আজ শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ইং

জকিগঞ্জ স্থল বন্দরে রাজস্ব আদায়ে ধ্বস!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-০৮-১৩ ১৯:১৭:১৩

জকিগঞ্জ প্রতিনিধি :: জকিগঞ্জ স্থল বন্দরে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক যোগাযোগ নাজুক হয়ে পড়ায় আমদানী-রপ্তানী তেমন একটা নেই বললেই চলে। গত কয়েক মাস থেকে জকিগঞ্জ স্থল বন্দর দিয়ে নির্ধারিত কয়েকটি আমদানী পণ্য ছাড়া কোন পণ্য আমদানী হচ্ছে না। আমদানী রপ্তানী কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় ধ্বস নেমেছে বন্দরের রাজস্ব আদায়ে।

গত মে মাস থেকে রাজস্ব আদায়ের টার্গেট পূরণ হয়নি। এ স্থল বন্দরে বিগত অর্থ বছরের জুলাই মাসে ২৮ লক্ষ টাকা রাজস্ব আয় হলেও চলতি অর্থ বছরে রাজস্ব আদায় হয়েছে মাত্র ৮ লক্ষ টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক যোগাযোগ মারাত্মকভাবে অচলাবস্থা বিরাজ করায় দীর্ঘদিন থেকে আমদানী ও রপ্তানীতে বিরাট ধ্বস নেমেছে। এক সময় জকিগঞ্জ স্থল বন্দর থেকে প্রতি মাসে প্রায় কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হলেও এখন  ৮/১০ লাখে নেমে এসেছে বলে স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

স্থল বন্দরে অচলাবস্থা দেখা দেয়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা মনে করেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার অবনতি ও জেলা শহর থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী স্থল বন্দর হওয়ায় অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। তাদের অভিযোগ এ স্থল বন্দরে নামে জকিগঞ্জ কাস্টম ঘাট থাকলেও বাস্তবে মালামাল নিয়ে কুশিয়ারা নদীতে উঠা নামার জন্য নেই কোন ঘাট (সিঁড়ি)। মারাত্মক এ অসুবিধার জন্য জকিগঞ্জ স্থল বন্দর দিয়ে আমদানী-রপ্তানীতে অনেক ব্যবসায়ীর অনীহা।  কাস্টমঘাটে সিঁড়ি না থাকায় মালামাল নৌকা থেকে ট্রাকে তুলতে খরচ বেশী হয়।

১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠিত জকিগঞ্জ স্থল বন্দরের সমস্যার শেষ নেই। জন্মলগ্ন থেকে নানা সমস্যায় জর্জরিত এ স্থল বন্দর। ছোট পরিসরে অস্থায়ীভাবে ৫টি পাকা ঘর নির্মাণ করে শুল্ক স্টেশনটির কার্যক্রম চালু হলেও দীর্ঘ ৭৩ বছর ধরে সংস্কার বিহীন জরাজীর্ণ আধাপাকা ঘরগুলোতে কর্মকর্তা কর্মচারীরা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এখানে নেই প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও আবাসিক ব্যবস্থা। রাস্তা থেকে অফিসঘর নীচু থাকায় বৃষ্টির পানি সহজেই ঢুকে পড়ে অফিসে।

সরেজমিন জকিগঞ্জ স্থল বন্দরে গিয়ে দেখা যায়, নীরব হয়ে পড়ে আছে জকিগঞ্জ কাস্টম ঘাট খ্যাত কুশিয়ারা নদীর পাড়। শ্রমিকদের নেই কোন কোলাহল। অফিসেও কর্মকর্তা-কর্মচারীর তেমন একটা আনাগোনা নেই। জনৈক কর্মচারীকে পাওয়া গেলে সে জানায়, কাষ্টমসে ব্যবসা বাণিজ্য না থাকায় অফিসের সবাই ছুটিতে আছেন।

জকিগঞ্জ শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা হুমায়ুন আহমদ জানান, জকিগঞ্জ স্থল বন্দরে আমদানী রপ্তানীতে রাজস্ব কমে গেছে। এক সময় জকিগঞ্জ স্থল বন্দর দিয়ে শুটকি, সাতকরা, কমলা, আদা, বিভিন্ন তাজা ফলমূল ও কাঁচা মাল আমদানী হলেও গত মে মাস থেকে মাঝে মধ্যে সাতকরা ও আদা ছাড়া আর কিছুই আমদানী হচ্ছেনা। এ স্থল বন্দরে এখন রপ্তানী একেবারে নেই বললে চলে। এক সময় এ স্থল বন্দর দিয়ে মাসে কোটি টাকার রাজস্ব আয় হলেও এখন তা কমে ৮/১০ লাখে পৌছেছে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৩ আগস্ট ২০১৭/আহাতা/ডিজেএস

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন