছেলে। এতে বিএনপির রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে অতীতের মতো আবারো মূলধারার রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়লো বিকল্প ধারা। এই ধাক্কা সামলে উঠে নতুন করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাব সৃষ্টি করতে বিকল্পধারাকে যথেষ্ট বেগ পেতে হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

বিভিন্ন সূত্রের খবরে জানা যায়, বিএনপি থেকে বের হয়ে বি. চৌধুরী এবং তার ছেলে মাহী বি. চৌধুরী দলটির বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করতে কাজ করেছেন। বিএনপির কাছ থেকে সবকিছু পেয়েও দলটির বিরুদ্ধে নেতিবাচক রাজনৈতিক অবস্থান নেয়ায় তারেক রহমানের কাছে অপ্রিয় ছিলেন বি. চৌধুরী ও তার ছেলে। বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য বিকল্পধারা গঠন করে তারেককে এক ধরনের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন তারা। সূত্র বলছে, মূলত তারেক রহমানের উপর রাগ করেই বিএনপিকে ত্যাগ করেন বি. চৌধুরী। বিএনপির উপর প্রতিশোধ নিতে বিভিন্ন সময়ে বি. চৌধুরী ও তার ছেলে দলটির বিরুদ্ধে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন, বিএনপিকে বেকায়দায় ফেলেছেন।

এদিকে নির্বাচনের পূর্বে পিতা-পূত্রের উপর প্রতিশোধ নিতে কৌশল অবলম্বন করেন তারেক রহমান। ড. কামালকে টোপ দিয়ে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় যুক্ত করে বি. চৌধুরীকে নিজের পাঁতানো জালে আটকাতে চেয়েছিলেন তারেক। কারণ তারেক সরাসরি প্রস্তাব দিলে বি. চৌধুরী মানতেন না। তাই তারেক প্রতিশোধের মিশনে ড. কামাল হোসেনকে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফরিদ হোসেন। তার মতে, ড. কামালের কথায় আশ্বস্ত হয়ে বিএনপিকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর জোট গঠন করার বিষয়ে একমত হলেও জামায়াত নিয়ে বি. চৌধুরীর অ্যালার্জি থাকায় তারেক তার উপর চরম ক্ষিপ্ত হন। বিএনপি কোনদিনই জামায়াতকে ছাড়বে না, তারেক রহমানের এমন বক্তব্যে বিরক্ত হয়ে বিভিন্ন বক্তব্যে বি. চৌধুরী জোটভুক্ত না হওয়ার আভাস দিয়ে তারেক রহমানকে পরোক্ষভাবে অপমান করেন। তাই বিকল্পধারার উপর প্রতিশোধ নিতে ড. কামালকে সাথে নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছেন তারেক। ড. কামাল বি. চৌধুরীকে বাদ দিয়েই অন্য নেতাদের সাথে নিয়ে ঐক্য প্রক্রিয়া গঠন করেছেন। এর কারণে দুকূল হারালেন বি. চৌধুরী ও মাহী। তারা এখন বৃহত্তর জোটেও আসতে পারবেন না, আবার সরকারের সাথেও যোগ দিতে পারবেন না । তারেক রহমানের রোষানলে পড়ে তাদের কপাল পুড়লো।

এই বিষয়ে গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ভাবতে কষ্ট লাগে যে, তারেক রহমানের মতো একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির পাতানো ফাঁদে পা দিয়েছেন ড. কামাল, বি. চৌধুরী, মান্না, রবের মতো সিনিয়র ও বিজ্ঞ নেতারা। তারেক রহমানের মানিপ্ল্যানে এই নেতাদের ভেতর এরইমধ্যে বিভক্তি স্পষ্ট হয়েছে। যে বিএনপি কোনদিন ড. কামালকে সম্মান করেনি, সেই বিএনপির ছাতা সামলাচ্ছেন ড. কামাল। বিষয়টি রাজনীতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা। কোন প্রলোভনের আশায় ড. কামাল ও বি. চৌধুরী একজন পলাতক আসামির কথায় উঠবস করলেন সেটি সকলেই জানে। শেষ বয়সে এসে নতুন করে কলঙ্কে জড়াবেন উনারা, এতে কোন সন্দেহ নেই। তারেক রহমানের কথা না শোনায় আবারো অপমানিত হয়েছেন বি. চৌধুরী ও তার ছেলে। অন্যের আশায় ঘর বাধার চেষ্টা করলে আশাহত হতে হয় সেটি আবারো প্রমাণ হলো। তারেক রহমান কৌশলে যে ধাক্কা দিয়েছেন, সেটি সামলে উঠতে বি. চৌধুরীদের বেশ সময় লাগবে। রাজনীতি করেন অথচ রাজনৈতিক জ্ঞানের অভাব হলে তো ফাঁদে পড়তে হবেই। বি. চৌধুরী ও তার ছেলে এখন কূলহারা। না পারবেন জাতীয় ঐক্যের সাথে যুক্ত হতে না পারবেন সরকারের সাথে চুক্তি করতে। রাজনীতিতে আবারো পিছিয়ে গেল বিকল্পধারা।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন