আজ শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ইং

কলকাতায় ‘বিশেষ পুনর্মিলনী’তে দুর্জয় আকরাম সুমনদের অন্যরকম এক রাত

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-১১-২২ ১৩:৪২:২৩

শুধু ক্রিকেট ভক্ত ও অনুরাগি কেন, বাংলাদেশের সব খেলা প্রেমী মানুষের চোখ এখন কলকাতার ইডেন গার্ডেনে স্থির। কয়েক ঘন্টা পর ওপার ক্রিকেটের নন্দন কাননে শুরু হবে বাংলাদেশ আর ভারতের প্রথম দিবা রাত্রির টেস্ট। খেলা হবে ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টির মত ফ্লাডলাইটের আলোয়। বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টায় শুরু সেই ঐতিহাসিক টেস্ট।

দিবারাত্রির টেস্ট হলেও এ ম্যাচ নাম পেয়েছে গোলাপি বা পিংক বলের ম্যাচ হিসেবে। কারণ এরই মধ্যে কলকাতার ইডেন সেজেছে গোলাপি আভায়। সব কিছুতেই গোলাপি রংয়ের ব্যবহারে ইডেন পেয়েছে এক অন্য রুপ। শুধু গোলাপি বলে দিবারাত্রির টেস্ট বলেই নয়। এ ম্যাচকে ঘিরে আরও অনেক কিছুর আয়োজন হয়েছে। যার পরতে পরতে রয়েছে নতুনত্ব। পুরনোদের বরন করে নেয়ার এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

বলার অপেক্ষা রাখে না, আজ থেকে ১৯ বছর আগে ২০০০ সালের নভেম্বরে ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ যে অভিষেক টেস্ট ম্যাচটি খেলেছিল, সেই ম্যাচ খেলা ১১ জনসহ টেস্ট স্কোয়াডে থাকা সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন কর্ণধার সৌরভ গাঙ্গুলী।

দুই প্রবাসী আমিনুল ইসলাম বুলবুল (স্থায়ী হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায়, তবে এখন আছেন দুবাইয়ে) আর আল শাহরিয়ার রোকন (নিউজিল্যান্ড প্রবাসী) ছাড়া অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয়, আকরাম খান, হাবিবুল বাশার, শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ, মেহরাব হোসেন অপি, হাসিবুল হোসেন শান্ত, বিকাশ রঞ্জন দাস (ধর্মান্তরিত হয়ে মাহমুদুল হাসান), দ্বাদশ ব্যক্তি রাজিন সালেহ- সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

সে আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে এখন বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টের দল অবস্থান করছে কলকাতায়। বৃহস্পতিবার পড়ন্ত বিকেলে কলকাতায় পৌঁছেছে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টের বহর। সেখানে তাদেরকে রাখার হয়েছে ‘আইটিসি সোনার’ হোটেলে।

এতদিন পর সবাই একসঙ্গে রাজধানী ঢাকা থেকে কলকাতা বিমান ভ্রমণ। তারপর গিয়ে সবাই একসাথে একই হোটলে ওঠা। এ যেন আবার অতীতে ফিরে যাওয়া। সবাই যেন একসঙ্গে দল বেঁধে আবার কোন টেস্ট খেলিয়ে দেশে সিরিজ খেলতে যাওয়া। খেলা ছেড়ে নানা কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়া সবাই তাই আবেগাপ্লুত।

বৃহস্পতিবার রাতে তাই আইটিসি সোনার হোটেলে বসেছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মিলন মেলা। যারা একসময় একসঙ্গে খেলেছেন, টিম হোটেল, প্র্যাকটিস সেশন, ড্রেসিংরুম আর খেলার মাঠে ছিলেন খুব কাছাকাছি, সেই তারা আবার একসাথে এক হোটেলে- খুব স্বাভাবিকভাবেই একটা অন্যরকম পরিবেশ। রীতিমত স্মৃতিকাতরতায় ভোগা। সবাই মিলে হৈ চৈ, পুরনো দিনে ফিরে যাওয়া, নির্মল আড্ডায় মেতে ওঠা।

‘সত্যি! আমরা দারুণ এক রাত কাটিয়েছি কাল (বৃহস্পতিবার)। এতগুলো ক্রিকেটার আবার একসাথে। কী যে ভাল লাগছে। সবাই মিলে হৈচৈ করেছি। প্রাণ খুলে আড্ডা দিয়েছি। পুরনো সব ঘটনা, গল্পগুলো আবার ফিরে এসেছে এর ওর মুখ থেকে’- আজ (শুক্রবার) সকালে জাগো নিউজের সাথে আলাপ এক নিঃশ্বাষে কথাগুলো বলে ফেললেন হাবিবুল বাশার সুমন।

বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ফিফটির মালিক হাবিবুল বাশার জানালেন, ‘বুলবুল ভাইয়ের (অভিষেক টেস্টে প্রথম বাংলাদেশি) ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুল) কথা খুব মনে হচ্ছে। তাকে মিস করছি। রোকনকে মিস করছি। তারা থাকলে আরও ভাল লাগতো। পরিবেশটা পরিপূর্ণ হতো। কি আর করা তাদের পাইনি। তবে আমরা দারুন এনজয় করেছি। যারা যারা গল্পবাজ আছে, তারা সবাই জমিয়েছে।’

এসময় নিজেদের আড্ডার খানিক বর্ণনা দিয়ে বাশার আরও বলেন, ‘আড্ডার মধ্য মণি অবশ্য কেউ একা নয়, সবাই কথা বলেছি। লটস অফ ফান, জোকস। আকরাম ভাই, জাভেদ ওমর, রাজিন সালেহ, মেহরাব হোসেন অপি, হাসিবুল হোসেন শান্ত- সবাই গল্প করেছে। পুরনো দিনের সব মজার মজার গল্প। যেন টাইম মেশিনে করে আবার ফিরে যাওয়া। এখনো সবাই আগের মতই আড্ডাবাজ আর হাস্যকৌতুক করতে পারে।’

‘শুধু ধর্মকর্মে একটু বেশি মনোযোগি রাজিন একটু গম্ভীর হয়ে গেছে। না হয় রাজিনও আগে অনেক কৌতুক করতে পারতো। আমাদের হাসাতো, আনন্দ দিত। তারপরও দিয়েছে। আর জাভেদ, শান্ত ও অপি থাকলে যেকোনো পরিবেশ চাঙ্গা হতে বাধ্য। তারা জমিয়ে রাখতে যথেষ্ঠ। গল্প গুজব, হাস্য ক্যেতুক আর পুরনো দিনের কথা ঠিক আগের মত করে উপস্থাপনে তাদের জুরি মেলা ভার। সব মিলে গ্রেট অকেশন। আমরা খুব উপভোগ করছি।’

সুত্র: জাগো নিউজ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন