আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

‘সিলেটী জামাই’ সাহেদের মামলা ডিবিতে

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৭-১৪ ২৩:২৭:২৮

নিজস্ব প্রতিবেদক :: করোনাভাইরাস পরীক্ষা না করে সার্টিফিকেট প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও ‘সিলেটী জামাই’ মো. সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে র‌্যাবের দায়ের করা মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়েছে।

গত ৭ জুলাই মধ্যরাতে রাজধানী ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানায় র‌্যাব বাদি হয়ে ওই মামলাটি করে, মামলা নং ৫। মামলাটি তদন্ত করে আসছিলেন উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলমগীর গাজী। তিনি জানান, কমিশনারের নির্দেশে মামলার তদন্তভার ডিবির উত্তরা টিমে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. শফিকুল আলম বলেন, মো. সাহেদ সম্পর্কে প্রতারণার খবর এখন সবারই জানা। এখন তাকে গ্রেফতার করাই হচ্ছে আসল কথা। তাকে গ্রেফতারে ডিবির টিম কাজ করছে।

গত ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানে ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম উঠে আসে। পরে রোগীদের সরিয়ে রিজেন্টের উত্তরা ও মিরপুর শাখা সিলগালা করে দেয়া হয়। গ্রেফতার করা হয় আটজনকে।

এ ঘটনায় ৭ জুলাই রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় ১৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়। এতে সোমবার রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা শাখা থেকে আটক আটজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এছাড়া রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদসহ ৯ জনকে পলাতক আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা ও আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার নামে প্রতারণা করা রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মো. সাহেদের পাসপোর্ট জব্দ করেছে তদন্তকারী দল। হদিস মিলেছে তার বিরুদ্ধে আরও ২৩ মামলার। মোট ৫৬টি মামলার আসামি সাহেদ।

সর্বশেষ রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদের প্রধান সহযোগী তারেক শিবলীকে গ্রেফতার করা হয়। হেফাজতে নেয়া হয় টিভি নাটকের অন্যতম প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘টেলিহোম’র প্রধান ও সাহেদের ভায়রা মোহাম্মদ আলী বশিরকে।

বর্তমানে গা-ঢাকা দিয়ে আছেন রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ।

এদিকে, মো. সাহেদ মৌলভীবাজারে অবস্থান করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সোমবার (১৩ জুলাই) বিকেল থেকে রাতভর তৎপর ছিল জেলার সীমান্ত এলাকায়। সোমবার (১৩ জুলাই) সাহেদের ফোন ট্র্যাক করে তার খোঁজে জেলাজুড়ে তল্লাশি চালায় র‌্যাব ও পুলিশ। তবে এখনও সাহেদের কোনও খোঁজ মেলেনি। জেলার সব সীমান্তে চেকপোস্ট, রিসোর্ট, হোটেল-মোটেলে বিশেষ নজরদারি রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।

গোয়েন্দাদের ধারণা, সাহেদ হয়তো মৌলভীবাজারের পাহাড়ি এলাকার হোটেল-রিসোর্টে অবস্থান করতে পারে। অথবা সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারে। গোয়েন্দাদের এমন আগাম খবরে ওই এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে বিশেষ নজরদারি ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।

সোমবার বিকাল থেকে ভারতের ত্রিপুরাগামী মৌলভীবাজার-চাতলাপুর সড়কের শমশেরনগর চৌমুহনী চত্বর ও লাউয়াছড়া সড়কের ফুলবাড়ি এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনে তল্লাশি চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

র‌্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের ডিএডি মো. জব্বার বলেন, ‘সাহেদ মৌলভীবাজার অবস্থান করছে এমন সংবাদ পাওয়ার পর পরই বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। র‌্যাবের পাশাপাশি পুলিশও রয়েছে।’

শ্রীমঙ্গল সেক্টরের ৪৬ বিজিবির কর্নেল মাহবুবুল আলম বলেন, ‘আমরা সাহেদকে নিয়ে তেমন নির্দেশনা পাইনি। রাষ্ট্র যদি কোনও নির্দেশনা দেয় অবশ্যই আমরা অ্যাকশন নেবো। আমরা সব সময় তৎপর আছি, কেউ বাইরে বের হতে পারবে না। আমাদের এখানে অথেন্টিকভাবে দুটি জায়গা আছে, চাতলাপুর ও কুরমা চেকপোস্ট। ওই দুটি জায়গা ছাড়া বের হওয়ার পথ নেই। সেখানে আমাদের ২৪ ঘণ্টা ডিউটি থাকে। আমরা সব সময় তৎপর আছি। ’


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ১৪ জুলাই, ২০২০ / ডালিম

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন