আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

নবীগঞ্জে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নেই কোন আমেজ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৩-০৯ ০০:১৩:১৬

এস এম আমীর হামজা, নবীগঞ্জ :: আগামী ১০ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এই প্রথম দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অথচ কোথাও নেই তেমন কোনো নির্বাচনী আমেজ। নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের তেমন কোনো আগ্রহ নেই।

নবীগঞ্জ পৌর এলাকা ও বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, কিছু পোস্ট সাটানো, নবীগঞ্জ-শেরপুর সড়কে একজন প্রার্থীর প্রচারনার মাইকিং করা হচ্ছে। নির্বাচনের আর মাত্র দুই দিন বাকি আছে। নির্বাচন আসলেই ব্যানার, পোস্টারে ছোঁয়ে যায় পুরো নির্বাচনী এলাকা। গনসংযোগ, মিছিল, মিটিং থাকে সব সময়ই। আর ভোটরাদের মধ্যে দেখা দেয় ব্যাপক আগ্রহ-উদ্দীপনা।

এলাকার চায়ের দোকানগুলো জমজমাট থাকে নির্বাচনী আলোচনায়। মাইকিংয়ের আওয়াজ আর ভোটাদের বাড়ি প্রার্থীদের পদচারণায় মূখর হয়ে উঠে। কিন্তু এবারের নির্বাচনে এসবের একেবারে উল্টো চিত্র।

নবীগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকজন ভোটারদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, কবে নির্বাচন এই তথ্যই তাঁরা জানেন না। জানার আগ্রহও নেই তাদের। উপজেলা নির্বাচনে বিএনপিসহ বিরোধী জোট অংশ না নেওয়া, সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা, ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে না পাড়ার শঙ্কাসহ নানা কারণে এবার উপজেলা নির্বাচন নিয়ে তাদের তেমন কোনো আগ্রহ নেই।

এদিকে ভোটাদের নির্বাচনে আগ্রহ কমে যাওয়ার বিপাকে পড়েছেন প্রার্থীরাও। কি পরিমান ভোটার ভোট কেন্দ্রে হাজির হবেন এই নিয়েও শঙ্কায় তাঁরা। ফলে আগের নির্বাচনগুলোর মতো এই নির্বাচনে প্রচার প্রচারণার জমজমাট ভাবও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ভোটারদের আগ্রহ কমে যাওয়া নিয়ে একেক প্রার্থী একেকধরণের মত দিয়েছেন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মাঠে না থাকা, বিএনপির নির্বাচনে অংশ না নেওয়া ও যোগ্য প্রার্থীকে প্রতীক না দেওয়ার কারনেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন বেশিরভাগ প্রার্থী।

নবীগঞ্জ আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে আছেন ৫ জন। জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আলমগীর হুসেন চৌধুরী (নৌকা), উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম (ঘোড়া), উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাদী গাজী'র স্ত্রী গাজী খালেদা সারওয়ার (দোয়াত কলম), সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাই ( কাপ-পিরিচ), জাতীয় পার্টি মনোনিত প্রার্থী হায়দর মিয়া (লাঙ্গল), ইসলামী ঐক্যজোট মাওলানা আবু ছালেহ (মিনার)।

ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে রয়েছেন ৬ জন। উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী ওবায়দুল কাদের হেলাল (টিউবওয়েল), উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গতি গোবিন্দ দাশ (তালা), উপজেলা জাপার আহ্বায়ক ডাঃ শাহ আবুল খায়ের (উড়ো জাহাজ), জাতীয় পাটির মনোনীত প্রার্থী মুরাদ আহমদ (লাঙ্গল), আওয়ামী লীগ নেতা আবু ইউসুফ (চশমা), ইসলামী ঐক্যজোটের মনোনীত প্রার্থী মোস্তাক আহমদ ফারকানী (মিনার)।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা বেগম (হাঁস), উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছইফা রহমান কাকুলি (ফুটবল), স্বতন্ত্র প্রার্থী সাজেদা মজিদ (কলস)।

উপজেলার ইনাতগঞ্জ বাজার এলাকার ভোটার ব্যবসায়ী সুজন মিয়া বলেন, ‘ভোটের কোনো হাওয়া নাই এলাকায়। প্রার্থীদেরও তেমন নড়াচড়া নাই। কয়েকটা পোস্টার ঝুলানো আছে দেখছি। তবে নির্বাচন কবে জানি না।

ভোটার আবুল কাশেম জানান, আমার ভোট কি আমি দিতে পারব না, না আর কেউ আমার টা দিয়ে রেখে দেবেন?  দেশের টাকা খরচ করে যেহেতু নির্বাচন দেওয়া হয়, তাহলে জনগন যাতে তার নিজের ভোট নিজে দিতে পারে সরকারের কাছে এই দাবি জানাই।

১৩ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত নবীগঞ্জ উপজেলা। এই উপজেলায় পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৮৩০ জন, মহিলা ভোটারের সংখ্যা ১ লক্ষ ২০ হাজার ৩৭৩ জন ভোটার রয়েছেন।

নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সহকারী রির্টানিং অফিসার আতাউল গনী ওসমানী জানান, প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে মোবাইল টিম কাজ করবে। এবারের নির্বাচন  সম্পূর্ণ অবাদ, সুষ্ট ও নিরপেক্ষ হবে এটা নিশ্চিত দিয়ে বলতে পারি।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/০৯ মার্চ ২০১৯/এসএমএএইচ/এসডি

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন