আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং
নিজস্ব প্রতিবেদক :: পবিত্র ঈদুল ফিতরের রাতে নগরীর শিবগঞ্জ এলাকায় সিগারেট খেতে বাধা দেয়ার কারণে খুন করা হয় স্কুল ছাত্র মশিউর রহমান তাসিনকে। আদালতের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এমন তথ্যই জানিয়েছে হত্যাকান্ডে জড়িত ৪ কিশোর। এর আগে বুধবার দিনভর শাহপরাণ থানা পুলিশের পৃথক পৃথক অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়। জৈন্তাপুর থেকে তিনজনকে ও জিন্দাবাজার থেকে অপরজনকে গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার তাদেরকে আদালতে নেয়া হলে তারা হত্যাকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে। কি কারণে এবং কিভাবে তাসিনকে খুন করা হয় সেসব বিষয় উঠে আসে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে।
পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে গ্রেফতার হওয়া কিশোররা আদালতের কাছে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানিয়েছে, ঈদুল ফিতরের রাতে শিবগঞ্জ সাদিপুর রাস্তার মুখে হেয়ার গেইম সেলুনের সামনে মশিউর রহমান তাসিন তার বন্ধু রাফাত আহমেদ সানি, ফাহিম, মিনহাজ, রাহী, রায়হান এবং এলাকার বড় ভাই সুমন ও সাক্কুসহ ঈদ উপলক্ষে আড্ডা দিচ্ছিল। তখন নাইমুর রহমান রাব্বি (১৮), নিহাদ আহমদ উরফে লিহাদ আহমদ (১৮), মোঃ রফিক (১৮) ও মোঃ রাহি (২০) হেয়ার গেইম সেলুনের পাশের পান দোকান থেকে সিগারেট নেয়। সেসময় দোকানের সামনেই তারা ধূমপান করতে থাকে। বিষয়টিকে বেয়াদবী হয়েছে ভেবে মশিউর রহমান তাসিনসহ তার বন্ধুরা বাঁধা দেয়। কিন্তু আসামীগণ ও অন্যরা তাসিন ও তার বন্ধুদের বাঁধা না শুনে বিদ্রুপাত্মক আচরণ করে।
এতে মশিউর রহমান তাসিন ও তার বন্ধুরা অভিযুক্ত রবিন ও তার সহযোগীদের মারধর করে চড়-থাপ্পড় মেরে বিদায় করে দেয়। এর প্রতিশোধ নিতে গ্রেফতার হওয়া ৪ কিশোর ও তাদের সহযোগিরা স্থানীয় একটি ফার্মেসীর সামনে চায়ের দোকানে উৎ পেতে থাকে।
শিবগঞ্জ সাদীপুর রাস্তার মুখের আড্ডা শেষে ভিকটিম মশিউর রহমান তাসিন তার বন্ধু ফাহিম ও রাফাত আহমদ সানিসহ হেটে হেটে রাত ১০ টার দিকে সোনারপাড়াস্থ বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে ফার্মেসীর উল্টো পার্শ্বে বাইতুল জান্নাত জামে মসজিদের সংলগ্ন পৌছায়। সেখানে পূর্ব থেকে উৎ পেতে থাকা রাব্বি , নিহাদ , মোঃ রফিক ও মোঃ রাহি ও তাদের সহযোগির আসামীরা ভিকটিম মশিউর রহমান তাসিনের পথ আগলে দাঁড়ায়। তারা তার গালে, গলায় এবং উরুতে ছুরিকাঘাত করে চলে যায়।
মশিউর রহমান তাসিনকে তার বন্ধু রাফাত আহমদ সানি ও ফাহিম সিএনজি অটোরিকশাতে করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার ভিকটিম মশিউর রহমান তাসিনকে মৃত ঘোষণা করেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীদের বৃহস্পতিবার আদালতে প্রেরণ করা হয়। এদের মধ্যে আসামী মোঃ রফিক(১৮) ও মোঃ রাহি(২০) দ্বয় উক্ত ঘটনায় নিজেদের জড়িত করে অন্যান্য আসামীদের নাম প্রকাশ করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ২২ জুন ২০১৮/ এমইউএ