আজ শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ইং

সিলেট যুবলীগে আর কতো অপেক্ষা!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০২-১৯ ০০:০৬:১৭

রফিকুল ইসলাম কামাল :: প্রায় তিন দশকের অপেক্ষার পর ভোটের মাধ্যমে শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচনের সুযোগ পেয়েছিলেন কাউন্সিলরা। আর প্রায় দেড় দশক পর হয়েছিল সম্মেলন। সম্মেলনের পর পেরিয়েছে আরো প্রায় ছয় মাস। কিন্তু এখনও দেখা মেলেনি সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আসতে আগ্রহী নেতাকর্মীদের অপেক্ষাও তাই ফুরোচ্ছে না। যুবলীগ নেতারা বলছেন, তাঁরা পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে কাজ করছেন।

জানা গেছে, সিলেট যুবলীগে ১৯৯২ সালে নেতৃত্ব নির্বাচনে সম্মেলনে ভোট গ্রহণ হয়েছিল। এরপর ২০০৩ সালে জেলা যুবলীগের সম্মেলন হয় প্রত্যক্ষ ভোট গ্রহণ ছাড়াই। পরের বছর মহানগর যুবলীগের সম্মেলনও একইভাবে শেষ হয়। এরপর গেল বছরের ২৭ জুলাই মহানগর যুবলীগের এবং ২৯ জুলাই জেলা যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে দলীয় কাউন্সিলরদের ভোট গ্রহণের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়।

সম্মেলনে জেলা যুবলীগে সভাপতি পদে শামীম আহমদ (ভিপি শামীম) ১১৫ ভোট এবং সাধারণ সম্পাদক পদে শামীম আহমদ (সীমান্তিক শামীম) ১০৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। সভাপতি পদে প্রার্থী ছিলেন ৩ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ৪ জন। অন্যদিকে মহানগর যুবলীগে সভাপদি পদে ৩৬৬ ভোট পেয়ে আলম খান মুক্তি এবং ৩৭০ ভোট পেয়ে মুশফিক জায়গীরদার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সভাপতি পদে প্রার্থী ছিলেন ৫ জন; তবে শেষপর্যন্ত ৩ জনই সরে দাঁড়ান। আর সাধারণ সম্পাদক পদে আরো দুই প্রার্থী ছিলেন।

নির্বাচিতদের মধ্যে ভিপি শামীম আগে থেকেই জেলার সভাপতি, মুক্তি মহানগরের আহবায়ক ও মুশফিক যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন। শুধুমাত্র পরিবর্তন আসে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে। আগের কমিটির খন্দকার মহসিন কামরান সম্মেলনে প্রার্থী হননি। এ পদে আসেন সীমান্তিক শামীম।

সম্মেলন শেষে কেন্দ্রীয় যুবলীগের তৎকালীন চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। জেলা ও মহানগর শাখার নেতারাও দ্রুত কমিটি পূর্ণাঙ্গ করবেন বলে আভাস দিয়েছিলেন। তবে সম্মেলনের প্রায় সাড়ে ৬ মাস শেষ হলেও এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটির খসড়াই তৈরি করতে পারেনি জেলা ও মহানগর যুবলীগ। দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, তাঁরা কেন্দ্রীয় যুবলীগের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকার ছায়া পড়েছে সিলেট যুবলীগেও। যুবলীগে ওমর ফারুকের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দিয়ে গেল বছরের ২৪ নভেম্বর শেখ ফজলে শামস পরশকে নতুন চেয়ারম্যান ও মাইনুল হোসেন খান নিখিলকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। তবে এখনও কেন্দ্রীয় যুবলীগে পূর্ণাঙ্গ কমিটি আসেনি। চলতি মাসের শেষ দিকে কমিটি পূর্ণাঙ্গ হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে একটি সূত্র।

এ প্রসঙ্গে সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ (ভিপি শামীম) সিলেটভিউকে বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজ চলছে। আমরা ঢাকা থেকে কেন্দ্রের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি। চলতি মাসের শেষ দিকে কেন্দ্রের পূর্ণাঙ্গ কমিটি আসতে পারে। এরপর কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুসারে আমরা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করবো।’

জানা গেছে, এবার জেলা ও মহানগর যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ‘অনুপ্রবেশকারীদের’ ঠেকাতে সতর্কতা অবলম্বন করছেন দায়িত্বশীল নেতারা। এছাড়া মাদকসেবী, অপরাধে যুক্ত এবং বিতর্কিতদেরও ঠেকাতে চান তারা।

জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম সিলেটভিউকে বলেন, ‘আমরা অনুপ্রবেশকারীমুক্ত কমিটি করবো। এ বিষয়ে যতোটা সতর্ক থাকা যায়, আমরা আছি। অনুপ্রবেশকারী ঠেকাতে বিশেষ ফরমেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আসতে আগ্রহী, তাদেরকে ওই ফরম পূরণ করতে হবে। ফরমে নিজের ও পরিবারের রাজনৈতিক তথ্যাবলি দিতে হবে। যেমন- তিনি (পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আসতে আগ্রহী) আগে কোনো দলের সাথে যুক্ত ছিলেন কিনা, তার পরিবারের কোনো সদস্য রাজনীতিতে যুক্ত কিনা, যুক্ত হলে কোন দলে আছেন কিংবা আগে কোনো দলে যুক্ত ছিলেন না কিনা ইত্যাদি তথ্য ফরমে উল্লেখ করতে হবে।’

তিনি জানান, পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আসতে আগ্রহীদের পূরণকৃত ওই ফরম সত্যায়িত করবেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতারা। এর মাধ্যমে অনুপ্রবেশকারীদের ঠেকানো সম্ভব হবে।

এ বিষয়ে কথা বলতে সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি ও সাধারণ সম্পাদক মুশফিক জায়গীরদারকে তাদের ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বারে ফোন দেওয়া হলে তারা রিসিভ করেননি।

তবে সম্প্রতি আলম খান মুক্তি সিলেটভিউকে বলেছিলেন, ‘ত্যাগী, পরীক্ষিত, দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ নেতারাই পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান পাবেন। কমিটিতে আসতে যারা আগ্রহী, তাদের সাথে কথা বলা হবে। এরপর কমিটি তৈরি করে কেন্দ্রে পাঠানো হবে। কেন্দ্র কমিটির অনুমোদন দেবে। গঠনতন্ত্র অনুসারে ১০১ সদস্যের কমিটি হতে পারে।’

আলম খান মুক্তি আরো বলেছিলেন, ‘কোনো মাদকাসক্ত, মাদক ব্যবসায়ী, অপরাধী, অনুপ্রবেশকারী, বিতর্কিত ব্যক্তি কমিটিতে স্থান পাবে না। আমরা সুন্দর ও বিতর্কমুক্ত কমিটি করার চেষ্টা করবো।’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০/আরআই-কে

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন