আজ মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩ ইং

লকডাউন উঠে গেলে আমাদের করণীয় কী?

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২১-০৪-২৩ ১৬:২৫:৫২

অধ্যাপক মিরজাদা সেবরিনা ফ্লোরা :: লকডাউন উঠে যাবে হয়ত কয়েকদিন পরই। কেন উঠবে সেটাও পরিষ্কার। হাজার হাজার মানুষ না খেয়ে মরবে। লকডাউন রাখা হয়েছিল ভাইরাসটা যেন ধীরে ছড়ায়, ততদিনে যেন ভ্যাক্সিন আবিষ্কার হয়ে যায়। কিন্তু দুঃখের কথা হলো, পুরো পৃথিবীর ৭০০ কোটির সবার হাতে হাতে এই ভ্যাক্সিন পৌঁছাতে, কম করে হলেও ৩-৪ বছর লাগবে। তাই এমন অনন্তকাল লকডাউন রাখা সম্ভব না, সে যত উন্নত রাষ্ট্রই হোক না কেন। চীন, ইতালিতেও উঠিয়ে নেওয়া হচ্ছে লকডাউন ।

তবে আমরা কি এভাবেই মরব?
সহজ ভাষায় বলতে গেলে, হ্যাঁ এবং এটা একদমই প্রাকৃতিক ব্যাপার । প্রতিটা যুগে যুগে এমন Evolution হয়েছে । এক যুগে 'ডাইনোসর' ছিল, কিন্তু প্রকৃতিতে টিকে থাকতে পারেনি বলে তারা আজ নেই । অথচ সেই জুরাসিক যুগের 'তেলাপোকা' এখনো টিকে আছে । কারণ সে নিজেকে Evolve করে, নিজেকে চেঞ্জ করে প্রকৃতিতে টিকে থাকতে পেরেছে। ম্যামথও ছিল তখন, হয়ত 'ম্যামথ' তার রূপ চেঞ্জ করেই বর্তমানের হাতি হয়েছে। এগুলাই Evolution.

তো এগুলো বলার মানে কী ? এগুলো জেনে কী করব ?
আমাদেরও প্রকৃতির উপাদানের সাথে Evolve হতে হবে। লড়াই করে টিকে থাকতে হবে। আমাদের নিজেদেরও চেঞ্জ হতে হবে। কিছু নিয়ম মেনে চললেই এই টিকে থাকা সম্ভব ।

১) অভ্যাসঃ-
বাজে অভ্যাসগুলো ত্যাগ করতে হবে। কথায় কথায় মুখে আঙুল দেয়া, কলমের মুখ কামড়ানো, আঙুল জিহ্বায় লাগিয়ে কাগজ উল্টানো, থুতু দিয়ে টাকা গোনা ইত্যাদি যুগ যুগ ধরে চলে আসা বাজে অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। সাথে মাস্ক পরতে হবে এবং সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে । ২০০৩ এ জাপানে সার্স ভাইরাসের মহামারির পর তাদের মধ্যে এই অভ্যাসগুলো গড়ে উঠেছিল, যা আজ খুব ভাল কাজ করছে ইমিউনিটি বৃদ্ধি করতে। ধূমপান যথাসম্ভব পরিহার করা।

২) এনভায়রনমেন্টঃ
আমরা খুব ভাগ্যবান যে আমরা এমন পরিবেশে আছি। নয়ত এই ঘনবসতিপূর্ণ দেশ কবেই শেষ হয়ে যেত। আর্দ্রতা এবং তাপমাত্রা খুব ভালো কাজ করছে। আর্দ্রতা বেশি থাকা মানে বাতাসে ধুলাবালি কম উড়বে। শীতে আর্দ্রতা কম থাকে, চারিদিক শুষ্ক থাকে বলে বেশি ধুলা ওড়ে। এজন্য শীতপ্রধান দেশে এই ভাইরাস হানা দিচ্ছে বেশি । তাই ঠান্ডা/এসি এভোয়েড করতে হবে, এসি রুমের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়।

৩) ইমিউনিটিঃ
এটাই মোস্ট ইম্পোর্টেন্ট। এই পুরো পোস্ট লেখার পেছনে এই পয়েন্টটাই দায়ী। হার্ড ইমিউনিটির বিকল্প নেই। আমাদের ইমিউনিটি বুস্ট করতেই হবে। সেটা কীভাবে?

ফিজিক্যালি এন্ড মেন্টালি ।

ফিজিক্যালিঃ
* নিয়ম মাফিক ঘুমাতে হবে, রাত জাগা খুব খারাপ শরীর ও ইমিউন সিস্টেমের জন্য । প্রতিদিন কমপক্ষে ৬-৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে ।

* প্রতিদিন ব্যায়াম করতে হবে, প্রায় ১৫-৩০ মিনিট। মাসল এক্টিভিটি বাড়াতে হবে ।

* প্রায়ই রোদে ঘুরতে হবে ছাদে। রোদ দরকার, ভিটামিন ডি লাগবেই লাগবে ।

খাবারঃ
• ভাতে তেমন পুষ্টিও নেই, উল্টা অতিরিক্ত ভাত খেলে আপনি মোটা হবেন । ভাত কম খেয়ে তরকারি এবং প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে হবে ।

• প্রচুর পানি খেতে হবে।



লেখক: পরিচালক, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ঢাকাটাইমস/এসডি-৭

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন