আজ শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ইং

বড়লেখায় ৪ কি.মি. কাঁচারাস্তায় ৭ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৪-১৯ ২২:২২:১৩

এ.জে লাভলু, বড়লেখা প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার নিজবাহাদুরপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ দৌলতপুর-চরিয়া রাস্তা কাঁচা থাকার কারণে সাত গ্রামের মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ রাস্তার প্রায় ৪ কিলোমিটার দীর্ঘদিন ধরে কাঁচা রয়ে গেছে। ফলে প্রতিবছর বর্ষায় কামারী খালের ওপর নির্মিত মন্দিরালা ব্রিজের সংযোগ রাস্তার দুই পাশের মাটি ধসে পড়ে। এতে রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী লোকজন চরম দুর্ভোগে পড়েন।

সম্প্রতি স্থানীয় লোকজন সংযোগ রাস্তার ধসে পড়ার অংশ নিজেরাই বাঁশের বেড়া দিয়ে সংস্কার করেছেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নিজবাহাদুরপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ দৌলতপুর-চরিয়া রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন দৌলতপুর, দক্ষিণ দৌলতপুর, চরিয়া, বাঘল, কামারগুল, সুফিনগর ও পকুয়া গ্রামের লোকজন ছাড়াও স্থানীয় ইটাউরি মহিলা মাদ্রাসা, দৌলতপুর মাদ্রাসা, দৌলতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করেন। জনদুর্ভোগ লাঘবে ওই রাস্তার কামারী খালের ওপর প্রায় পনের বছর আগে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তাটি পাকা না হওয়ায় ব্রিজটিও মানুষের দুর্ভোগ কমাতে পারছে না। এছাড়া বর্ষাকালে রাস্তাটি ডুবে যায়। তখন গাড়ি চলাচল করতে পারেনা। স্থানীয় লোকজন চলাচলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি দ্রæত পাকাকরণের দাবি জানিয়েছেন।

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নিজবাহাদুরপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ দৌলতপুর-চরিয়া রাস্তাটি কাঁচা অবস্থায় আছে। এ রাস্তার কামারী খালের ওপর নির্মিত মন্দিরালা ব্রিজটির গোড়া ও সংযোগ রাস্তার মাটি আটকাতে স্থানীয় লোকজন দুই পাশে বাঁশের বেড়া দিয়ে মাটি দিয়েছেন। রাস্তাটি কাঁচা হওয়ায় গেল বর্ষায় দুই পাশের মাটি সরে গিয়েছিল বলে জানালেন এলাকার লোকজন।

চরিয়া গ্রামের বাসিন্দা হারিছ আলী (৬০) বলেন, ‘রাস্তাটি কাঁচা হওয়ায় আমাদের দুর্ভোগ যেন কিছুতে কমছে না। আর ব্রিজ নির্মাণের সময় মনে করেছিলাম দুর্ভোগ কিছুটা হলেও কমবে। কিন্তু দুর্ভোগ কমলো না। বর্ষায় ব্রিজের দুই সাইডের (পাশের) মাটি সরে যায়। যার কারণে গাড়ি উঠতে পারেনা। গত বছর গাড়ি উল্টেছে। আমরা কয়েকজন মিলে ব্রিজের গোড়ায় ও রাস্তার পাশে মাটি দিয়েছি।’

জাসমিন বেগম (৪৫) বলেন, ‘রাস্তাটি ব্রিজ থেকে অনেকটা নিচু। দিন দিন তা আরও নিচু হচ্ছে। যার কারণে বর্ষায় ডুবে যায়। তখন নৌকা ছাড়া চলা যায় না। বাড়িতে গাড়ি আনা-নেওয়া করা যায় না। রাস্তা ঠিক না থাকলে ছেলেমেয়েদের বিয়ে দেওয়াও কষ্ট। আমাদের দাবি রাস্তাটি দ্রæত উঁচু ও পাকা করা হোক।’

এলাকার বাসিন্দা আবু জামান (২৫) বলেন, ‘ব্রিজ থেকে রাস্তাটি নিচু। নির্মাণের পর থেকে ব্রিজের গোড়ায় মাটি কম ছিল। তার ওপর রাস্তাটিও কাঁচা। প্রতিবার বর্ষায় রাস্তাটি ডুবে যায়। তখন ব্রিজের গোড়া ও রাস্তার মাটি দেবে যায়। গাড়ি ঝুঁকি নিয়ে চলে। এতে মানুষের দুর্ভোগে পড়েন। ব্রিজের দুইপাশের সংযোগ রাস্তাটি পাকা করলে মাটি আর সরবে না।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য শামীম হোসেন বলেন, ‘এ রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি পাশের দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের অফিসবাজারের রাস্তায় গিয়ে মিলেছে। রাস্তাটি ওপর কামারী খালে ৮০ লাখ টাকার ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে পনের বছর হয়। কিন্তু রাস্তার কারণে ব্রিজটি অকেজো বলা চলে। রাস্তাটি পাকার কাজ করার জন্য হুইপ সাহেব (জাতীয় সংসদের হুইপ ও স্থানীয় সাংসদ) সুপারিশ করে দিয়েছেন। প্রায় এক বছর হয় উপজেলা প্রকৌশলী অফিসে জমা দিয়েছে।’

এ ব্যাপারে বড়লেখা উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ ভূষণ পাল বলেন, ‘রাস্তাটি এখনও পাকাকরণের উপযোগী হয়নি। কাঁচা রাস্তা পাকা করার প্রস্তাব পাঠাতে হলে কাজ করার উপযোগী কি-না তা দেখতে হয়। রাস্তাটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ মাটির কাজ দ্বারা উন্নয়ন করা প্রয়োজন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কাবিখা ও কাবিটার মাধ্যমে মাটির কাজটি সম্পন্ন করাতে পারেন। রাস্তাটি পাকাকরণের উপযোগী হলে ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৯ এপ্রিল ২০১৮/এজেএল/পিডি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন