আজ শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ইং

সিলেটে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় আগ্রহী হয়ে উঠছেন করোনা রোগীরা!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৭-০৫ ১২:৪২:০৯

নিজস্ব প্রতিবেদক :: করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর কোনো প্রতিষেধক সারাবিশ্বের কোথাও এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত অনুমোদন পায়নি। এটি পেতে ও বাজারে আসতে আরও সম্ভাব্য এক থেকে দেড় বছর সময় লাগতে পারে। সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা এখনও আবিষ্কৃত না হওয়ায় আবির্ভাবের শুরু থেকেই লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসার মাধ্যমে একে মোকাবেলা করা হচ্ছে। তাই করোনাভাইরাস থেকে পরিত্রাণ পেতে খোঁজা হচ্ছে নানা বিকল্প পথ।

সম্প্রতি হোমিও ওষুধ Arsenic Album-30 রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে করোনা প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে এমন তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় অনেকেই এই ওষুধ সম্পর্কে জানতে উদগ্রীব।

জানা গেছে, সিলেটেও নিয়মিত চিকিৎসার বাইরে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় আগ্রহী হয়ে উঠেছেন অনেক করোনা রোগী। হোমিও চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে সেবন করছেন হোমিওপ্যাথি ওষুধ।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের হোমিওপ্যাথি বোর্ডের সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক ও জালালবাদ হোমিও কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ডা. মো. এমদাদুল হক  সিলেটেভিউ-কে সংক্ষিপ্ত একটি সাক্ষাৎকার দেন।

এ সময় তিনি বলেন জানান, ‘বর্তমান সময়ে সবচেয়ে মহাসংকটের নাম কোভিড ১৯ বা করোনাভাইরাস, যা বিশ্বমহামারীর আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর প্রায় সকল দেশই এ ভাইরাসে আক্রান্ত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার মেডিসিন ও ভ্যাক্সিন নিয়ে কাজ ও গবেষণা শুরু হলেও এখন পর্যন্ত কার্যত সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার হয়নি। পৃথিবীর কোনো চিকিৎসা পদ্ধতিই এ চিকিৎসায় এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য সাফল্য বয়ে আনতে পারেনি। এমতাবস্থায় আশার আলো দেখাচ্ছে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতি। ইতোমধ্যে ইতালি, স্পেন, কিউবা ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশে হোমিও চিকিৎসার মাধ্যমে অতি দ্রুততার সঙ্গে বহু করোনা রোগী সম্পূর্ণরূপে আরোগ্য লাভ করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ প্রয়োগ করে এমনি একটি আশানুরূপ নজির স্থাপিত হয়েছে পুরান ঢাকার স্বামীবাগে অবস্থিত ইসকন মন্দিরে। মাত্র ৭ দিনের হোমিও ওষুধ প্রয়োগ করে সুস্থ হয়েছেন ইসকন মন্দিরের পুরোহিতসহ ৩৫ জন করোনা রোগী। এমন খবর প্রকাশ হওয়ার পর বাংলাদেশ টেলিভিশন, জি-টিভি, মাই টিভিসহ অনেক টেলিভিশন এ বিষয়ে একাধিক সংবাদ প্রকাশ করেছে।
পরবর্তীতে দেখা যায় ঢাকার রাজারবাগ সেন্ট্রাল পুলিশ হসপিটালের করোনা ওয়ার্ডের অর্ধশতাধিক রোগী শুধুমাত্র হোমিওপ্যাথিক ওষুধ সেবনের মাধ্যমে পুরোপুরি আরোগ্য লাভ করেছেন। যা সম্পূর্ণ কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি রূপেই প্রতীয়মান হয়েছে।’

ডা. মো. এমদাদুল হক আরো বলেন, ‘সিলেটেও এখন করোনা রোগীরা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় বেশ আগ্রহী হয়ে উঠছেন। জালালবাদ হোমিও কলেজের ডাক্তারদের তত্বাবধানে বেশ কয়েকজন করোনা রোগীকে চিকিৎসা প্রধান করা হচ্ছে। তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন। এছাড়াও ওসমানীনগরের তাজপুরে দুইজন রোগীকে হোমিও টেলিমিডিসিন চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। তারা সুস্থতার দিকে আছেন।’

এক প্রশ্নের জবাবে ডা. মো. এমদাদুল হক জানান, ‘আমরা আগেই বলেছি- করোনার কোনো প্রতিষেধক হোমিওপ্যাথিতে এখনো আবিস্কার হয়নি। তবে করোনার প্রতিরোধক হিসেবে হোমিওপ্যাথি সিমটমেটিক পদ্ধতিতে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে গত দু\\\'মাস আগে অনুমোদন দেয়ার পর থেকেই আমারা সিলেটসহ সারা দেশে এ চিকিৎসা শুরু করেছি। আমরা ইতোমধ্য সিলেটের প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে এমন বেশ কিছু ওষুধ উপহার দিয়েছি। সেই কার্যক্রম আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।’

এমদাদুল হক বলেন, ‘হোমিওপ্যাথিক ঔষধ রোগীরা প্রচলিত অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসার পাশাপাশি নিতে পারছেন এবং এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। যারা আগ্রহী হন তাদেরকেই আমি ঔষধ দিচ্ছি এবং অনেকেই জানিয়েছেন তারা উপকার পেয়েছেন। করোনার যেসব লক্ষণ অর্থাৎ- জ্বর, গলা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, কাশি- এসবের চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি সিলেটসহ পুরো দেশে অনেক আগে থেকেই বেশ জনপ্রিয়। এখন করোনায় আক্রান্তদের ক্ষেত্রেও এসব উপসর্গের যেটি বেশি সেটিকে ধরে আমরা ঔষধ দিচ্ছি। তাতে অনেকে উপকার পাচ্ছে। আর যারা আক্রান্ত হননি তাদের জন্য প্রতিরোধমূলক পথ্য দেয়া হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় খরচ খুবই কম হওয়ায় করোনা রোগীরা সহজেই ওষুধ নিতে পারছেন এবং এতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।’


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ৫ জুলাই, ২০২০ / ডালিম

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন