আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

শাবির উপাচার্যের বিরুদ্ধে ৫৩ অভিযোগের বেনামি শ্বেতপত্র

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৯-২২ ১৫:৫৯:৩১

শাবি প্রতিনিধি :: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, শিক্ষক নিয়োগে অস্বচ্ছতা, স্বৈরাচারী আচরণ ও স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ মোট ৫৩টি অভিযোগ তুলে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশিত হয়েছে। রবিবার বেনামে প্রকাশিত শ্বেতপত্রটি Sylhetview24.net প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

শ্বেতপত্রটি কে বা কারা কি উদ্দেশ্যে প্রকাশ করেছে তা এখন ক্যাম্পাসের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বেনামে প্রকাশিত শ্বেতপত্রটির প্রচারকদের পরিচয়ে বলা হয়েছে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার শাবিপ্রবির শিক্ষক ও কর্মকর্তাবৃন্দ’।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়টির সামগ্রিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করতে একটি পক্ষ এই শ্বেতপত্র উদ্দেশ্যমূলক ভাবে প্রকাশ ও প্রচার করছে বলে জানান উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, “বেনামে প্রকাশিত এ শ্বেতপত্রটি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যে বা যারা এ শ্বেতপত্রটি প্রকাশ করেছেন, তাদেও নৈতিক ভিত্তি দুর্বল। কারণ এসব অভিযোগের সত্যতা থাকলে  তারা নাম প্রকাশ করতেন। প্রকাশ্যে অভিযোগ তুলতেন।”

বেনামে প্রকাশিত ২৪ পৃষ্ঠার এ শ্বেতপত্রে ৫৩ টি অভিযোগের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগে শাবিপ্রবি গ্রাজুয়েট বঞ্চিতকরণ, নিয়োগ বোর্ডে বসে তার বিদ্রুপাত্বক আচারণ, মেধা তালিকার প্রথমদিকের প্রার্থীদের নিয়োগ না দিয়ে শুধুমাত্র কুমিল্লা অঞ্চলের হওয়ায় অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯তম ৫০তম ৬৩তম এমনকি ৭১তম প্রার্থীদেও নিয়োগ ও শিক্ষকদের  প্রমোশন-আপগ্রেডেশন পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এ বিষয়ে উপাচার্য বলেন, “নিয়োগ বোর্ডে শুধু আমি থাকি না। বিভাগীয় প্রধান, ডিন ও এক্সপার্টদের সমন্বয়ে গঠিত নিয়োগ বোর্ডেও মাধ্য সেরা প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়। আমি কোন ধরনের তদবির গ্রহণ না করায় বঞ্চিতরা ঢালাওভাবে নিয়োগে অসচ্ছতার মিথ্যাচার করছেন। আমার কোন আত্বীয় স্বজন এই ক্যাম্পাসে চাকুরী করেন না আর ভবিষ্যতেও করার সম্ভাবনা নেই।”

শ্বেতপত্রে ইন্সুরেন্সের নামে আর্থিক অনিয়ম, সিটিং এলাউন্স বৃদ্ধি, আইসিভিসি সম্মেলনে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়, ক্যাম্পাসে অবস্থান না করে প্রতি সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয় কোষাগারের টাকা খরচ করে বিমানযোগে ঢাকা যাতায়াত কওে অর্থ অপচয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, “স্বাস্থ্য বীমা চালু করার জন্য ২০০৪ সাল থেকে শিক্ষকরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন। শিক্ষকদের দাবির প্রেক্ষীতে স্বাস্থ্য বীমা চালু করলে কিছু মৌলবাদী শিক্ষক এর বিরোধিতা করেন। আইসিভি সম্মেলনে ৪০ লক্ষ টাকা খরচের যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা অসত্য। আইসিভিসিতে ২০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে, যা হিসাব খাতে অন্তর্র্ভূক্ত।”

এদিকে শ্বেতপত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামোর কোন উন্নয়ন হয়নি বলে অভিযোগ আনা হলেও উপাচার্য বলেন, “বিগত ২৮ বছর থেকে সীমানা প্রাচীর বিহীন ক্যাম্পাসকে  আমি যোগদানের পর সাড়ে ৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে প্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত করেছি। এছাড়া ৯৮৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প ইতোমধ্যে পাশ হয়েছে। যা বাস্তবায়ন হলে আগামী ৩০ বছরেও এই ক্যাম্পাসে আর কোন অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা লাগবে না।”
তবে আগের উপাচার্য অধ্যাপক আমিনুল হক ভূঁইয়ার সময়ে পাশ হওয়া ২০০ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ বিগত দুই বছরেও সম্পন্ন হয় নি বলে শ্বেতপত্রে উল্লেখ করা হয়।
বিচার প্রার্থীকে শাস্তি প্রদান, কারণ দর্শানোর নোটিশের নামে প্রহসন, জামায়াত তোষণ, বহিষ্কারের হুমকি, জোবাইক সেবার নামে শিক্ষার্থীদের পকেট ফাঁকা করার চেষ্টা, বিভিন্ন অনুষদের ডিন নিয়োগে সরাসরি অ্যাক্ট ভায়োলেশন, বিভিন্ন বিভাগে নিন্মমানের ইকুইপমেন্ট ক্রয়ের মাধ্যমে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে, যা ভিত্তিহীন বলে মনে করছেন উপাচার্য।

তিনি বলেন, “আমাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে এখানে পাঠিয়েছেন। প্রমোশন আপগ্রেডেশন বোর্ডের সুপারিশের ভিত্তিতে আমি যোগ্য শিক্ষকদের মূল্যায়ন করেছি। জামায়াত তোষনের প্রশ্নই আসে না।”


সিলেটভিউ২৪ডটকম/২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯/এএএম/এসডি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন