আজ শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ইং

শ্রীমঙ্গলে পাহাড়ের নিচে ঝুঁকির জীবন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৫-২৮ ০৯:৪৬:৩৫

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের পাহাড় ঘেরা এলাকা বিষামনি। পাহাড়ের নিচে বসতবাড়ি বানিয়ে পরিবারের ১৬জন সদস্য নিয়ে বাস করছেন মনির মিয়া। বাড়ির উপরের অংশের পাহাড়ের অনেকটা অংশ কাটা। সেই জায়গায় আলগা মাটি দিয়ে লাগানো হয়েছে আনারসের চারা। বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ায় ধীরে ধীরে সেই মাটি ঝরতে শুরু করেছে। সেই দিকে লক্ষ নেই তাদের। পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকির মধ্যেও বেশ আনন্দের মাঝে জীবন কাটাচ্ছেন তারা। তবে প্রবল বষর্নে পাহাড় ধসে যেকোন সময়ই এই আনন্দ নিরানন্দে পরিনত হতে পারে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

শুধু বিষামনি এলাকার মনির মিয়া নয় পার্শ্ববর্তী রাধানগর এলাকার সুমন মিয়া পরিবারের ৬ সদস্য নিয়েও একইভাবে বসবাস করছেন। শুক্রবার সরেজমিনে উপজেলার বিষামনি ও রাধানগর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এসব চিত্র।

শ্রীমঙ্গল বিষামনী এলাকার রবিউল আলম বলেন, মনির মিয়া যেভাবে পাহাড়ের নিচে বসবাস করছ্ েযেকোন সময় পাহাড়ের মাটি ধসে বড় রকমের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাদের কে এই জায়গা থেকে সরে যাওয়ার জন্য আমরা এলাকাবাসী অনেকবার অনুরোধ জানিয়েছি। তাদের বাড়ির উপরে পাহাড়ের মাটি আলাদা হয়ে রয়েছে। এই মাটির উপরেই আনারসের চারা লাগানো হয়েছে। যদি মাটি ধসে পরে তাহলে ঘরের বাসিন্দাদের পালানোরও সুযোগ থাকবে না।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক রাধানগর গ্রামের একাধিক মানুষ জানিয়েছেন, পাহাড়ারের গা ঘেষে সুমন মিয়ার বসতবাড়িটি অনেক ঝুঁকিপূর্ন। পাহাড় থেকে খানিক দুরেও বাড়ি তৈরি করা যেত। আমরা এলাকাবাসী তাদেরকে পাহাড়ের গা ঘেসে বাড়ি না তৈরীর কথা বলায় তারা আমাদের সাথে অনেক ঝগড়া করেছেন। এখন আর আমরা তাদের সর্তক করতে যাইনা।

পাহাড় রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, এবার একটু আগ থেকেই বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। পাহাড়ের মাটি বৃষ্টির পানিতে ঝরে গিয়ে যেকোন সময় ধসে পড়তে পারে। আমরা সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে অনেকবার এই বাসিন্দাদের বুঝিয়েছি। এখন সরকারের জোরালো হস্তক্ষেপেই এই ঝুঁকিপূর্ন এলাকার বাসিন্দাদের সরানো সম্ভব হবে।

গত ৩০ বছরের ব্যবধানে শ্রীমঙ্গলে মোট ভ‚মির ৩০ ভাগ পাহাড়ই কেটে ফেলা হয়েছে। কোনো ধরনের নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে অনেকে আবার পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করছেন। নির্বিচারে পাহাড় কাটায় উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত শতাধিক পরিবার এই মুহ‚র্তে পাহাড় ধসের ঝুঁকি নিয়েই বসবাস করছেন।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোবাশ্বেরুল ইসলাম বলেন, পাহাড়ি এলাকাগুলোতে পাহাড়ের নিচে ঘরবাড়ি না বানিয়ে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৮ মে ২০১৮/এসটি/পিডি/আআ

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন