আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

হবিগঞ্জে ১০০ টাকায় সন্তানের চাকরি, কাঁদলেন দরিদ্র মা-বাবা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৭-০৮ ০০:৪৪:৪৪

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :: কারো বাবা কৃষক, কারো শ্রমিক, আবার কারো আইসক্রীম কিংবা কলা বিক্রেতা, রয়েছেন মিস্ত্রীও। শুধু তাই নয়, কারো মা বিধবা, আবার কারও মা কাজ করেন অন্যের বাড়িতে। অনেক কষ্ট করে নিজের ছেলে-মেয়েকে লেখা-পড়া করিয়েছেন। কিন্তু হতাশ হয়েছিলেন সন্তানের চাকরি পাওয়া নিয়ে।

অবশেষে হতাশা কাটিয়ে তাদের আলো দেখালেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা। মাত্র একশ’ টাকা খরচ করে ৯৭ জন অসহায় পরিবারের সন্তানকে পুলিশে চাকরি দিলেন তিনি। এতে একদিকে যেমন চাকরি পাওয়া পরিবারগুলো খুশি হয়েছেন তেমনি অন্যদিকে পুলিশের চাকরিতে স্বচ্ছতা ফেরায় খুশি সাধারণ মানুষও। সেই সাথে জেলাবাসী ধন্যবাদ জানিয়েছেন পুলিশ সুপারসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের।

রোববার (৭ জুলাই) বিকেলে ধুলিয়াখালে অবস্থিত হবিগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা। এ সময় চাকরি পাওয়া ছেলে-মেয়েদের মা-বাবারা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা নিজেদের ছেলে মেয়েকে শত দরিদ্রতার মধ্যে ভেড়ে উঠার গল্প ও স্বপ্নের কথা শোনান।

জানা যায়, গত ১ জুলাই থেকে ধাপে ধাপে পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। পুলিশের চাকরিকে শতভাগ স্বচ্ছ করতে নেয়া হয় বিশেষ ব্যবস্থা। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ২ জন পর্যবেক্ষক, সিলেট ও সুনামগঞ্জ থেকে ২ জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের সমন্বয়ে গঠিত নিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে শ্রম, ধৈয্য ও মেধার অধিকারী প্রার্থীদের মনোনীত করা হয়। পরে সেখান থেকে ৯৭ জন ছেলে-মেয়েকে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল হিসেবে প্রাথমিকভাবে মনোনীত করা হয়।

কোন ধরণের উৎকোচ ছাড়া চাকরি পাওয়ায় খুশি হতদ্ররিত পরিবারের চাকরি পাওয়া প্রার্থীরা। তারা ও তাদের মা বাবারা এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন। জানান ছেলে মেয়েকে মানুষ করার গল্প।

চাকরি পাওয়া প্রত্যেকেই অনেক কষ্ঠ করে লেখা পড়া করেছেন। কারও কারও মা-বাবা শ্রমিকের কাজ করে সন্তানকে মানুষ করেছেন। আবার কেউ নিজেই টিউশনি করে বা শ্রমিকের কাজ করে টাকা উপার্জন করে নিজে লেখাপড়া করেছেন।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বলেন- ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ইন্সপেক্টর জেনারেল, ডিআইজি মহোদয়সহ আমার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রেরণায় আমি মাত্র একশ’ টাকা খরচের মাধ্যমে একদম অসহায় পরিবারের ছেলে-মেয়েদের চাকরি দিতে পেরেছি। আমি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। আশা করি সব ধরণের চাকরিতে এভাবে স্বচ্ছতা ফিরে আসবে।’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/০৮ জুলাই ২০১৯/কেএস/ডিজেএস

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন