আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

কান দেয়নি বিমান, সিলেটে দানা বাঁধছে আন্দোলন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৩-২৫ ০০:১৬:৪৪

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক :: ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে আছেন লাখো সিলেটি। এসব প্রবাসীদের সিংহভাগই দেশে আসতে-যেতে ভরসা রাখেন বাংলাদেশ বিমানের ওপর। কিন্তু সেই ভরসার প্রতিবাদে যাত্রীরা পান হয়রানি! এমন অভিযোগ খোদ প্রবাসীদেরই। তাদের প্রতি বিমানের বিমাতাসুলভ আচরণের প্রতিবাদও বিভিন্ন সময় জানানো হয়েছে।

সর্বশেষ গত ৬ মার্চ বাংলাদেশ বিমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে ৬ দফা দাবিতে ১০ দিনের আলটিমেটাম দেন এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) সিলেট জোনের নেতৃবৃন্দ। কিন্তু আলটিমেটামে কান দেয়নি বিমান কর্তৃপক্ষ। ফলে আন্দোলন শুরু করছেন আটাব নেতৃবৃন্দ।

আটাব, সিলেট জোনের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান খান রেজওয়ান সিলেটভিউকে জানিয়েছেন, ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কর্মবিরতি ও গণঅবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত সিলেট নগরীর মজুমদারীস্থ বাংলাদেশ বিমানের কার্যালয়ের সামনে এই কর্মসূচি পালন করা হবে।

এ প্রসঙ্গে আটাব, সিলেট জোনের সভাপতি আব্দুল জব্বার জলিল সিলেটভিউকে বলেন, ‘আমরা আমাদের দাবিগুলো নিয়ে যে আলটিমেটাম দিয়েছিলাম, তাকে কান দেয়নি বিমান। বিমানকে আমরা দাবিগুলো জানিয়েছি, তাদের সাথে বৈঠক করেছি। তারা যদি আমাদেরকে দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস দিতেন, তাহলে আমরা আন্দোলনের কথা চিন্তা করতাম না। কিন্তু বিমান আমাদের দাবির প্রতি দৃষ্টিপাত না করায় আমরা আন্দোলন শুরু করছি।’

তিনি বলেন, ‘সোমবার আমরা কর্মবিরতি ও গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। এরপর সবাই মিলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।’

গেল ৬ মার্চ আটাব, সিলেট জোনের পক্ষ থেকে বিমানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। ওইদিন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ জানান, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ বিমান সিলেটের যাত্রীদের সাথে বিমাতাসুলভ আচরণ করে আসছে। বিমানের যাত্রীর প্রায় ৮০ ভাগই সিলেটের প্রবাসী হলেও তাদেরকে মানসম্মত সেবা দেয়া দূরে থাক, উল্টো হয়রানি করে আসছে লাল-সবুজের পতাকাবাহী বিমান। বিমানের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তারা নিজেদের স্বার্থ হাছিল ও বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোকে সুযোগ করে দিতেই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন আটাব নেতৃবৃন্দ।

আটাব নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, টিকেট বুকিংয়ের ক্ষেত্রে বিমান কর্তৃপক্ষ সিলেটের যাত্রীদের সাথে বৈষম্য করছে। সিলেট-জেদ্দা-সিলেট, সিলেট-লন্ডন-সিলেট, সিলেট-দুবাই-সিলেট ফ্লাইটের টিকেট চাইলে ‘সিট খালি নেই’ দেখানো হয়। অথচ একই সময় একই ফ্লাইটের ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা, ঢাকা-লন্ডন-ঢাকা ও ঢাকা-দুবাই-ঢাকার টিকেট বুকিংয়ের সুযোগ ঠিকই পাওয়া যায়। এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রামের চেয়ে সিলেটের যাত্রীদের বেশি ভাড়া দিতে হয় বিমানকে। ওমরাহ যাত্রীদেরও হয়রানি করে বিমান কর্তৃপক্ষ। বিমানের ওয়েবসাইট থেকে টিকেট বুকিং করতে গেলে সিলেটের ওমরাহ যাত্রীরা সিলেট-জেদ্দা-সিলেট টিকেট পান না। কিন্তু একই সময়ে ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা টিকেট সহজলভ্য থাকে।

সার্বিক পরিস্থিতিতে আটাব, সিলেট জোন কয়েকটি দাবি উত্থাপন করে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- কমন ভাড়ায় সিলেটের যাত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন বরাদ্দ রেখে সপ্তাহে একটি সিলেট-জেদ্দা-সিলেট ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা ও সিলেটের যাত্রীদের জন্য ভাড়া বৈষম্য দূর করা, সিলেট-জেদ্দা-সিলেট, সিলেট-দুবাই-সিলেট, সিলেট-লন্ডন-সিলেট ফ্লাইটে সিলেটের প্রবাসীদের অগ্রাধিকার প্রদান, ‘প্রবাসীরা সরাসরি ফ্লাইটে সিলেট আসতে হলে বেশি ভাড়া দিতে হবে’ বিমানের বিক্রয় ও বিপণন পরিচালকের এমন বক্তব্য প্রত্যাহার করা, সপ্তাহে ধার্যকৃত জেদ্দা-সিলেট দুইটি ফ্লাইটে সিলেটের ওমরাহ যাত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন বরাদ্দ রাখা, ঢাকা থেকে গ্রুপ বুকিং সিস্টেম বাতিল করা, সিলেট থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের যাত্রীদের উন্নতমানের হোটেলে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা এবং সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের শক্তি বৃদ্ধির কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৫ মার্চ ২০১৯/আরআই-কে

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন