আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

সোয়া কোটি অবৈধ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্রের সিটিজেনশিপ প্রদানের রোডম্যাপ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২১-০১-১৯ ১১:৪৮:০৬

সিলেটভিউ ডেস্ক :: ১ জানুয়ারির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন কিন্তু এখনও বৈধ অভিবাসীর মর্যাদা পাননি, এমন লক্ষাধিক বাংলাদেশীসহ সোয়া কোটি বিদেশীকে ৫ বছরের জন্যে অস্থায়ী একটি মর্যাদা দেয়া হবে। এই সময়ে তারা কাজ করবেন এবং প্রমাণ দেখাতে হবে যে, নিয়মিত ট্র্যাক্স প্রদান করেছেন, কোন অপরাধে লিপ্ত হননি। তাহলেই তাদেরকে গ্রিনকার্ড প্রদান করা হবে। এর ঠিক তিন বছর পরই সিটিজেনশিপের আবেদন করতে পারবেন।

অপরদিকে, মা-বাবার সাথে যুক্তরাষ্ট্রে আসা শিশু-কিশোর, যারা ‘ডেফার্ড এ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড এ্যারাইভাল’ তথা ড্যাকা কর্মসূচিতে প্রেসিডেন্ট ওবামার আমলে ওয়ার্ক পারমিট পেয়েছেন, সেই ড্রিমাররা সরাসরি গ্রিনকার্ডের আবেদন করতে পারবেন। একইভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ কবলিত দেশসমূহের নাগরিকের মধ্যে যারা ইতিপূর্বে ‘টেম্পরারী প্রটেকশন স্ট্যাটাস’ তথা টিপিএস পেয়েছেন গ্রিনকার্ডের আবেদন করবেন।
 
২০ জানুয়ারি বুধবার দুপুরে শপথ গ্রহণের পরই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অভিবাসন ইস্যুতে প্রদত্ত অঙ্গিকারের পরিপূরক এই প্রস্তাবনা কংগ্রেসে পাঠানো হবে। বাইডেনের সাথে কাজ করছেন এমন কর্মকর্তারা ১৮ জানুয়ারি সোমবার বহুল প্রত্যাশিত অভিবাসন আইন সংস্কারের অভিপ্রায়ে এসব প্রস্তাবনা কংগ্রেসে পেশ করা হবে বলে জানিয়েছেন। সীমান্তে প্রাচির নির্মাণের পরিবর্তে নিরাপত্তা ও নজরদারি সুষ্ঠুভাবে করার জন্যে তথ্য-প্রযুক্তির সমন্বয়ের কথাও থাকবে ঐ প্রস্তাবে। সীমান্ত রক্ষীরা টহলের পরিবর্তে প্রযুক্তির মাধ্যমে পুরো সীমান্ত নজরদারিতে আনা সহজ এবং যখনই কাউকে বেআইনীভাবে সীমান্ত অতিক্রম করতে দেখা যাবে, সাথে সাথে কর্মকর্তারা চড়াও হবেন। সেন্ট্রাল আমেরিকার অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে পারলে দলে দলে যুক্তরাষ্ট্রে আসার প্রবণতা কমবে বলে মনে করছে বাইডেন টিম। সেজন্যে ওবামার আমলের প্রস্তাবনা সক্রিয় করা হবে। সে সময় বাইডেন ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং তিনি সমস্যাটির গভীরে পৌঁছে বিস্তারিত সুপারিশ দিয়েছিলেন। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প এসে সবকিছু লন্ডভন্ড করেছেন।

উল্লেখ্য, ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবার দিনেই যে কটি ইস্যুতে বাইডেন-কমলা হ্যারিস এ্যাকশন নেবেন বলে দুদিন আগে জানিয়েছেন, অভিবাসন ইস্যুটি তার অন্যতম। নির্বাচনী অঙ্গিকারেও তা ছিল। এজন্যে লেটিনো-এশিয়ানরা জোর সমর্থন দেন বাইডেন-কমলাকে।

প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য, ২০১৩ সালেও ওবামার আগ্রহে কংগ্রেসে এ ধরনের একটি বিল উঠেছিল। সিনেটে তা পাশ হলেও রিপাবলিকান শাসিত প্রতিনিধি পরিষদে পাশ হতে পারেনি। এবার কংগ্রেসের উভয় কক্ষেই ডেমক্র্যাটরা সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং রিপাবলিকানদের মধ্যেও অভিবাসন ইস্যুতে বোধোদয় ঘটায় প্রয়োজনীয়সংখ্যক ভোটের অভাব হবে না বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করছে। আরো উল্লেখ্য, এই বিল পাশ হলে তা হবে গত ৩৫ বছরের মধ্যে অভিবাসন ইস্যুতে সবচেয়ে বড় একটি বিষয়। সর্বশেষ ১৯৮৬ সালে প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান ৩০ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে বৈধতার সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন। এরপর ডেমক্র্যাট আর রিপাবলিকানরা প্রতিযোগিদামূলকভাবে ‘অভিবাসন ইস্যুতে প্রহসন’র খেলায় মেতে ছিলো অভিযোগ রয়েছে।

বাইডেন-কমলার অভিবাসন ইস্যুতে খোলামেলা মতামতের প্রশংসা ইতিমধ্যেই ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে কমিউনিটিতে। যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত অঞ্চল এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ দেশসমূহের লোকজনকে ‘রিফ্যুজি’ কোটায় যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় প্রদানের পরিধিও বিস্তৃত করা হবে নয়া এই বিধি তৈরী হলে। বিদেশী দক্ষ শ্রমিক আমদানির বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞাও প্রত্যাহার করা হবে একইসাথে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৯ জানুয়ারি ২০২১/বিডিপ্রতিদিন/মিআচৌ-১১

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন