আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

সিলেটে ৪০২ রানের ম্যাচে ভাইকিংসদের জয়

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০১-১৯ ২২:২৪:৩৮

রফিকুল ইসলাম কামাল, স্টেডিয়াম থেকে :: জিততে হলে করতে হবে রান তাড়ার রেকর্ড। এরকম অবস্থায় শুরুটা হওয়ার কথা উড়ন্ত। কিন্তু হলো উল্টোটা! শুরুর এই ‘পড়ন্ত’ ব্যাটিংই শেষপর্যন্ত কাল হলো খুলনা টাইটানসের জন্য। মাহমুদউল্লাহর দুর্দান্ত ফিফটি, ব্রেন্ডন টেইলর, ডেভিড ভিসের ঝড়ো ইনিংসে লড়াইয়ের পরও তাই পরাজিতদের কাতারে থাকতে হচ্ছে খুলনাকে।

চিটাগং ভাইকিংসের ২১৪ রান তাড়া করতে গিয়ে খুলনার ইনিংস শেষ হয়েছে ৮ উইকেটে ১৮৮ রানে। দু’দল মিলে ৪০২ রান তোলার ম্যাচে চিটাগংয়ের জয় ২৬ রানে। ষষ্ঠ ম্যাচে এটি তাদের পঞ্চম জয়। বিপরীতে অষ্টম ম্যাচে টাইটানসদের সপ্তম পরাজয় এটি।

২০১৩ বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের ১৯৭ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড সিলেট রয়্যালসের। আজ খুলনাকে জিততে হলে তাই নতুন করেই লিখতে হতো রান তাড়ার রেকর্ড।

বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই পথ হারায় খুলনা। স্কোরবোর্ডে ১৮ রান ওঠতেই ফিরে যান পল স্টার্লিং (০), জুনায়েদ সিদ্দিকী (১২) ও আল আমিন (৫)। এরপর ঘুরে দাঁড়ানের চেষ্টা করে খুলনা। ব্রেন্ডন টেইলরকে সাথে নিয়ে ৩৬ বলে ৬৮ রানের দারুণ পার্টনারশিপ গড়েন মাহমুদউল্লাহ। জুটি ভাঙে টেইলরের বিদায়ে, ১৬ বলে দুটি করে চার-ছয়ে ২৮ রানে বিদায় নেন এই জিম্বাবুয়াইন।

মাহমুদউল্লহার ব্যাটে ছিল ঝড়। ক্যামেরন ডেলপোর্টের বলে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে ফিরেন খুলনার অধিনায়ক। ২৬ বলে ৩টি চার, ৪টি ছয়ে ৫০ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

এরপর আরিফুল হক (১১) দ্রুতই সাজঘরের পথ ধরেন। ১০৯ রানে ৬ উইকেট হারানো খুলনাকে তবু আশা দেখান ডেভিড ভিসে ও তাইজুল ইসলাম। ২৮ বলেই এ জুটি তুলে নেয় ৫০ রান। তাদের ৩৫ বলে ৬৫ রানের পার্টনারশিপ শেষ হয় ভিসের বিদায়ে। খালেদের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরা ভিসে ২০ বলে ২টি চার আর ৪টি ছয়ে করেন ৪০ রান। ২১ বলে ২২ করে অপরাজিত ছিলেন তাইজুল।

সিলেটের চেলে আবু জায়েদ রাহী আর সৈয়দ খালেদ আহমদ খারাপ করেননি বোলিংয়ে। খালেদ ৪ ওভারে ২৯ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। রাহী ৪ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেছেন।

ম্যাচের টস জিতেছিলেন মাহমুদউল্লাহ, ব্যাটিংয়ে পাঠান চিটাগংকে। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ৪ উইকেট হারিয়ে ২১৪ রানের বিশাল স্কোর গড়ে চিটাগং ভাইকিংস। বিপিএলের ইতিহাসে এই স্কোর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২০১৩ সালে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের করা ৪ উইকেটে ২১৭ এখনও সর্বোচ্চ সংগ্রহের তালিকায় প্রথম।

বিপিএলের ঢাকা পর্বে বড় স্কোরিং ম্যাচের জন্য হায়-হুতাশ ছিল। সিলেট পর্বে এসে দেখা দিল রানের বন্যা। আজ শনিবার দিনের প্রথম ম্যাচে সিলেট সিক্সার্স করেছিল ১৯৪ রান। পরে ১৯৫ রান করে জয় পায় রংপুর রাইডাস। এবারের আসরে যা ছিল সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। তবে কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে চিটাগং ভাইকিংসের ব্যাটিং তা-বে তাও পেছনে পড়ে গেছে।

চিটাগং ভাইকিংসের দলীয় প্রথম পঞ্চাশ আসে ৩৩ বলে। পরের পঞ্চাশ ৩৫ বলে। একশ’ থেকে দেড়শ’ রানে যেতে ভাইকিংসদের লাগে ২৬ বল। আর পরের পঞ্চাশে তারা পা রাখে আরো দ্রুত, মাত্র ২৩ বলে।

ইনিংসের চতুর্থ ওভারে শরীফুল ইসলামের বলে ডেভিড ভিসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ক্যামেরন ডেলপোর্ট (১৩) ফিরে যান। কিন্তু পরের গল্পটুকু খুলনার বোলারদের জন্য শুধুই হতাশার।

দলীয় ৫৬ রানে মোহাম্মদ শেহজাদ তাইজুলের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। তবে যাওয়ার আগে ৩টি করে ছয়-চারে ১৭ বলে ৩৩ রানের ঝড়ো ইনিংস আসে শেহজাদের ব্যাট থেকে। উইকেটের জন্য এরপর খুলনাকে দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয়। ইয়াসির আর মুশফিক মিলে তুলোধুনো করতে থাকেন খুলনার বোলারদের। এ দুজনের ৫০ বলের জুটিতে রান ওঠে ৮৩। ৩৬ বলে ৫টি চার, ৩টি ছয়ে ৫৪ রান করে ভিসের বলে টেইলরের হাতে ক্যাচ দেন ইয়াসির। খানিক পরে বিদায় নেন মুশফিক। যাওয়ার আগে ৩৩ বলে ৮টি চার, একটি ছয়ে ৫২ রান তুলেন ভাইকিংস অধিনায়ক।

তাদের বিদায়ে খুলনা শিবিরে স্বস্তির বদলে যেন আরো আতঙ্ক ফিরে আসে! উইকেটে এসেই চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছুটাতে থাকেন দাসুন শানাকা ও নাজিবুল্লাহ জাদরান। তাদের জুটিতে মাত্র ১৪ বলে ৪৪ রান তুলে চিটাগং। তন্মধ্যে শুভাশিষের করা শেষ ওভারেই আসে ২৩ রান।

১৭ বলে ৩টি চার আর ৪টি ছয়ে ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন শানাকা। অপরপ্রান্তে ৫ বলে ২টি চার, কেটি ছয়ে ১৭ করেন জাদরান।

মালিঙ্গা, তাইজুল, শরীফুল, মাহমুদউল্লাহ, শুভাশীষ রায় কারো রক্ষা মিলেনি চিটাগং ভাইকিংসের ব্যাটসম্যানদের মার খাওয়া থেকে। তবে ঝড়টা সবচেয়ে বেশি গেছে শরীফুল ইসলামের ওপর দিয়ে, ৩ ওভারে দেন ৪৭ রান। ৪ ওভারে তাইজুল ৪৫ রান, ৪ ওভারে মালিঙ্গা ৪৪ রান, ৪ ওভারে শুভাশিষ রায় দেন ৩৮ রান। রানবন্যার মধ্যে উজ্জ্বল ছিলেন ডেভিড ভিসে, ৪ ওভারে ২৬ রানে নেন ২ উইকেট।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৯ জানুয়ারি ২০১৯/আরআই-কে

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন