আজ শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ইং

২১ আগস্টের দায় অন্যের ঘাড়ে চাপাতে জজ মিয়া নাটক করে বিএনপি

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৮-২১ ১৪:২১:০১

সিলেটভিউ ডেস্ক :: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মতো রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের অপচেষ্টাকে ঢাকাতে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকার হাস্যকর একটি নাটক রচনা করে। সুবিচার বঞ্চিত করতে এবং ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে তৎকালীন সরকার ঘটনার মূলহোতা দাবি করে জজ মিয়া নামের এক সিডি বিক্রেতাকে গ্রেফতার করে। সে সময়ের রাজনীতির কুশীলবেরা ভেবেছিলেন, জজ মিয়াকে নিয়ে বিচারের নামে নাটক করে ঘটনাটি মাটিচাপা দেবে। কিন্তু সত্য কখনো চাপা রাখা যায় না তা হয়তো ভুলে গিয়েছিলেন হামলার নির্দেশদাতা ও লন্ডনে পলাতক বিএনপি নেতা তারেক রহমান। ঘটনার ৩ বছর পর প্রমাণিত হয় সেটি ছিল তৎকালীন ৪ দলীয় জোট সরকারের নেতাদের পরিকল্পনা।

একুশ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার প্রাণ হারিয়েছিলেন ২৪ জন। আহত হন শতাধিক নেতাকর্মী। এ ঘটনায় মতিঝিল থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল জলিল ও সাবের হোসেন চৌধুরী বাদী হয়ে পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করেন। এরপর তদন্তের দায়ভার দেয়া হয় সিআইডির কাছে। এ ঘটনায় ২০০৫ সালে গ্রেফতার করা হয় জজ মিয়া নামে নোয়াখালীর সেনবাগের এক যুবককে। জজ মিয়া সে সময় গুলিস্তানে সিডির ব্যবসা করতেন। গ্রেনেড হামলার কয়েকমাস পর তার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তাকে তুলে মালিবাগের কার্যালয়ে নিয়ে আসে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। কার্যালয়ে এনে ক্রসফায়ার করে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে সাজানো জবানবন্দি দিতে বলা হয় তাকে। তার সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলার হুমকি দেয় তৎকালীন সিআইডির কর্মকর্তারা। নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জীবন বাঁচাতে সাজানো সাক্ষ্য দিতে রাজি হন তিনি। সিআইডির এক কর্মকর্তা তাকে একটি কাগজে জবানবন্দি লিখে দেন। সেটি মুখস্থ করিয়ে জজ মিয়াকে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় জড়িত বলে ১৬৪ ধারা আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়ায় সিআইডি। এর বিনিময়ে তার পরিবারকে মাসিক হারে টাকাও দিতো তারা। পরবর্তীতে জানা যায়, এটি ছিল বিএনপি নেতৃত্বাধীন ৪ দলীয় জোট সরকারের সাজানো নাটক।

নানা নাটকীয়তার পর ২০০৮ সালের ১১ জুন আদালতে সিআইডি’র দাখিল করা চার্জশিটে ২২ জনকে আসামি করা হয়। অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় জজ মিয়াকে। তবে এখন জজ মিয়া কোথায় থাকেন নিশ্চিত করে বলতে পারে না কেউ। এমনকি তার নিরাপত্তার স্বার্থেই তাকে সাংবাদিকদের কাছ থেকেও দূরে রাখা হয়েছে।

জজ মিয়াকে অব্যাহতি দেয়ার পর ২০১১ সালের আরো ৩০ জনসহ মোট ৫২ জন আসামির তালিকায় যোগ করে সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে সিআইডি। এর মধ্যে ছিল বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, হারিছ চৌধুরী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, পুলিশের সাবেক তিন মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক ও খোদা বখশ চৌধুরী এবং পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির অবসরপ্রাপ্ত এএসপি আব্দুর রশিদ, অবসরপপ্রাপ্ত এএসপি মুন্সী আতিকুর রহমান। মামলার বিচারকার্য তার নিজ গতিতে চলছে। তবে আসামিরা নানা অজুহাতে বিচারকার্যকে বিলম্বিত করতে চাচ্ছে।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন