আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

জামায়াতকে হুমকি মনে করে যুক্তরাষ্ট্রের সুশীল সমাজ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১২-১৬ ১২:৫২:০৫

নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের জন্য জামায়াতে ইসলামীকে বড় হুমকি বলে মনে করে যুক্তরাষ্ট্রের সুশীল সমাজ, থিংকট্যাংক ও আইনপ্রণেতারা। ১২ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনে হাডসন ইনস্টিটিউট থিংকট্যাংক আয়োজিত ‘বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা, গণতন্ত্র ও ইসলামিতন্ত্র’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা একথা বলেন।

এদিকে গত নভেম্বরের ২০ তারিখ মার্কিন কংগ্রেসে ‘বাংলাদেশে কাজ করছে এমন ধর্মীয় সংগঠনগুলো গণতন্ত্রের জন্য হুমকি’ শীর্ষক একটি রেজুলেশন জমা দেন হাডসন ইনস্টিটিউটের মার্কিন আইনপ্রণেতা জিম ব্যাংকস।

মার্কিন আইনপ্রণেতা জিম ব্যাংকস বলেন, ‘জামায়াত বাংলাদেশের উন্নতির জন্য একটি হুমকি। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরাপদ নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশিদের পাশে আছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু, জামায়াতে ইসলামীসহ কিছু ইসলামপন্থী দল দেশের গণতন্ত্র ও উন্নয়নের পথে বাধা। মৌলবাদী ইসলামিক দলগুলোকে প্রতিহত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন জানায়।’

হাডসন ইনস্টিটিউটের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া প্রোগ্রামের পরিচালক হোসেন হাক্কানি বলেন, এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ একটি সফল অর্থনীতির দেশ। জামায়াতে ইসলামীসহ আরও কিছু ধর্মভিত্তিক দলের উত্থান স্পষ্ট লক্ষণীয়। যা উন্নয়নের জন্য হুমকিস্বরূপ।

বাংলাদেশের মানুষদের অভিব্যক্তি ব্যক্ত করে জামায়াতে ইসলামীর এই অঞ্চলের এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের মৌলবাদী দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রও একমত। এমন প্রেক্ষাপটে আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের ফল বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন হোসেন হাক্কানি।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম বলেন, ‘সম্ভবত আমেরিকানরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়েছে। আমি এর আগে কখনোই এত তীব্র জামায়াতবিরোধী আলোচনা শুনিনি। তাদের উচিত ছিলো আরও আগে সজাগ হওয়া। কিন্তু, অন্তত তারা এখন জামায়াতবিরোধী বক্তব্য রাখছে।’

তারিক এ করিম বলেন, ‘পাকিস্তান হওয়ার সময়ে জামায়াত এর বিরোধিতা করেছিল। পরবর্তীতে জামায়াতের প্রধান মওদুদীর ফাঁসির আদেশ হয়েছিল। কিন্তু, সেটি কার্যকর না হওয়ার পরিবর্তে অচ্ছুৎ থেকে মওদুদী একজন ‘কিংমেকার’ এ পরিণত হন। এর প্রধান কারণ হচ্ছে, পরবর্তীতে সব মিলিটারি সরকারই জামায়াতের রাস্তায় সংগ্রাম করার শক্তিকে ব্যবহার করেছে।’
একই মত পোষণ করে নিরাপত্তা বিশ্লেষক সাবেক মেজর জেনারেল আব্দুর রশিদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সমাজ এখন বুঝতে পেরেছে জামায়াতের মতো মৌলবাদী সংগঠনগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা দিলে এটি তাদের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর। ২০১৩-১৪ সালে যে তাণ্ডব বাংলাদেশে সংঘটিত হয়েছিল, তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র তাদের মনোভাব পরিবর্তন করেছে। এটি পরিষ্কার, ধর্মভিত্তিক দলগুলোর উত্থান বাংলাদেশ, এই অঞ্চল এবং গোটা বিশ্বের জন্য ভালো নয়।’

উদাহরণ হিসেবে আব্দুর রশিদ বলেন, ‘পাকিস্তানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আগের মনোভাব এখন আর নেই। বর্তমানে যারা সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করছে, তাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।’

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন