আজ শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ইং
সাড়ে পাঁচ বছর আগের কথা। ফিলিস্তিনির ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে নিজের বাড়ির কাছে ইসরায়েলি সেনার অবৈধ দখলদারির প্রতিবাদ করেছিল সে। ইসরায়েলি সেনার গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিল তার পনেরো বছরের ভাই। তাই ইসরায়েলের সেনার বিরুদ্ধে তার ক্ষোভ চেপে রাখতে পারেনি এই কিশোরী। এক সেনাকে সজোরে ঘুষি মেরে বসেন।
এর পরেই সেই কিশোরীকে গ্রেফতার করে ইসরায়েলি সেনা। হোক না বারো বছর বয়স, তাকে সাবালিকা হিসেবেই দেখেছে ইসরায়েলি। শেষ পর্যন্ত গত ডিসেম্বরের এক রাতে তাকে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার পর জেলেই সময় কাটিয়েছে সে। কিছু দিন আগেই ১৭ বছরে পদার্পণ করেছে সে।
এ হেন আহেদ তামিনি, ইসরায়েলের কাছে খলনায়িকা হতে পারে, কিন্তু ফিলিস্তিনিদের কাছে সে এক স্বাধীনতা সংগ্রামী। বিশ্বের কাছেও সে এক 'আইকন'। ইসরায়েল যে তাকে সহ্য করতে পারে না, তার কারণ সে তাদের সেনা জওয়ানকে অপমান করেছে। তাই তার শাস্তি স্বরূপ ইসরায়েলের আদালতেই তার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে। তার বিরুদ্ধে যে ধারা এনেছে ইসরায়েলে তাতে একাধিক বছরের জেল হতে পারে আহেদের।
তবে শুধু আহেদই নয়, এই মুহূর্তে অন্তত তিনশো ফিলিস্তিনির নাবালক-নাবালিকা ইসরায়েলের জেলে রয়েছে। সবার বিরুদ্ধে 'অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের' অভিযোগ এনেছে ইসরায়েল। এত অল্প বয়সে কোনো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তারা কী অপরাধমূলক কাজ করবে সেটা সম্ভবত ইসরায়েলই জানে।
মেয়ের এই কীর্তিতে আদৌ চিন্তিত নন তার বাবা, বরং তিনি গর্বিত। গর্ব করেই তিনি বলেন, তার মেয়েকে কিছু দিন হয়তো জেলে রাখতে পারে ইসরায়েল। যে অভিযোগে আহেদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে, একই অভিযোগ রয়েছে আহেদের মায়ের বিরুদ্ধেই। মেয়ের সাথে একই জেলে রয়েছে মা।
বাবা আশাবাদী, আহেদের বেশি সাজা দিতে পারবে না ইসরায়েল। কারণ ইতিমধ্যে অনলাইন আবেদনের মাধ্যমে ১৭ লাখ মানুষ আহেদকে সমর্থন জানিয়েছেন। বাবার মতে, এটাই হয়তো ফিলিস্তিনির ওপরে ইসরায়েলের দখলদারির শেষের শুরু।