আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

ইচ্ছাশক্তিতে বাধা অতিক্রম করতে হবে: আলাপচারিতায় মুনমুন আহমেদ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৩-২৬ ০২:৩৫:৪৯

সাকলিন হক :: দেশের তারকা নৃত্যশিল্পী মুনমুন আহমদ বলেছেন, নিজের ইচ্ছা শক্তি আর ভালোবাসা দিয়ে নৃত্যচর্চার বাধা অতিক্রম করতে হবে। বর্তমান সরকার সংস্কৃতিবান্ধব সরকার। এই সরকারের আমলে নৃত্যশিল্পের পৃষ্ঠপোষকতা কিছুটা হলেও বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশের নৃত্যচর্চা নিয়েও তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন। বলেছেন, নাচকে ভালোবাসি বলেই আজ আমি আপনাদের ভালোবাসার মুনমুন আহমেদ।

সোমবার সিলেটের  কবি নজরুল অডিটোরিয়াম মঞ্চে কত্থক পরিবেশন এই গুণী শিল্পী। নৃত্যশৈলী সিলেটের এপার বাংলা ওপার বাংলা নৃত্যউৎসবের সমাপনী দিনের প্রধান আকর্ষণ ছিলেন তিনি।

রাতে সাড়ে ৯টার দিকে চল্লিশ মিনিটের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা শেষে মুনমুন কথা বলেন সিলেটভিউ২৪.কম’র সাথে।

কথায় কথায় জানালেন নাচ শেখার অনুপ্রেরণা তিনি পেয়েছেন তার মায়ের কাছ থেকে।
নৃত্য চর্চায় বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভালো-খারাপ মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হয়। নৃত্যশিল্পের যথাযথ সমৃদ্ধির জন্য আরো বেশী সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন।

বললেন এ ধরণের অনুষ্ঠান এখন পর্যন্ত নৃত্যশিল্পীদের নিজ উদ্যোগেই  হয়ে থাকে। এ শিল্পের গুণগতমান বৃদ্ধি করতে উচ্চ-শিক্ষিত নৃত্যশিল্পীদের প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

নৃত্যশিল্পে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা  প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার সংস্কৃতিবান্ধব হওয়ায় আগের তুলনায় পৃষ্ঠপোষকতা কিছু বেড়েছে। তবে আরো বৃদ্ধি পাওয়া দরকার বলেও মত প্রকাশ করলেন তিনি।

শামীম আরা নিপা, শিবলি মাহমুদ বা মুনমুন আহমদের মতো তারকা নৃত্যশিল্পী তৈরি না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের আমলে লোকজনের একমাত্র বিনোদন ব্যবস্থা ছিল বিটিভি, যার মাধ্যমে উল্লেখিত নৃত্য শিল্পীদের দর্শকরা চিনেছেন জেনেছেন। এখনকার দিনেও ভালো নৃত্যশিল্পীরা টিভি চ্যানেল গুলোতে অনুষ্ঠান করেন। তবে আগ্রহী দর্শক অনেক কম।

সিলেটের নৃত্যশিল্পীদের ভোগান্তি বিড়ম্বনা ও পারিবারিক বাধাবিপত্তি অতিক্রমের উপায় সম্পর্কে তার পরামর্শ, নিজের ইচ্ছে আর ভালবাসায় বাধাবিপত্তি অতিক্রম করতে হবে।  প্রকৃত ভালোবাসায় জয় করা যায় যেকোন পাহাড় সমান বাঁধাকেও, কারো কথায় বা নিষেধে হাল ছাড়লে চলবে না।

সবশেষে বলেন, ‘নাচকে প্রচন্ড রকম ভালোবেসেছি বলেই আজকের আমি আপনাদের এত ভালোবাসার, ভালোলাগার মুনমুন আহমেদ। দোয়া করবেন যত দিন বেঁচে আছি, সুস্থভাবে যেন আপনাদের ভালোলাগার মূল্যায়ন করতে পারি’।  

মুনমুন সম্পর্কে আরো কিছু


চার দশকের বেশি সময় ধরে তিনি নৃত্যশিল্পের সাথে জড়িত। নাচে তার হাতেখড়ি হয় ওস্তাদ আজহার আলীর কাছে। এরপর তালিম নেন নৃত্যগুরু হাবিবুল চৌধুরী, সালেহা চৌধুরী ও সৈয়দ আবুল কালামের কাছে। ভারতের কত্থক কেন্দ্র থেকে ১৯৯০ সালে তিনি উচ্চাঙ্গ নৃত্যে সম্মান’সহ ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯২ সালে তিনি একই প্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চাঙ্গ নৃত্যে সম্মানোত্তর পোস্ট ডিপ্লোমা ডিগ্রি ও ১৯৯৩, ১৯৯৪ সালে ফেলোশিপ লাভ করেন। ১৯৭৮ সাল থেকে কত্থক নাচের চর্চা করছেন। সাধারণ নৃত্য  , আঞ্চলিক নৃত্য, উপজাতীয় নৃত্য, কত্থক নৃত্যসহ নাচের সব শাখাতেই রয়েছে তার পারদর্শিতা। মুনমুন আহমেদ ২০০০ সালে  ইউনেস্ক  সাংস্কৃতিক পুরস্কার পান। এছাড়াও নৃত্যের জন্য দেশ-বিদেশে অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। নৃত্য পরিবেশন করার পাশাপাশি পরিচালনা করছেন ‘রেওয়াজ পারফরমার্স স্কুল’ নামের একটি নাচের স্কুল। বর্তমানে তিনি ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের একজন নৃত্য প্রশিক্ষক। নৃত্যশিল্পীর বাইরে তার আরো একটি পরিচয়, তিনি একজন অভিনয়শিল্পীও। নাটকের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও অভিনয়ে করেছেন মুনমুন আহমেদ।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ২৬ মার্চ ২০১৯/এসএইচ/এক


@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন