আজ বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪ ইং
সিলেট :: বঙ্গবন্ধুকে হত্যা না করলে আশির দশকে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছতাম বলে মন্তব্য করেছেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ।
সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েলের এই বক্তব্যেকে সামতে তুলে ধরে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আজকের দিনটি জাতির জন্য কালো দিবস। যারা যুদ্ধ দেখেননি, তারা ধারণাও করতে পারবেন না, যারা যুদ্ধ করেছেন জাতির জন্য তাদের দেশ প্রেম ও মমত্ববোধ কেমন ছিল।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সিলেট জেলা প্রশাসন মিলনায়তনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতির জনককে হত্যা করে দেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে ওরা। এরপর বর্তমান প্রজন্ম সৌভাগ্যবান তারা সঠিক ইতিহাস জানতে পারছে।
যুদ্ধের পটভূমি তুলে ধরে তিনি বলেন, যুদ্ধ চলাকালে আমার বয়স ৭ বছর। মিত্র বাহিনীর সহায়তায় দেশকে চারটি জোনে ভাগ করে যুদ্ধ শুরু হয়। পাক হানাদারদের আত্মসমর্ণনের আহ্বান জানিয়ে ৬ ডিসেম্বর বিমান থেকে লিফলেট ছুড়ে ফেলে মিত্র বাহিনী। একটি লিফলেট আমিও খুঁড়িয়ে পেয়েছিলাম, বলেন তিনি।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, পাক হানাদাররা দেশ ছাড়ার আগে এই জাতিকে ধ্বংস করে দিয়ে যেতে চেয়েছিল। সেসুবাধে একাত্তরের ৮,৯,১০ ডিসেম্বর থেকে তারা ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করে। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ উড়িয়ে দেয়, ব্যাংক ধ্বংস করে ডিনামাইট দিয়ে। আর জাতিকে মেধাশূণ্য করতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের বাসা-বাড়ি থেকে বের করে এনে হত্যা করে। তাদের বাড়ি চিনিয়ে দেয় রাজাকার আল বদররা। এরপরও একটি স্বাধীন দেশে কিভাবে মুক্তিযোদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার সাহস পায়?
নতুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জীবিত প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার কাছ থেকে ইতিহাসের সত্য ঘটনা পরবর্তী প্রজন্মের জানা দরকার। কেননা নতুন প্রজন্মই দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। এজন্য দেশের প্রতি মমত্বোধ, দেশপ্রেম সৃষ্টিতে সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে এম কাজি এমদাদুল ইসলাম বলেন, ১৪ ডিসেম্বর দিবসের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসন, পাকিস্তানীদের ২৩ বছরের শাসন, সবকিছু ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে। সশস্ত্র যুদ্ধ হয়তে অনেক দেশের তুলনায় সময় কম, কিন্তু ত্যাগ বিরল। আর কোনো দেশের স্বাধীনতা অর্জনে ৩০ লাখ লোক শহীদ হয়নি।
তিনি কবলেন, পাকিস্তানীরা ভেবেছিল বুদ্ধিজীবীদের হত্যার মাধ্যমে জাতিকে মেধাশূণ্য করলে তারা এদেশে আবারো ফিরে আসতে পারবে। তাই তাদের দোসররাও তাই চেয়েছিল। এছাড়া পাকিস্তান আমলে আল বদর আল সামসদের থানা থেকে বেতন দেওয়া হতো। তাই থানার পুরাতন নথি ঘাটলে তাদের নাম খুঁজে বের করে তালিকা করতে হবে।
সাবেক অর্থমন্ত্রীর একটি বক্তব্যের উদৃতি দিয়ে তিনি বলেন, আমরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে ২০৩০ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পৌছাতে পারবো। এ জন্য প্রয়োজন দেশপ্রেম। তবেই স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে পারবো।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আসলাম উদ্দিনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন, এসএমপির উপ কমিশনার জেদান আল মুছা, স্থানীয় সরকার উপ পরিচালক মীর মাহবুবুর রহমান, সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার ভবতোষ বর্মণ, সাংবাদিক মুহিত চৌধুরী প্রমুখ।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৪ ডিসেম্বর ২০১৯/প্রেবি/এসডি