আজ শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ইং

যেখানে বৃষ্টি হলে ঝরে পড়ে লোহার টুকরা!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৩-১৫ ০৯:৫৯:০৭

সিলেটভিউ ডেস্ক :: বৃষ্টি হলে পানি পড়বে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বৃষ্টিতে পানি না পড়ে লোহার টুকরা পড়লে কেমন হবে?

শুনে কল্পবিজ্ঞান মনে হচ্ছে? তাহলে বলি, এটা মোটেই কল্পনার কথা নয়। আমাদের সৌরজগতের বাইরে অনন্ত মহাকাশের কোনও এক প্রান্তে এক গ্রহ চোখে পড়েছে বিজ্ঞানীদের। তাকে ভালভাবে চিনতে গিয়েই চমকে উঠলেন তারা। দেখলেন, অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রা সম্পন্ন গ্রহে লোহার বৃষ্টি হয়। চিলিতে ইউরোপিয়ান অবজারভেটরির পক্ষ থেকে অত্যাধুনিক টেলিস্কোপ পেতে এর খুঁটিনাটি জানতে মরিয়া বিজ্ঞানী মহল।

গ্রহের নাম Wasp-76b। পৃথিবী থেকে তার দূরত্ব অন্তত ৬৪০ আলোকবর্ষ। নিকটবর্তী নক্ষত্রের সবচেয়ে কাছে থাকায় অত্যন্ত তপ্ত এই গ্রহ। দিনের তাপমাত্রা ২৪০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের কাছাকাছি থাকে। আর রাতে এক হাজার ডিগ্রি। যা কিনা লোহা গলন এবং জমাট বাঁধার জন্য আদর্শ।

জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডক্টর ডেভিড এরেনরিখের কথায়, “ভাবুন তো, পানির ফোটার বদলে এখানে বৃষ্টিতে টুকরো টুকরো লৌহকণা ঝরে পড়ে!” তার নেতৃত্বেই Wasp-76b গ্রহ নিয়ে গবেষণা চলছে। অত্যাধুনিক এসপ্রেসো স্পেকট্রোমিটারে ধরা পড়েছে, এই গ্রহের নিরক্ষীয় অঞ্চলের উচ্চ তাপমাত্রার জন্য এখানে লোহাও বাষ্পীভূত হয়ে যায়। রাতের বেলার তাপমাত্রা আবার এতটাই নেমে যায় যে লোহা আবার জমে যায়। ঠিক যেভাবে জলকণা বাষ্পীভূত হয়ে মেঘ হয়ে বৃষ্টি আকারে নেমে আসে, সেরকমই হয় এখানে। তবে এখানে তফাৎ শুধু বৃষ্টির উপাদানে।

এ নিয়ে গবেষক ডক্টর ডেভিড এরেনরিখের ব্যাখ্যা, “আমরা দেখেছি, রাতে প্রায় ১০০০-১৪০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় লোহা মেঘের আকারে জমতে থাকে। তারপর বৃষ্টি আকারে ঝরে পড়ে। সেইসঙ্গে প্রবল হাওয়া থাকে, ঘণ্টায় ১৮ হাজার কিলোমিটার বেগে। এবার বায়ুমণ্ডলের ঠিক কোন স্তরে মেঘ ঘনীভূত হয়, তা আমাদের টেলিস্কোপে ধরা পড়েনি।”

বছর চার আগে Wasp-76b গ্রহ আবিষ্কৃত হয়েছে। এর গঠন এবং আকার দেখে ‘দৈত্য গ্রহ’ বলে উপাধি দেওয়া হয়েছিল। গ্রহটি বৃহস্পতির চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ চওড়া। তখনও বিজ্ঞানীরা এর রাসায়নিক গঠন বুঝতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। নতুন করে তা নিয়ে ফের পড়াশোনা শুরু করেছেন ডক্টর ডেভিড এরেনরিখ ও তার সঙ্গীরা।

তিনি বলছেন, “আমরা শক্তিশালী টেলিস্কোপ বা থ্রি ডি ছবিতে এমন কিছু দেখতে পাই, যা সাধারণ মানুষকে দেখাতে পারি না। তাই তারা অনেক সময় ভুল বোঝেন। তাই যতটা সহজভাবে সম্ভব আমরা প্রতিবেদনে নতুন আবিষ্কার সম্পর্কে তথ্য রাখি। এই গ্রহটি সম্পর্কেও আমরা লেখালেখি করতে গিয়ে বুঝেছি, লৌহবৃষ্টিই এর সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয়।”

লোহাসমৃদ্ধ Wasp-76b গ্রহ সম্পর্কে জানার পর অনেকেই বলছেন, ভাগ্যিস ওর কাছাকাছি পৌঁছনো যাবে না। নইলে হয়ত লোহা সংগ্রহের হিড়িক পড়ে যেত ব্যবসায়ী মহলে! সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন

সৌজন্যে : বিডি প্রতিদিন

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৫ মার্চ ২০২০/মিআচৌ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন