আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

অভাবনীয় উন্নয়ন যোগাযোগ খাতে: ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক আট লেনে উন্নীতকরণ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১১-১৮ ১২:১৯:৩০

একটি দেশের উন্নয়নের জন্য সর্বপ্রধান হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা করা হয় সেই দেশের যোগাযোগ খাতকে। কারণ দেশের ভিতর আন্তঃযোগাযোগ, একস্থান থেকে অন্য স্থানে কতটুকু সময়ের ভিতর পণ্য আনয়ন, মহাসড়কের অবস্থা, যাত্রীসেবা, যানজটের অবস্থা  ও বহিঃবিশ্বের পণ্য আমদানি রপ্তানির জন্য সুযোগ সুবিধা বিবেচনা করা হয়ে থাকে। একটি দেশের যোগাযোগ খাত যত বেশি উন্নত সেই দেশের আর্থিক উন্নয়ন, জনসাধারণের জীবনমান তত দ্রুত উন্নত করা সম্ভব। এই লক্ষ্যে ২০০৯ সাল থেকে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে। তৈরী করা হয়েছে নতুন নতুন সড়ক, মহাসড়ক। পুরানো সড়ক উন্নীত করা হয়েছে চার, ছয় ও আট লেনে। এর মাধ্যমে যোগাযোগ খাতে সংযুক্ত হয়েছে নতুন অনেক উন্নয়নের পালক।

হেমন্তের শীতের আগমনী হিমেল হওয়ার সাথে দেশে বইছে নির্বাচনের উত্তেজনাপূর্ণ গরম হাওয়া। দেশের এক শ্রেণীর মানুষ বলেছিলেন যে নির্বাচনের ডামাডোলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রবাহ। থমকে যাবে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা। কিন্তু এ ধরণের গুজবকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে দেশের অর্থনৈতিক ও উন্নয়নের অগ্রযাত্রা।

দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চল থেকে রাজধানীতে প্রবেশে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধারণক্ষমতার থেকে বেশি যানবাহন যাতায়াত করায় এই মহাসড়কটি বর্তমানে আট লেনে উন্নীতকরণ করা হবে। ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়কটির প্রশস্তকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। সড়কটি আট লেনে উন্নীত করে এক্সপ্রেসওয়ে করার পরিকল্পনা নিয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্র জানা যায়, আট লেনের এ মহাসড়ক প্রকল্পটি নির্মাণ করা হবে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) ভিত্তিতে। মাঝের ছয় লেনে হবে এক্সপ্রেসওয়ে। দুই পাশে থাকবে একটি করে সার্ভিস লেন। ছয় লেনের এক্সপ্রেসওয়ে হলে এ অংশটিতে যান চলাচল নির্বিঘ্ন হবে। বিভিন্ন পয়েন্টে থাকবে এন্ট্রি পয়েন্ট। ফলে এসব পয়েন্ট দিয়ে যানবাহনগুলো সহজেই এক্সপ্রেসওয়ে থেকে বের হয়ে যেতে পারে। । বিভিন্ন পয়েন্টে পথচারী সেতু ও পারাপারের জন্য নির্মাণ করা হবে ছয়টি আন্ডারপাস।

২০০৯ সালের পূর্ববর্তী সময়ে দেশে সড়ক ও মহাসড়কের ছিল বেহাল দশা। যানজটে নাকাল ছিল গোটা নগরী কিন্তু ছিল না সমাধানের কোনো চেষ্টা। ২০০৯ সাল থেকে দেশে যানজট নিরসনের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে উড়ালসেতু, লেন বৃদ্ধি করা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মহাসড়কের।

২০০৯-২০১০ সালের ভিতর দেশে ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক, ঢাকা-ময়মনসিংহ জাতীয় মহাসড়ক, নবীনগর  ডিইপিজেড-চন্দ্রা মহাসড়ক, যাত্রাবাড়ি-কাঁচপুর মহাসড়ককে চার বা তদূর্ধ্ব লেনে উন্নীত করা হয়েছে। সড়ক প্রশস্তকরণের পাশাপাশি করা হয়েছে ফ্লাইওভার বা  উড়াল সেতু যাতে মূল সড়কে যানবাহনের চাপ কম পরে। এর ভিত্তিতে করা হয় মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার, বিশ্বরোড-বিমানবন্দর সংযোগস্থল ফ্লাইওভার, মিরপুর হতে বিমানবন্দর সড়ক ফ্লাইওভার, মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার, ফেনীতে দেশের প্রথম ছয় লেনের ফ্লাইওভার বহদ্দারহাট উড়াল সেতু । সংযোগ করা হয়েছে মেট্রোরেল।

এছাড়াও করা  হয়েছে দৃষ্টিনন্দন সড়ক প্রকল্প হাতিরঝিল। যেখানে ব্যস্ত নগরীর কর্মচঞ্চল মানুষ প্রয়োজনের তাগিদে যাতায়াতের পাশাপাশি নিতে পারেন স্বস্তির নিঃশ্বাস। শুধু তাই নয় সড়ক খাতকে পর্যটক কেন্দ্রিক করে গড়ে তোলার জন্য করা হয়েছে মেরিন ড্রাইভ। বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষে কলাতলী সৈকত থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিসতৃত এই ড্রাইভ। ৮০ কি.মি দৈৰ্ঘ্য এই মেরিন ড্রাইভটি পৃথিবীর সব থেকে দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ সড়ক।

দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের ভিতর অন্যতম যোগাযোগ খাত অর্থাৎ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এরফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও পৌঁছে যাচ্ছে নাগরিক সেবা। আগের থেকে অনেক কম সময়ে হচ্ছে পণ্য আনয়ন ব্যবস্থা। সড়ক উন্নয়নের সাথে উন্নত হয়েছে দেশের গ্রামাঞ্চল, হাট-বাজার। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট সকলে।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন