আজ শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ইং

জিন্দাবাজারের ‘রাস্তার রাজা’ হকাররা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-১২-১৫ ০০:২৭:৩৬

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেট নগরীর রাস্তাগুলো যেন এক ভ্রাম্যমাণ হাটে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে কোর্ট পয়েন্ট থেকে চৌহাট্টা পর্যন্ত রাস্তার একাংশের উপর চৌকি বসিয়ে কয়েক\'শ ভাসমান কাপড়ের দোকান গড়ে উঠেছে। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন নগরবাসী।

জিন্দাবাজারের রাস্তার ড্রেনের কাজ চলমান থাকায় রাস্তা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। অপরদিকে রাস্তার একাংশে চৌকি বসিয়ে কাপড় বিক্রি করায় যানচলাচল ও পথচারীরা বিড়ম্বনায় পড়ছেন প্রতিনিয়ত।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী প্রায়সময় ঝটিকা অভিযান চালালেও সময়ের ব্যবধানে আবার জড়ো হয়ে পসরা বসায় ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা। তবে ফুটপাতে ব্যবসা বসানোর জন্য নগরবাসী অনেকটা দায়ি করছেন নগরীর মার্কেটগুলোর কর্তৃপক্ষকে। প্রায় প্রতিটি মার্কেটের মালিকরা অল্প টাকা নিয়ে তাদের মার্কেটের সামনে ছোটখাটো চা, পান দোকান বসানোর অনুমতি দিয়ে ফুটপাত দখল করে নিয়েছেন বলে নগরবাসীর অভিযোগ।

সারাবছর নগরীর ফুটপাত হকারদের দখলে থাকলেও শীতকাল হকারদের ঈদের মৌসুমে পরিণত হয়। রাস্তার উপর বড় বড় চৌকি বসিয়ে গরম কাপড়ের ব্যবসা খোলা হয় পুরো নগরজুড়ে।

সবচেয়ে বেশি ভ্রাম্যমাণ দোকান বসানো হয় জিন্দাবাজার থেকে চৌহাট্টা রাস্তায়। বন্দরবাজারের মধুবন মার্কেট, সবুজ বিপণী, সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, শুকরিয়া মার্কেট, মিতালী ম্যানশন, সিলেট প্লাজা, লতিফ সেন্টার, সিটি সেন্টার, কাজী ম্যানশন, মহিলা কলেজ, শহীদ মিনার এলাকার রাস্তা জুড়ে কাপড় বিক্রেতা কত, তার কোন ইয়ত্তা নেই। পাশাপাশি ফেরি দিয়ে ফলমূল ও সবজি বিক্রেতারাদের সংখ্যাও কম নয়।

আরিফুল হক চৌধুরীর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর হকার উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। গেল বছর পুনরায় মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি হকারদের বিরুদ্ধে এক প্রকার যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তিনি হকার উচ্ছেদ করতে অনেকটা ব্যর্থ বলে মনে করছেন নগরবাসী।

মেয়র আরিফ হকার উচ্ছেদের ব্যর্থতায় প্রশাসনকে দায়ী করছেন। তিনি বলেন, প্রশাসন যদি সহযোগিতা না করে তাহলে তাঁর একার পক্ষে হকার উচ্ছেদ সম্ভব নয়।

সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির নতুন কমিটির শপথ অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে মোমেনের উপস্থিতিতে মেয়র আরিফুল হক তাঁর বক্তব্যে বলেছেন, সিলেটের ব্যবসায়ীরা তাদের মার্কেটের সামনের অবৈধ দোকান উচ্ছেদ প্রথমে করতে হবে। তিনি আরো বলেছেন, সিটি কর্পোরেশন শুধু হকার উচ্ছেদ করতে পারবে না। প্রয়োজন প্রশাসনের সহযোগিতা।

সম্প্রতি মেয়র আরিফ বন্দর বাজারের লাল বাজার, দুর্গা কুমার স্কুলের সামনে বড় ধরনের উচ্ছেদ করেছিলেন। কিন্তু দু’দিনও ঠিকেনি। এর আগে সিটি কর্পোরেশনের সামনে রাতে সবজি বিক্রেতাদের কিছুদিনের জন্য হঠাতে পারলেও আবার একই জায়গা জুড়েছেন বিক্রেতারা।

সম্প্রতি নগরীর জিন্দাবাজারের লতিফ সেন্টারের সামনে ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করতে বেশ কয়েকটি চৌকি ও কাপড় জব্দ করেছিলেন মেয়র আরিফ। প্রায় সময় মেয়র আরিফ সিসিকের কর্মকর্তাদের নিয়ে অভিযান চালিয়ে সাময়িক সময়ে সময়ের জন্য হকার মুক্ত করলেও পুনরায় তারা রাস্তায় বসে পড়ে।

ব্লু ওয়াটারের কাপড় ব্যবাসায়ী রাসেল আহমদ তালুকদার বলেন, ৪/৫ দিন মধুবন মার্কেট থেকে জিন্দাবাজার পর্যন্ত রাস্তা একসাথে ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে হকারদের বিরুদ্ধে অভিযান করলে হয়তো হকার মুক্ত করা যাবে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৫ ডিসেম্বর ২০১৯/জেএসি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন