আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

‘চিকিৎসকরা কিছুতেই দায় এড়াতে পারেন না’

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৩-৩১ ১৬:০১:৫১

মো. মইনুল হাসান টিটু :: ধরেন, আপনার দেশকে কোনো পরাশক্তি আক্রমণ করলো, এখন স্বশস্ত্র বাহিনী বললো, আমার কাছে, আধুনিক অস্ত্র নেই, পারমানবিক বোমা নেই, আমরা যুদ্ধে জিততে পারবো না সুতরাং যুদ্ধ করবো না, তাহলে দেশের অবস্থাটা কি হবে? দেশের কেউ কি রক্ষা পাবেন বা স্বশস্ত্র বাহিনী কি রক্ষা পাবে? এই পরিস্থিতিতে যাই আছে তা নিয়েই প্রতিহত করতে হবে বা করবে আমাদের স্বশস্ত্র বাহিনী।

এমনেই এক যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছি আমরা। বরং এই যুদ্ধ পারমাণবিক যুদ্ধ থেকেও ভয়ংকর, আর এই যুদ্ধে স্বশস্ত্র বাহিনী হচ্ছে চিকিৎসকরা। এখন উনারা (চিকিৎসকরা) যদি, আমাদের পিপিই নেই, এই নেই, সেই নেই বলে যুদ্ধ থেকে অর্থাৎ রোগী দেখা থেকে দূরে সরে থাকেন বা পিপিই আসবে সেই অপেক্ষায় থাকেন তাহলে কি পরিস্থিতি তৈরী হবে ভেবে দেখেছেন? আপনারা চিকিৎসকরা এই যুদ্ধ থেকে রক্ষা পাবেন? অবশ্যই না, আপনারাও মরবেন, দেশের মানুষকেও মারবেন। সুতরাং ভালো করে ভাবুন।

আরেকটু বুঝিয়ে বলি, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের কথা মনে পড়ে আপনাদের? সেই ভাষণে তিনি বলেছিলেন,“যার যা কিছু আছে তা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়”। আজ যদি বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু’র সেই কথা না শুনে ঝাঁপিয়ে না পড়তো আর বড় বড় ভারী অস্ত্রের জন্য বসে থ্কাতো, তাহলে কি আজ স্বাধীন বাংলাদেশের চিকিৎসক হতে পারতেন আপনারা? হয়তো বা চিকিৎসক হওয়ার যোগ্যতাই অর্জন করতে পারতেন না বা চিকিৎসক হওয়ার জন্য কোথাও ভর্তি হওয়ার সুযোগেই পেতেন না।
সেইতো গেলো মানবিক দিক, এবার আসি আইনের দিকে(যদি আমার ভুল না হয়ে থাকে), আইন অনুযায়ী স্বশস্ত্র বাহিনী দেশ রক্ষার্থে যুদ্ধ করতে বাধ্য, যদি স্বশস্ত্র বাহিনীর কোনো সদস্য যুদ্ধ করতে বা যুদ্ধে লিপ্ত হতে অস্বীকৃতি জানায় তাহলে হয় থাকে মেরে ফেলা হয় আর না হয় অভ্যন্তরীণ কোর্ট মার্শালে তার বিচার করা হয়। সরকারী চিকিৎসকরাও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী।

সেই হিসাবে একজন চিকিৎসক রোগীদেরকে চিকিৎসা করতে বাধ্য।

দেশ সৃষ্টির পর থেকেই তো আপনারা সরকারী হাসপাতাল রেখে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করে আসছেন, অন্যায় জেনেও আমরা সাধারণ জনগণ কিচ্ছুটি বলিনি। মূখ বুঝে ধৈর্য্য ধরেছি। এবার সময় এসেছে হিসাব নেয়ার।

প্লীজ, দয়া করে এই মহা বিপদে সঠিক দ্বায়িত্ব পালনের মাধ্যমে আমাদেরকে আপনাদের দ্বায়িত্বের হিসাব দিন। আর না হয় এই মহৎ পেশাটি ছেড়ে দিয়ে ত্রিশ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে অর্জন করা এই স্বাধীন দেশ থেকে চুপিচুপি চলে যান।

পরিশেষে এটাও বলবো, সরকারেরও উচিৎ চিকিৎসকদের ব্যাক্তিগত নিরাপত্তা দেয়া। তাই চিকিৎসা বন্ধ করে নয়, চিকিৎসার পাশাপাশি আপনাদের নিরাপত্তার দাবী সরকারের কাছে উত্থাপন করুন। আশাকরি সরকার দ্রুত চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন এবং করার সর্বাত্তক চেষ্ঠা চালাবেন।


লেখক: সাংবাদিক, সিলেট প্রতিনিধি, বৈশাখী টেলিভিশন।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন