আজ শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ইং

প্রয়াত সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলীর ২য় মৃত্যুবার্ষিকী আজ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-০৯-১৪ ০০:২৩:৫৬

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি :: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রয়াত সমাজকল্যাণ মন্ত্রী, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি, সাবেক সাংসদ, স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত বীর মুক্তিযুদ্ধা সৈয়দ মহসীন আলীর ২য় মৃত্যুবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার। মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির পালন করবে সৈয়দ মহসীন আলী ফাউন্ডেশন, জেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠন। ২০১৫ সালের এই দিনে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সৈয়দ মহসীন আলী মৃত্যুবরণ করেন।

সৈয়দ মহসীন আলীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টায় মন্ত্রীর কবরে ফাতেহা পাঠ ও পুষ্পস্তবক দেওয়া হবে। পরে মহসীন আলীর বাস ভবনে মিলাদ ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও এতিমদের খাবার বিতরণ করা হবে।

এছাড়া ১৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকাল ৩টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মহসীন আলী ফাউন্ডেশনের আয়োজনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল। সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আ.স.ম ফিরুজ। এছাড়াও জাতীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

সৈয়দ মহসীন আলীর বাবার নাম সৈয়দ শরাফ আলী। তিনি ব্যবসায়ী ছিলেন। সৈয়দ মহসীন আলীর মায়ের নাম আছকিরুনন্নেছা খানম। মৌলভীবাজার থেকে ব্যবসায়ীক প্রয়োজনে তিনি কলকাতা চলে যান। কলকাতার আলীপুরে ছিলো তার বিশাল বাড়ি। আলীপুরের সেই বাড়িতে ১৯৪৮ সালের ১২ই ডিসেম্বর তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ৫ ভাইদের মধ্যে তিনি সবার বড় ছিলেন। সৈয়দ মহসিন আলীর শিক্ষা জীবন শুরু হয় কলকাতায়। তিনি কলকাতার সেন্টজেবিয়ার্স স্কুলে জুনিয়র কেমব্রিজ ও সিনিয়র কেমব্রিজ পাস করেন। পরবর্তীকালে আবার বাংলাদেশে এসে বাংলা মাধ্যমে কিছুদিন পড়াশুনা করেন। তবে আবারও তিনি কলকাতা থেকে ম্যানেজমেন্টে ডিপ্লোমা করেন।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। দেশমাতৃকার প্রতি তার মমত্ববোধের কারণে স্বত:স্ফুতভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। সম্মুখসমরে যুদ্ধ চলাকালে গুলিবিদ্ধও হয়েছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সিলেট বিভাগে সিএনসি স্পেশাল ব্যাচের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কাজ করেছেন যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশ গঠনেও। তিনি সামাজিক ও রাজনৈতিক কাজে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন।

মৌলভীবাজার মহকুমার রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিতে তিনি ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগ যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীকালে জেলা আওয়ামী লীগেরও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতাত্তোরকালে তিনিই একমাত্র জননেতা যিনি পৌরসভায় পর পর ৩ বার বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯২ সালে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে তাকে শ্রেষ্ঠ পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করে।

২০১৪ সালের ১২ই জানুয়ারি তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পগুলোকে ঢেলে সাজিয়েছেন। সেখানে এখন বহুমুখী বাস্তবসম্মত প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। সমাজসেবায় অবদান রাখার জন্য তিনি ভারতের নেহের” সাম্য সম্মাননা ও আচার্য দীনেশ চন্দ্র সেন সম্মাননা স্বর্ণপদক লাভ করেন।

সাহিত্য ও সাংবাদিকতা ছিলো তার পছন্দের বিষয়। অবসরে তিনি বই পড়তে ভালবাসতেন। কবি-লেখকদের সঙ্গে নিয়মিত আড্ডা দিতেন। দেশের বড় বড় সাংবাদিকদের অনেকেই ছিলেন তার ব্যক্তিগত বন্ধু। তিনি এক সময় বাংলাদেশ টাইমসের প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। একজন সৎ রাজনীতিবিদ হিসেবে নিজের সম্পদ বিক্রি করে রাজনীতি করেছেন বলে তাঁর সুখ্যাতি ছিলো।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭/ওফানা/ডিজেএস

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন