আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

সিসিক'র উন্নয়ন প্রকল্পে নাগরিক দুর্ভোগ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০২-২০ ০০:০৯:৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বন্দরবাজারের কোর্টপয়েন্ট থেকে জিন্দাবাজার পয়েন্ট পর্যন্ত রাজপথ এখন আর রাজপথ নয়, রীতিমতো বাজার। কেউকেউ বলছেন সিলেটের নতুন হকার্স মার্কেট। 

মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র হিসাবে পরিচিত ব্যস্ত এই রাস্তার সবুজবিপনীর সামনের কালভার্টটি নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে। তাই এই রাস্তা সপ্তাহখানেক থেকে বন্ধ। নগরবাসীকে বিকল্প রাস্তায় চলাফেরা করতে হচ্ছে। সেই সাথে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।

এভাবে প্রায় শতকোটি টাকা ব্যয়ে সিলেট মহানগরীর ২৭টি ওয়ার্ডে একযোগে চলছে নানা উন্নয়ন কর্মকান্ড। সিলেট সিটি কর্পোরেশন এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এটা খুশির খবর হলেও একসাথে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের কাজ শুরু হওয়ায় নাগরিক জীবনে এর কিছুটা নেতিবাচক প্রভাবও পড়ছে।

ফুটপাত থেকে শুরু করে কোন কোন স্থানে রাস্তার প্রায় অর্ধেক দখল করে মাটি ও অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখায় যেমন সাধারণ মানুষের চলাফেরায় অসুবিধা হচ্ছে, তেমনি যানজটও হচ্ছে আরও তীব্র। সাথে সাথে খারাপ হচ্ছে পরিবেশ। সম্প্রতি নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

নগরীর হাওয়াপাড়া এলাকায় ড্রেনের সংস্কার ও সম্প্রসারণ কাজ চলছে। ফুটপাত থেকে শুরু করে রাস্তা দখল করে রাখা হয়েছে ময়লা আবর্জনা। এতে দুর্গন্ধে বাতাস ভারি হচ্ছে। তাছাড়া বয়স্ক ও শিশুরা প্রায়ই আবর্জনায় পা ডুবিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ছেন। আর রাস্তা সরু হওয়ায় যানজটে পড়ে প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান সময়।

নগরীর নাইওরপুল ও মিরাবাজার এলাকায় গত প্রায় দুইমাস থেকে চলছে উন্নয়ন কাজ। কালভার্ট নির্মাণ কাজের পাশাপাশি চলছে ড্রেন পরিস্কার ও সম্প্রসারণ। ব্যস্ততম এই রাস্তাটিও নির্মাণ সামগ্রীর দখলে। প্রায়ই যানজটে অসহনীয় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে সাধারণ নাগরিকদের। এমনকি ব্যবসায়ীদের অবস্থাও খারাপ। স্থানীয়দের দোকানপাট বন্ধ রাখতে হচ্ছে।

মিরাবাজার এলাকার পান-সিগারেটের ব্যবসায়ী মইনুল হোসনে এ প্রসঙ্গে বলেন, দুই মাসের বেশি সময় ধরে কাজ চলছে। আমার ব্যবসা লাটে উঠেছে।

এছাড়া মিরাবাজার ব্রিজের কাজও শুরু হয়েছে গত প্রায় মাসখানেক আগে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, রস্তায় ময়লা আবর্জনার সাথে ইট পাথর রডসহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখায় এলাকাবাসীর দুর্ভোগ চরমে। যানজটতো নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার।
এ অবস্থা চলছে সিলেট মহানগরীর মদীনা মার্কেট-কালিবাড়িমুখী সড়ক, পণিটুলা, দর্জিপাড়া, ধোপাদিঘীরপাড়, কদমতলীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক এলাকায়।

এসব এলাকার স্থায়ী বাসিন্দাদের অনেকেই উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্য সন্তোষ প্রকাশ করলেও জনদুর্ভোগের জন্য অসন্তোষও প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, একযোগে কাজ না করে পর্যায়ক্রমে করতে পারলে দুর্ভোগ এড়ানো যেত।

তবে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশল শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এছাড়া কোন বিকল্পও নেই। জুলাইয়ে বাজেট বরাদ্দের পর নভেম্বর থেকে কাজ শুরু করতে হয়। মার্চ থেকে সিলেটে বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ার কারণে ৪ মাসেই প্রয়োজনীয় উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতেই হয়। এতে নাগরিক জীবনে কিছুটা সমস্যা সৃষ্টি হলেও আমাদের হাতে বিকল্প কোন সুযোগ নেই।

বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, বাজেট পেতে দেরি হওয়ায় আমাদের একযোগে উন্নয়ন কাজ করতে হয়। মার্চেই বৃষ্টিপাত শুরু হবে। আরও আগে বাজেট পেলে হয়ত পর্যায়ক্রমে কাজ করা যেত।

তিনি আরও বলেন, দ্রুত কাজ চলছে। খুব তাড়াতাড়ি এ দুর্ভোগের অবসান হবে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/এআর/এক

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন