আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

সমান হয়ে যাচ্ছে সিলেটের রাতদিন!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৫-২৬ ০০:৩৩:১৮

ছবি: মেহেদী হাসান রনি

এনামুল কবীর :: সিলেটের রাতদিন সমান হয়ে যাচ্ছে। রমজানের অর্ধেক পেরোতে না পেরোতেই লক্ষণটি স্পষ্ট হয়েছিল। এখন তা পরিষ্কার। মানে কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন সিলেটবাসী। রাতের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ক্রেতাদের ভীড়। মার্কেট বিপণীবিতানগুলো তরুণ তরুণীর কথার ফুলঝুরির সাথে শিশু-কিশোরের উল্লাসে মুখর।

প্রতিবছর পবিত্র রমজানের এই সময়টাতে দেশের প্রায় সবশহরেই এমনচিত্র দেখা যায়। ব্যতিক্রম নয় সিলেটও। বরং সিলেটে কিছুটা বেশি। প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট জেলার আশপাশের উজেলাগুলোর ক্রেতারা কেনাকাটা করতে ইফতারের পরপরই বেরিয়ে পড়েন। এরপর মধ্যরাতের দিকে শপিং ব্যাগ নিয়ে ফেরেন নিজের ঠিকানায়। এ সময়ে দিনের চেয়ে রাতের সিলেটই বেশী জমজমাট থাকে।

শুরু হয়েছে এবারও। ১৫ রমজানের পর থেকেই রাতের সিলেট জমজমাট হতে শুরু করে। তখন রাত ১০/১১টায়ও জিন্দাবাজর পয়েন্টে প্রচুর যানজট ও লোকসমাগম দেখা গেছে।
শনিবার চলে গেছে রমজানের ১৯ দিন। ঈদের বাকী আর মাত্র ৯ দিন। এ সময়ের মধ্যে কেনাকাটা শেষ করতে হবে। বাংলাদেশে ঈদুল ফিতরই যে প্রধান ধর্মীয় উৎসব।

এই উৎসবে মুসলমানরাতো কেনাকাটা করেনই, করেন অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও। ঈদুল ফিতরে বিয়ের বর-কনের মতোই সেজে উঠে সিলেট নগরীর মার্কেট ও বিপণীবিতানগুলো। ফ্যাশন হাউসের শো-রুমগুলোও সাজানো হয় বর্ণাঢ্য সাজে।

সেজেছে এবারও। প্রতিদিনই রাতের সিলেটে জনসমাগম বাড়ছে। বিশেষ করে যেসব এলাকার মার্কেট বা বিপণীবিতানের সংখ্যা বেশী, সেসব এলাকায়। জিন্দাবাজার, বারুতখানা, চৌহাট্টা, লামাবাজার, বন্দরবাজার এলাকায়ই বেশী পোশাকের দোকান। কুমারপাড়া ও নয়াসড়ক এলাকার ব্র্যান্ডেড দোকান বা শো-রুমগুলোতেও ভীড় বাড়ছে।
মোটামুটি দিনের চেয়ে রাতের সিলেটই এখন বেশী জমজমা। ক্রেতারা আসছেন দেখছেন এবং শপিংব্যাগ হাতে ফিরে যাচ্ছেন।

বিশ্বনাথের আবুল হোসেনের পরিবারের ৫ সদস্যই ঈদের বাজার করতে এসেছেন সিলেটে। শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে কথা হয় তাদের সাথে জিন্দাবাজার এলাকায়।

আবুল জানালেন, ঈদের কেনাকাটার জন্য রাতই ভালো। দিনে রোজা রেখে ঘোরাঘুরি দেখাদেখি অনেক জটিল। তিনি জানালেন, দুই-মেয়ে ও একমাত্র ছেলের জন্য কেনাকাটা হয়ে গেছে। তবে নিজেদের জন্য সেদিন আর পেরে ওঠেননি। আবার একদিন আসতে হবে স্ত্রীকে নিয়ে-মৃদু হেসে তাও জানিয়ে দিলেন তিনি।

গোলাপগঞ্জের যুক্তরাজ্য প্রবাসী রোমানা এসেছেন একমাত্র মেয়ে, স্বামী আর ভাইকে নিয়ে। বললেন, অনেক বছর পর সিলেটে ঈদের শপিং করলাম। প্রচুর দাম হলেও কিনতে পেরে ভালো লাগছে।

রোমানা আরো জানান, যাকাতের কাপড় এখনো কেনা হয়নি। সেজন্য স্বামীকে নিয়ে আবার আসতে হবে তার।

জিন্দাবাজারের ব্লু-ওয়াটার শপিং সেন্টারের এক পোশাকের দোকানে সেলসম্যান হিসাবে কাজ করছেন আব্দুল হামিদ (২২)। এ প্রতিবেদকের সাথে আলপাকালে তিনি বলেন, হ্যাঁ সিলেটের রাতদিন সমান হয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি রাতে আমরা দোকান বন্ধ করি আড়াইটার দিকে। আর দু’য়েকদিন পর সেহরি খাওয়াও হবে দোকানে। এমনটিই হচ্ছে গত কয়েকবছর ধরে।

তিনি আরো জানান, তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতিসহ সব বয়সের ক্রেতারাই আসছেন দোকানে। কিনছেনও।

দিনের সিলেটের চেয়ে রাতের সিলেটই এখন বেশি ব্যস্ত। রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা যেমন প্রতিদিন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে মানুষের সংখ্যাও। আর এমন মোক্ষম সময়ের জন্য সারাবছর প্রতীক্ষায় থাকেন সিলেটের ব্যবসায়ীরা।

কয়েকজন জানালেন, বেঁচাকানা শুরু হয়েছে। জমতে শুরু করেছে সিলেটের ঈদ মার্কেট। বছরে এই সময়টার অপেক্ষায় থাকি সারাবছর। নিজেদের লক্ষ্যপুরণের ব্যাপারে আশাবাদও ব্যাক্ত করলেন জিন্দাবাজারের মিলেনিয়াম মার্কেটের আব্দুল লতিফ (৪৬), মধুবন সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন (৩৩) ও আলহামরা শপিংসিটির হাসান আহমেদ (৩২)।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ২৬ মে ২০১৯/এক

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন