আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

কোনো হাসপাতালেই চিকিৎসা মিলল না, মারা গেল শিশু রিফাত

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৪-০১ ২৩:৩০:২৫

সিলেটভিউ ডেস্ক :: এক হাসপাতাল থেকে অপর হাসপাতাল। শুধু ঘোরাঘুরি। কেউ ভর্তি করে না। শুধু রেফার্ড করে। এভাবে ঘুরতে ঘুরতে অবশেষে এক প্রকার বিনা চিকিৎসাতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ছোট্ট রিফাত।

লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে খুলনা নগরীর চারটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান স্কুলছাত্র রিফাতের পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু কোথাও তাকে ভর্তি করা হয়নি।

মঙ্গলবার রাতের এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

স্কুলছাত্র রিফাত খালিশপুর হাউজিং বিহারী ক্যাম্প নং-১-এর বাসিন্দা জুট মিল শ্রমিক মো. কাশেমের ছেলে। খালিশপুর ওব্যাট প্রাইমারি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল রিফাত।

শিশুর নানা মো. কলিমুদ্দীন জানান, রিফাতকে মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে শারীরিক সমস্যার কারণে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক নেই বলে তাকে ভর্তি নেয়া হয়নি। কাগজে ওষুধ লিখে খাওয়ানোর জন্য বলা হয়। আর সমস্যা হলে বুধবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়।

তিনি জানান, শারীরিক সমস্যা প্রকট আকারে দেখা দেয়ার পরও তাকে ভর্তি করা হয়নি। এরপর তিনি রিফাতকে নিয়ে খালিশপুর ক্লিনিকে যান। সেখানে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ না করেই বলে দেন কোনো চিকিৎসক নেই। রোগী ভর্তি করা যাবে না।

মো. কলিমুদ্দীন জানান, তাদের পরামর্শে রিফাতকে সার্জিক্যাল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেও তাকে ভর্তি না নিয়ে ময়লাপোতার একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। তারাও একইভাবে রোগীকে ভর্তি না নিয়ে ফেরত দিয়ে দেন। এভাবে হাসপাতাল ঘুরতে ঘুরতে রিফাত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মারা যায়।

খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. শেখ আতিয়ার রহমান জানান, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব নিয়ে চিকিৎসকরা চাপের মধ্যে রয়েছেন। কিন্তু সাধারণ রোগীরা যথাযথ চিকিৎসাসেবা পাবেন না সে রকম পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি। বিষয়টি আমি খোঁজ-খবর নিয়ে দেখব।

খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ জানান, কোনো হাসপাতালে সাধারণ রোগীর চিকিৎসাসেবা বন্ধ করা হয়নি। তবে হাসপাতাল ও ক্লিনিকে করোনার কারণে মানবিকতা কমছে। দায়বদ্ধতা থেকে এ রোগীর চিকিৎসাসেবা দেয়া উচিত ছিল।

তবে কেন রোগীকে যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেয়া হল না তা খোঁজ খবর নিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানান।

নগরীর খালিশপুর ক্লিনিকের এমডি মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, লিভার সিরোসিস রোগীর জন্য আইসিইউ দরকার হয়। জটিল অবস্থায় থাকার কারণেই ওই রোগীকে ভর্তি না নিয়ে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে সার্জিক্যালে রেফার্ড করেছেন হয়তো। যা আমাদের ক্লিনিকের নিয়ম মেনেই হতে পারে। তারপরও বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখা হবে।

সৌজন্যে : যুগান্তর

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১ এপ্রিল ২০২০/মিআচৌ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন