আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

দিরাইয়ে তুহিন হত্যা, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় পরিবারের ৬সদস্য

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-১০-১৪ ১৯:১৮:১৫

দিরাই প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে রাতের আধারে ঘর থেকে তুলে নিয়ে তুহিন নামক ৫ বছরের শিশুকে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। ঘাতকরা তার লাশটি রাস্তার পাশের একটি গাছের সাথে ঝুলিয়ে রেখে লিঙ্গ কেটে নিয়ে যায় । এছাড়া শিশুটির দুটি কান কেটে একটি রাস্তায় ফেলে গেছে।

 রোববার দিবাগত রাতে উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের কাজাউড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সে গ্রামের আব্দুল বাছিরের ছেলে। ন্যাক্কারজনক এ ঘটনা জানাজানি হলে নিহতের বাড়ীতে এলাকার হাজার হাজার  লোকজন ভিড় জমায়। এমন ঘটনায় হতবাক সাধারণ মানুষ।

খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থল জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, সিআইড ও ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের পিতা আব্দুল বাছির, ও তার তিন চাচা মাওলানা আব্দুল মোছাব্বির, জমসেদ মিয়া, নাছির, জাকিরুল , চাচী খয়রুন বেগম, এবং চাচাতো বোন তানিয়াকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।


 নিহত তুহিনের বাবা আব্দুল বাছির জানান, পনের দিন পুর্বে তার এক কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহণ করেছে। রোববার দিবাগত রাতে খাবার খেয়ে নিহত তুহিন ও তার ছোট ভাইকে নিয়ে ঘরের সামনের  কক্ষে ও নবজাতককে নিয়ে মা পেছনের  কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত দেড়টার দিকে ঘুম ভাঙ্গলে  ঘরের বাহিরে গিয়ে পশ্রাব করে এসে নিহত তুহিনের উপর কাথা দিয়ে ডেকে দিয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়েন তুহিনের বাবা। রাত সাড়ে তিনটার দিকে তার ভাতিজির হঠাৎ ঘুম ভাঙ্গলে দেখতে পান সামনের দরজা খোলা, দরজা খোলা কেন জানতে চেয়ে পাশের রোমে চাচা (নিহত তুহিনের বাবা) কে ডাকেন।

এসময় পরিবারের লোকজন উঠে দেখতে পান তুহিন ঘরে নেই। পরে বাড়ী থেকে সামান্য দূরে নতুন মসজিদের পাশে ঝুপের মধ্যে গাছের সাথে ঝুলন্ত অবস্তায় দেখা যায় তুহিনের লাশ। তিনি বলেন, গ্রামে একসময় দ্বন্দ্ব ছিলো, এখন কারো সাথে আমাদের কোন বিরোধ নেই। কাউকে সন্দেহ করেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, আমি যা দেখিনি তা কিভাবে বলবো বলেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। সদ্য সন্তান প্রসবকরা মাকে জানানো হয়েছে ছেলের মৃত্যুর কথা, নাড়ী ছেড়াধনের এমন মৃত্যুর খবরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি, কোন কথা বলতে পারছেননা, বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন।

সরেজমিন  গিয়ে দেখা যায়, কেজাউড়া পশ্চিম পাড়া জামে মসজিদ সংলগ্ন রাস্তা রক্তে লাল হয়ে আছে। এর পাশেই ঝুপের মধ্যে একটি গাছে তুহিনের লাশ ঝুলে আছে। জমাটবাঁধা রক্তের স্তুপের পাশে তুহিনের একটি কাটা কান পড়ে আছে। লিঙ্গ ও একটি কান কেটে নিয়ে গেছে ঘাতকরা। তার পেটে বিদ্ধ দুটি ছুরা লাগানো রয়েছে। ছুরা দুটিতে গ্রামের সুলেমান ও সালাতুলের নাম রয়েছে, যাদের সাথে  নিহত তুহিনের পরিবারের দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসী। ধারণা করা হচ্ছে ঘাতকরা ঘুমন্ত অবস্থায় তুহিনকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে রাস্তায় জবাই করে হত্যা করে। এরপর কান ও লিঙ্গ কেটে লাশটি গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। এলাকাবাসী জানান, গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন সঙ্গে নিহত তুহিনের পরিবারের বিরোধ চলে আসছে।

পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শণকালে উপস্থিত গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনার অনেক ক্লু পাওয়া গেছে, তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলা যাচ্ছেনা। এদিকে দিরাই থানা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুহিনের বাবা, ৪ চাচা, এক চাচি ও এক চাচাতো বোনকে থানায় নিয়ে এসেছে। ময়না তদন্তের জন্য লাশটি সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৪ অক্টোবর ২০১৯/ হিল্লুল/জেএসি

 

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন

সাম্প্রতিক সুনামগঞ্জ খবর

  •   জগন্নাথপুরের মোশাহিদের স্বপ্ন ঝড়ল ফ্রান্সের সড়কে
  •   তাহিরপুরে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
  •   দিরাইয়ে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা জাতীয় ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন
  •   দক্ষিণ সুনামগঞ্জে এসএসসি ১৪ ব্যাচের মিলনমেলা
  •   দোয়ারাবাজারে ৩শ’ টাকার জন্য সংঘর্ষে আহত ব্যক্তির মৃত্যু, আটক ২
  •   সুনামগঞ্জে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যুবক খুন
  •   দক্ষিণ সুনামগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট'র উদ্বোধন করলেন পরিকল্পনামন্ত্রী
  •   ছাতকে ভাবির সাথে দেবরের পরকিয়া, ভাতিজা খুন
  •   দোয়ারাবাজারে হামলায় সম্ভাব্য ইউপি সদস্য প্রার্থী আহত, উত্তেজনা
  •   গ্রামে এসে নৌকা নিয়ে ঘুরলেন পরিকল্পনামন্ত্রী