আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

সারি নদী থেকে পানি আসবে সিলেট নগরীতে

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-০৮-১৪ ০০:০২:০৮

প্রতীকী ছবি

রফিকুল ইসলাম কামাল :: সিলেট মহানগরীর অন্যতম সমস্যা হচ্ছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। নগরীতে প্রতিদিন পানির চাহিদা প্রায় ৮ কোটি লিটার হলেও এর অর্ধেকও সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে পানির জন্য নগরবাসীর হাহাকার নিত্যদিনের। এই সমস্যা মোকাবেলায় বড় আকারের আরেকটি ‘ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট’ স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। বর্তমানে সারি নদীর আশপাশে ওই প্ল্যান্ট স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে। ‘ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম)’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান এই সম্ভাব্যতা যাচাই করছে।

পানির সমস্যা কিছুটা কমাতে এর আগে নগরীর কুশিঘাট এলাকায় একটি ‘ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট’ স্থাপন করেছিল সিসিক। কাজ শেষ হয়ে গেলেও সেটি থেকে সক্ষমতার পুরোপুরি পানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে ওই ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থেকে পরীক্ষামূলকভাবে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত সিলেট নগরীর বাসিন্দা প্রায় ছয় লাখ। দিন দিন এই সংখ্যাটা বাড়ছেই। এ বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রতিদিনের পানির চাহিদা পূরণ করা সিটি করপোরেশনের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।

সিটি করপোরেশনের পানি শাখা সূত্র জানায়, নগরীতে সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত নির্দিষ্ট রুটিন অনুসারে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন এলাকায় পানি সরবরাহ করা হয়। ৪০টি পাম্পের সাহায্যে উত্তোলিত পানি নগরবাসীর কাছে পৌঁঁছে দেওয়া হয়। এছাড়া, সিটি করপোরেশনের আওতাধীন আরো ৩৯টি উৎপাদক টিউবওয়েল রয়েছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে মানিকপীর গোরস্তান সংলগ্ন স্থান, রিকাবিবাজার পয়েন্ট এবং শেখঘাটে আরো তিনটি উৎপাদক টিউবওয়েল স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। বর্তমানে সেগুলোর নির্মাণ কাজ চলছে।

তবে এসব তোড়জোড়ে কাজের কাজ যেন কিছুই হচ্ছে না। ভয়াবহ পানি সংকট থেকে মুক্তি মিলছে না নগরবাসীর। এরকম অবস্থায় পানি সংকট কিছুটা কমাতে আরেকটি ‘ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিটি করপোরেশন। নগরীর বাইরে সারি নদীর আশপাশে এই প্ল্যান্টটি স্থাপন করা হতে পারে।

এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব সিলেটভিউ২৪ডটকমকে বলেন, ‘সিলেট নগরীতে এখন প্রায় ৮ কোটি লিটার পানির চাহিদা রয়েছে। সিটি করপোরেশনের পক্ষে চার থেকে সাড়ে চার কোটি পানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু প্রায় চার কোটি লিটার পানির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এসব বিবেচনায় কুশিঘাটের পর আরেকটি নতুন ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি আমরা।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম) নামক একটি প্রতিষ্ঠান গত বেশ কিছু দিন ধরে নতুন ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই করছে। পরিকল্পনা অনুসারে, সারি নদী থেকে পানি এনে নগরীর চাহিদা পূরণ করতে চায় সিসিক। এজন্য বছরের কোন সময় সারি নদীতে পানি কতোটুকু থাকে, কিভাবে সেখান থেকে পাইপের মাধ্যমে পানি নগরীতে আনা যাবে এসব বিষয় যাচাই করে দেখছে আইডব্লিউএম।

সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব বলেন, ‘সারি নদী থেকে পানি আনার সম্ভাব্যতা যাচাই করছে আইডব্লিউএম। যাচাই কাজ শেষে তারা আমাদেরকে প্রতিবেদন দেবে। সে প্রতিবেদন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) প্রেরণ করা হবে। সেখানে পাস হওয়ার পর শুরু হবে কাজ।’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৪ আগস্ট ২০১৭/আরআই-কে

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন