আজ বুধবার, ০৮ মে ২০২৪ ইং
রনিক পাল, ওসমানীনগর :: ওসমানীনগরে পল্লীবিদ্যুৎ অফিসে বিল প্রদান প্রদান করতে গিয়ে গ্রাহকার প্রতিনিয়তই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। প্রতিদিনই গ্রাহকদের সিলেট পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ এর আওতায় উপজেলার কাশিকাপন জোনাল অফিসের সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে বিল প্রদান করতে হচ্ছে।
এছাড়া ভুতুড়ে বিলের কারণে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শাখায় বিদ্যুৎ বিল জমা নিতে অপারগতা দেখিয়ে আসছে। এতে গ্রাহকরা হয়রাণীর শিকার হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার সরজমিনে পল্লী বিদ্যুৎ কাশিকাপন জোনাল অফিসে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে আসা লোকজন সকাল থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। দির্ঘ লাইনে বৃদ্ধ নারী-পুরুষও আছেন। কিন্তু লোকজনের দীর্ঘ লাইন থাকলেও বিদ্যুৎ অফিসের লোকজনের দায়সারা ভাব লক্ষ্য করা যায়। অফিসের ভিতরে বিল গ্রহণের দায়িত্বে থাকা লোকজনের এদিকে কোনো ভ্রক্ষেপ নেই। একটি মাত্র কাউন্টারের মাধ্যমে ধিরস্থির গতিতে বিল আদায় করা হচ্ছে।
লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন অভিযোগ করে বলেন, আমরা দীর্ঘ সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি কিন্তু বিল গ্রহণের দায়িত্বে থাকা লোকজন গল্প গুজবে সময় কাটাচ্ছেন। অনেকে আবার লাইন থেকে সরে গিয়ে অফিসের কথিপয় লোকজনের হাতে চা-নাস্তার টাকা ধরিয়ে দিয়ে বিল প্রদান করছেন।
লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা বালাগঞ্জ উপজেলার জামালপুর গ্রামের বৃদ্ধ (৭০) আব্দুল মজিদ অভিযোগ করে বলেন, প্রতি মাসে নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে আসছি এতে কোনো বিলম্ব নেই। কিন্তু নতুন মাসের বিলের সাথে পরিশোধিত বিল সংযুক্ত করে দেয়া হয়েছে। এখন বিল দিতে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।
লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা রায়তুন বেগম নামের এক বৃদ্ধা সাংবাদিকের উপস্থিতি জানতে পেরে তিনি লাইন থেকে বেরিয়ে এসে বলেন, বাবা আমি বৃদ্ধ মানুষ কিন্তু এভাবে লাইনে দাঁড় করিয়ে কোনো আমাদেরকে অযথা কষ্ট দেয়া হচ্ছে।
স্ট্রেচারে এক পায়ে ভর করে আসা উপজেলার আলীপুর গ্রাম থেকে আসা কুটি মিয়া বলেন, এক পায়ের উপর ভর করে আর কতক্ষণ লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখা হবে আমি তা বুঝতে পারছি না।
উপজেলার গজিয়া গ্রামের মন্নান মিয়ার মিটারে আগের মাসে ৪০ ইউনিট বিল আসলেও পরের মাসে তাকে ১০০ ইউনিটের বিল ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি বিল সংশোধন করতে অফিসে এসেছেন। অফিসের লোকজন তাকে বলেছেন রিডিং লিখে নিয়ে আসার জন্য।
তিনি বলেন, রিডিং কি আমি তা বুঝতে পারছি না। অফিসের লোকজন আমাকে কোনো সাহায্য করছে না। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর আওতায় উপজেলার কাশিকাপন জোনাল অফিসের ডিজিএম ফাইজ উল্যা বলেন, গ্রাহকদের সুবিধার জন্য এখন থেকে দুইটা কাউন্টার খুলে বিল গ্রহণ করা হবে। এছাড়া সফটওয়ারে ত্রæটির কারণে আগের মাসের কিছু কিছু বিদ্যুৎ বিল পরের মাসের বিলের সাথে যুক্ত হলেও আমরা তা সংশোধন করে দিচ্ছি।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/আরপি/এক