আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

মৌলভীবাজারে বন্যা পরবর্তী রাস্তাঘাটের বেহাল দশা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৬-২০ ১৮:২৪:০৫

কুলাউড়া প্রতিনিধি :: বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় মৌলভীবাজার জেলার ৪টি উপজেলার ঘর-বাড়ি, স্কুল, কলেজসহ রাস্তাঘাট এর অবস্থা খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে। টানা ৫দিন পর বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দৈন্যদশায় জনদুর্ভোগ বাড়ছে।

মনু ও ধলাই নদীর পানি নেমে যাওয়ায় প্লাবিত এলাকা দ্রুত পানি কমতে শুরু করেছে। পানি যতো কমছে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট ততই উন্মুক্ত হচ্ছে। ঘরবাড়িগুলোতে জলকাদায় যাচ্ছে-তাই অবস্থা। মানুষের নানামুখী দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বন্যার পানির স্রোতে ও পানিতে তলিয়ে থাকায় জেলার রাস্তাঘাট ও ব্রিজ-কালভার্ট ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন এগুলো মেরামত করাও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন স্থানীয়রা। আর দ্রুত এসব ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক যদি সংস্কার না হয় তবে মানুষকে পোহাতে হবে অভাবনীয় দুর্ভোগ।

সরেজমিনে কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পানি নেমে যাওয়াতে রাস্তাঘাট, ঘর-বাড়ি, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মন্দিরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষয়ক্ষতি দৃশ্যমান হচ্ছে। অনেকের বাড়ি পানিতে তলিয়ে থাকায় গুরুত্বপূর্ণ মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে শুরু করে গ্রামীণ রাস্তাঘাটে ভাঙন ও ফাটল দেখা দিয়েছে। বেশিরভাগ পাকা সড়কের পিচ উঠে গিয়ে খানাখন্দ সৃষ্টি ছাড়াও কোথাও আবার রাস্তার পাশ ভেঙে সংকীর্ণ হয়ে গেছে। স্কুল কলেজের আসবাবপত্র ও ভবনের বেশ ক্ষতি হয়েছে। ফলে বন্যা পরবর্তী সময়ে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলছে।

এদিকে জেলার বড়হাট এলাকা দিয়ে শহর প্রতিরক্ষা বাধ ভেঙে পৌর শহরের তিনটি ওয়ার্ড প্লাবিত হওয়ায় মৌলভীবাজার-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের যান চলাচল বন্ধ ছিলো। যা এখন স্বাভাবিক হয়ে আসছে। রাস্তায় এখনো পানি থাকলেও দ্রুত তা নেমে যাচ্ছে। পানি কমে যাওয়াতে বাধটি স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামত কাজ শুরু করেছে স্থানীয়রা।

রাজনগর উপজেলার কদমহাটা নামক স্থানে মনু নদের বাধ ভেঙে সিলেটসহ জেলার চারটি উপজেলার সঙ্গে জেলা শহরের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকলেও তা এখন অনেকটা স্বাভাবিক। পানি নেমে যাওয়ায় ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল করলেও বন্যার পানির স্রোতে ওই সড়কটির মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সেনাবাহিনীর সিলেট সেনানিবাসের ২১ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটেলিয়নের সদস্যরা মেজর মুহাইমিন বিল্লাহ’র নেতৃত্বে সড়কটিকে যান চলাচলের উপযোগী করতে কাজ করে যাচ্ছেন।

জেলা প্রশাসনের তথ্য সূত্রে, মনু ও ধলাই নদীর ২৫টি স্থানে প্রতিরক্ষা বাধ ভেঙে জেলার কুলাউড়া, কমলগঞ্জ, রাজনগর ও সদর উপজেলার প্রায় ৩০টি ইউনিয়নসহ মৌলভীবাজার পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৫ হাজার পরিবারের প্রায় দুই লাখ ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের মধ্যে সরকারী, সামাজিক ও রাজনৈতিক বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

গত তিন দশকের মধ্যে ভয়াবহ পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট এই বন্যার পানিতে ইতিমধ্যে নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী এদের মধ্যে শুধু কমলগঞ্জ উপজেলায় পাঁচজন, কুলাউড়া উপজেলায় দুইজন, রাজনগরে একজন ও সদর উপজেলায় একজনের মৃত্যু হয়। বন্যায় প্লাবিত হয়েছে ২হাজার ৯শত ৬০ হেক্টর আউশ ধান বিনষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি অধিদপ্তর।

রাস্তাঘাটের বেহাল দশা সংস্কারের ব্যাপারে সওজের মৌলভীবাজার নির্বাহী প্রকৌশলী মিন্টু রঞ্জন দেবনাথ বলেন, মৌলভীবাজার শহরের কদমহাটাসহ জেলার ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলো চিহিৃত করে আমরা তলিকা করছি। সেগুলো উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবো। যত দ্রুত সম্ভব আমরা ওই সড়কগুলো সংস্কার বা মেরামত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/২০ জুন ২০১৮/এসএ/এসডি

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন