আজ শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ইং

উদারের ‘হাতল’ ধরেও শেষ রক্ষা পায়নি ওয়াসিম

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৩-২৭ ০০:১৪:১৩

ওমর ফারুক নাঈম, মৌলভীবাজার :: হেলপার বাস থেকে ধাক্কা দিল ওয়াসিম আর রাকিবকে। রাকিব একটু দূরে গিয়ে পড়লো। ওয়াসিম নিজেকে রক্ষা করতে ধরেছিল উদারের হাতল। কিন্তু এই নামধারী উদার পরিবহন যে এত নিষ্ঠুর কে জানত? শেষ রক্ষাও দিল না। হেলপার বাসের হাতল থেকে হাত ছাড়িয়ে দিল।

ওয়াসিম পড়ে গেল বাসের নিচে। ড্রাইভার পিষে গেল তাকে। নিজেকে শেষ রক্ষা না করতে পেরে মৃত্যুর কূলে ঢলে পড়লো সিকৃবির ছাত্র ঘোরী মো. ওয়াসিম আব্বাস। নিভে গেল এক মেধাবী তরুণের সব স্বপ্ন। আর ফিরেবনা সে কোন বাসে। উদার পরিবহন এত নিষ্ঠুর হল।

সিকৃবির ছাত্র ওয়াসিম হত্যা মামলরা এজাহারেও এই ঘটনা সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মৃত্যুঞ্জয় কুন্ড ২৫ মার্চ মৌলভীবাজার মডেল থানায় ৩০২/৩৪ ধারায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে সূত্রে জানা যায়, শেরপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্তরে বিকাল ৪.৪৫ টায় রাকিব ও ওয়াসিম বাদে বাকী নয়জন ভালভাবে বাস থেকে নেমে যান। রাকিব ও ওয়াসিম নামার আগেই বাসের চালক বাসটি দ্রুতগতিতে চালিয়ে বাস চালিয়ে দেয়। এবং বাসের সুপারভাইজার ও হেলপার ওয়াসিম ও তার সহপাঠি রাকিবকে হত্যার উদ্দেশ্যে চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। রাকিব হেলপারের ধাক্কায় গাড়ি থেকে ছিটকে পরে তার বাম হাতের কনুইতে আঘাত প্রাপ্ত হয়। তখন ওয়াসিম আব্বাস তার ডান হাত দিয়ে বাসের দরজার হাতল ধরে ফেলে। এ সময় তার পা দুটি ঝুলে যায় ও কোমরের নিচের অংশ গাড়ির নিচে চলে যায়। এরপর বাসের হেলপার ওয়াসিম আব্বাসের হাত দরজার হাতল থেকে ছাড়াইয়া দেয়। এ সময় ওয়াসিম আব্বাস ও তার সহপাঠিরা গাড়ি থামানোর জন্য চিৎকার করিলেও গাড়ি চালক তাদের চিৎকারে কর্ণপাত না করে দ্রুত গতিতে চালাতে শুরু করলে ওয়াসিম আব্বাস রাস্তার উপর পড়ে যায় এবং শরীরের বেশির ভাগ অংশ গাড়ির নিচে চলে যাওয়াতে চাকার সাথে পিষ্ঠ হয়ে গুরুতর আহত হয়। তখন বাস দ্রুত গতিতে সিলেটের দিকে চলে যায়।

এজাহারে উল্লেখ আছে, পরে ওয়াসিম আব্বাসের সহপাঠিরা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ও রাকিব হাসানকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঘোরি মো. ওয়াসিম আব্বাসকে মৃত ঘোষণা করেন।

মামলার আসামীরা হলেন, বাস চালক জুয়েল আহমদ (৩০), হেলপার মাসুক মিয়া (৩১) ও সুপারভাইজার শেফুল মিয়া (৩৫)। চালক ও হেলপারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও সুপারভাইজার এখনও পালতক রয়েছেন।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি সোহেল আহম্মদ জানান, বিশ^বিদ্যালয় ছাত্র হত্যাকান্ডে বাসের চালকসহ তিন জনের নামে প্রক্টর বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। কারাগারে থাকা দুই আসামীর ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৭ মার্চ ২০১৯/ওফানা/ডিজেএস

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন