আজ শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ইং

পর্যাপ্ত ঘুমিয়ে করোনাকে পরাস্ত করা সম্ভব!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৩-২৬ ২০:২৪:৩৩

সিলেটভিউ ডেস্ক :: মারাত্মক ছোঁয়াচে করোনাভাইরাস আতঙ্কে কাঁপছে পুরো বিশ্ব। জিনের গঠন বদলে প্রতিনিয়ত আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে এই ভাইরাস। কিভাবে এই মারণ ভাইরাসকে রুখা যাবে সেটা এখনও অজানা। বিশ্বজুড়ে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর এখন সবার দৃষ্টি এর প্রতিষেধক এবং ওষুধের দিকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, এই সংক্রমণের কার্যকর ওষুধ বা প্রতিষেধক এখন পর্যন্ত উদ্ভাবিত হয়নি। তবে আশার কথা এটাই যে- যুক্তরাষ্ট্র, চীন, হংকং, অস্ট্রেলিয়া, ইজরায়েল, পোল্যান্ডে এই মারণ ভাইরাসকে প্রতিরোধ করার উপায় আবিষ্কারের চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানী-গবেষকরা। কাজও এগোচ্ছে তরতরিয়ে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে মানবদেহে করোনা প্রতিষেধক টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে।

তবে এবার তুরস্কের একজন গবেষক বলেছেন পর্যাপ্ত ঘুম করোনাভাইরাসে মৃত্যুর আশঙ্কা কমিয়ে দিতে পারে। পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের ন্যাচারাল কিলার সেল বাড়িয়ে দেয়। এই কিলার সেল ভাইরাস ও ক্ষতিকর জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে। তিনি বলেছেন, আইসোলেশনে থাকাকালে পর্যাপ্ত ঘুমের মাধ্যমে শরীরের ডেথ সেল বাড়িয়ে করোনাকে পরাস্ত করে দেওয়া সম্ভভ।

ঘুমের ব্যাঘাত হলে শরীরের ন্যাচারাল কিলার সেলগুলো কমে যায়। এই কোষগুলি টিউমার এবং ভাইরাল সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। ভাইরাসকে প্রাকৃতিকভাবে প্রতিরোধ করতে হলে পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন বলে দাবি করেন ওই গবেষক।

তুরস্কের এডিরিন প্রদেশের তার্কিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরবৃত্ত বিশেষজ্ঞ লেভেন্ট ওজতুর্ক বলেছেন,'শরীরের ইমিউন সিস্টেম সঠিকভাবে কাজ করার মূল চাবিকাঠি হল স্বাস্থ্যকর ঘুম। ঘুম ভালো হলে শরীর প্রাকৃতিকভাবেই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে একে পরাজিত করতে পারে।

ওজতুর্ক জোর দিয়ে বলেছেন, এমনকি মাত্র এক রাতের পর্যাপ্ত ঘুমেও শরীরে প্রাকৃতিক ঘাতক লিম্ফোসাইটের সংখ্যা এবং ক্রিয়াকলাপ হ্রাস পায় যা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, শরীরের যে ন্যাচারাল কিলার সেলগুলি সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা ব্যুহ তৈরি করে এবং দেহে প্রবেশকারী ভাইইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে ঘুমের মাধ্যমে সেগুলি অধিক কার্যক্ষম হয়ে ওঠে। এগুলিই এমন কোষ যা আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ওজতুর্ক আরও উল্লেখ করেন যে, নতুন করোনাভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হল কম লোকের সাথে যোগাযোগ করা এবং বেশি বেশি ঘুমানো।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধের একটি সহজতম উপায় হল, বাড়ি থেকে কাজ করা। এই মুহুর্তে আমাদের বাঁচতে হলে বাড়িতে থেকে কাজ করার অভ্যাস করতে হবে। ত বাড়িতে আমরা ছুটি বা অলস কাটানোর সময়টাতে ঘুমাতে পারি। তবে বাড়িতে থাকলে টিভি, কম্পিউটার এবং মোবাইলের মতো ইলেকট্রনিক ডিভাইসের সামনে বেশি সময় ব্যয় করা যাবে না। এগুলো ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।

পূর্ববর্তী এক গবেষণায় ওজতুর্ক বলেছিলেন যে, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হেপাটাইটিস এ, হেপাটাইটিস বি, এবং এইচ ১ এন ১ এর মতো বিভিন্ন রোগের টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে ঘুমের প্রভাব রয়েছে। অপর্যাপ্ত ঘুম ভ্যাকসিনের প্রদত্ত সুরক্ষা অর্ধেক কমিয়ে দেয়। তবে তিনি দিনের বেলায় ঘুম যথা সম্ভব এড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

তুরস্কে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৯ জনে। আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ৪৩৩ জন।

গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে উৎপত্তি হওয়া নোভেল করোনাভাইরাস এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৯৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ২১ হাজার ৩৬৭ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৮৯০ জন। তার মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ লাখ ১৪ হাজার ৮২২ জন।

সৌজন্যে : কালের কণ্ঠ
সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৬ মার্চ ২০২০ /জিএসি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন