আজ বুধবার, ০৮ মে ২০২৪ ইং

বিয়ানীবাজারে মা-বাবার সামনে দুই বোনকে ধর্ষণকারী ৫ আসামীর যাবজ্জীবন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-০৮-২০ ১৫:০৭:২৯

নিজস্ব প্রতিবেদক :: আজ থেকে তিনবছর আগে বিয়ানীবাজারে মা-বাবার চোখের সামনে দুই বোনকে গণধর্ষণ করেছিল একদল মুখোশধারী নরপশু। এ ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়। ২০১৪ সালের ২৫ মে সেদিনটি ছিলো রবিবার। সেদিন ভোরে এ ন্যক্কারজনক ঘটনাটি ঘটে। আজ আরেক রবিবার। আজ এসে কিছুটা হলেও মুঁছলো সেই কলঙ্কের দাগ। ঘোষণা হয়েছে সেই ধর্ষণ মামলার রায়। রায়ে ধর্ষকদের যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আদালতে আসামীরা উপস্থিত ছিলো। এসময় একজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

রবিবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতে এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এ বিচারক  জুলফিকার হায়াত  এ রায় দেন। যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, বিয়ানীবাজার উপজেলার জালালপুর গ্রামের মৃত মখদ্দছ আলীর ছেলে জয়নুল ইসলাম, একই এলাকার আবদুল বাছিত, হাসান আহমদ হাসনু, পূর্ব পইলগ্রামের কালাম আহমদ, কানাইঘাটের বড়দেশ গ্রামের মৃত সুন্দর আলীর ছেলে সেলিম আহমদ। এছাড়া খায়রুল ইসলাম মাতুয়া নামের অপর এক আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ  প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।

রায়ে সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামীকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা দুই ভিকটিমকে দেয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত।  রায়ের তথ্য নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট ফখরুল ইসলাম।

২০১৪ সালের ২৫ মে ভোররাতে উপজেলার চারখাই ইউনিয়নের হাজরাপাড়া ধর্ষণের শিকার হন দুই বোন। ধর্ষিতা দুই বোন ওই বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে উর্ত্তীণ হয়েছিলেন। পুলিশ তাদের উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করে।

নির্যাতিতা ২ বোনের বাবা বলেন- আমরা রায়ে সন্তুষ্ট। তার দু’টি মেয়ের জীবন তো ধ্বংস হয়ে গেলো। এখন আগামী জীবনে তাদের নিরাপত্তার জন্য তিনি সরকারের কাছে তার দু’টি মেয়ের জন্য চাকুরি প্রদানের অনুরোধ জানান।

আসামী পক্ষের আইনজীবী আয়েশা বেগম শেলী বলেন- আমরা রায়ে সন্তুষ্ট নই। আমরা ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন করেছিলাম। কিন্তু সেটি উচ্চ আদালতে নির্দেশে করা হয়নি। ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়াই এ রায় দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে রায় নিরপেক্ষ হয়নি বলে আমি মনে করি। আমরা উচ্চ আদালতে যাবো।


ফ্লাশব্যাক :
২৫ মে রবিবার ভোররাত ৪টার দিকে মুখোশপরা ৭-৮ জন নরপশু সিদকেঁটে ঘরে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে। পরে মা-বাবাকে বেধে রেখে তাদের দুই মেয়েকে ধর্ষণ করে। ধর্ষকরা চলে যাওয়ার পর পরিবারের সদস্যদের আর্ত-চিৎকারে লোকজন জড়ো হয়ে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ নির্যাতিতা দুইবোনকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি বিভাগে ভর্তি করে। বিয়ানীবাজার থানার তৎকালীন ওসি আবুল কালাম আজাদ সেদিন জানিয়েছিলেন- দুইবোনকে ধর্ষণ করে ৫ নরপশু। এর মধ্যে বড় বোনকে ৩ জন ও ছোট বোনকে ২ জন ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় পরদিন ধর্ষিতাদের বাবা বাদি হয়ে বিয়ানীবাজার থানায় মামলা দায়ের (জিআর ১০৩/১৪) করেন। ওই বছরের ১২ অক্টোবর বিয়ানীবাজার থানার তৎকালীন ওসি আবুল কালাম আজাদ ৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ২০ আগস্ট ২০১৭/ শাদিআচৌ/ এমইউএ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন