আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যায় সুনামগঞ্জের বেদেপল্লীর শিক্ষার্থীরা!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১০-০৭ ১০:১৩:৫৬

শহীদ নূর আহমেদ, সুনামগঞ্জ :: সুনামগঞ্জের সদর উপজেলার সোনাপুর বেদেপল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খালের মধ্যে গ্রামবাসীর দেয়া বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছে।

প্রতিদিন এ গ্রামের শত শত সাঁতার না জানা শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করছে। ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি স্কুলে যেতে সাঁকো পারারের সময় তিন শিশু সাঁকোতে পরে আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। জরুরি ভিত্তিতে এখানে কালভার্ট নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিন দেখা গেছে, বাঁশের সাঁকো দিয়েই গ্রামবাসীসহ কোমলমতি শিশু শিক্ষাথীরা যাতায়াত করে আসছে। বর্ষা মৌসুমে সাঁকো পারাপারে ঝুঁকি আরো বেশি বলে জানান এলাকাবাসী। ঝড় বাদলের দিনে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা বইপুস্তক, ব্যাগ কাঁধে ফেলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খাল পারাপার করতে গিয়ে ঘটছে হিতে বিপরীত।

জানা যায়, গ্রামের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত এই খালের উৎস হচ্ছে পাশ্ববর্তী গজারিয় নদী। প্রতি বছরই গ্রামবাসীরা বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে যাতায়াত করে থাকেন। এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে এই খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসলেও এদিকে নজর নেই সংশ্লিষ্টদের। তাই আগামী বর্ষা মৌসুমে আসার আগে এই খালে একটি সেতু নির্মাণের দাবি করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা।

বেদেপল্লী সর্দার আকুল আলী বলেন, সাঁতার না জানা শিক্ষার্থীরা বারো মাসই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। ২০১৭ সালে গ্রামের মুন্সি মিয়ার ২য় শ্রেণি পড়ুয়া একটি মেয়ে সাঁকো থেকে পানিতে পড়ে গুরুতর আহত হয়। সদর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা সেবা নিয়ে শিশুটি প্রাণে বেঁচে যায়। গ্রামের পারভীন আক্তারের অপর একটি শিশু সাঁকো থেকে পড়ে গুরুতর আহত হলে তাকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে সুস্থ করা হয়।

তিনি বলেন, এভাবে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটতেই আছে। বর্ষা হলে এ দুর্ঘটনা আরো বেড়ে যায়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর আমার দাবি কোমলমতি শিশুদের কথা সুবিবেচনা করে আমাদের এই খালের ওপর একটি ব্রিজ বা কালভার্ট নির্মাণ করে দেয়া হোক। এটি আমাদের প্রাণের দাবি।

বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা মোছা. জেসমিন বেগম বলেন, বিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষকই প্রতিদিন একটা আতঙ্কের মধ্যে থাকি। কখন কোন শিশু শিক্ষার্থী সাঁকো থেকে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। আমরা প্রতিদিনই শিশুদেরকে সাবধানে চলাচাল করতে উপদেশ দেই।

শিক্ষার্থী বন্যা, সুমাইয়া, পায়েল, তাজনাহার, শহীদুল, আশিক, ফাহিম, তৌহিদুল, রাব্বীল জানায় তারা সাঁকো পারাপারে মারাত্মক ভয় তারা। ভয়ে ভয়ে প্রতিদিনই তাদেরকে স্কুলে আসতে এবং যেতে হয়।

এ নিয়ে ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মমিন মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাদের পরিকল্পনা আছে এখানে স্থায়ী এবং নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করার।

এ ব্যাপারে কথা হয় ইউপি চেয়ারম্যান মো.ফুল মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, সোনাপুর বেদেপল্লীর স্কুল পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা ও গ্রামবাসী যাতে করে নিরাপদে যাতায়াত করতে পারেন সে ব্যাপারে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা ওই খালে স্থায়ী একটা বাঁধ দেয়ার চিন্তা করছি।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/০৭ অক্টোবর ২০১৮/এসএনএ/ডিজেএস

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন

সাম্প্রতিক সুনামগঞ্জ খবর

  •   জগন্নাথপুরের মোশাহিদের স্বপ্ন ঝড়ল ফ্রান্সের সড়কে
  •   তাহিরপুরে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
  •   দিরাইয়ে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা জাতীয় ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন
  •   দক্ষিণ সুনামগঞ্জে এসএসসি ১৪ ব্যাচের মিলনমেলা
  •   দোয়ারাবাজারে ৩শ’ টাকার জন্য সংঘর্ষে আহত ব্যক্তির মৃত্যু, আটক ২
  •   সুনামগঞ্জে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যুবক খুন
  •   দক্ষিণ সুনামগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট'র উদ্বোধন করলেন পরিকল্পনামন্ত্রী
  •   ছাতকে ভাবির সাথে দেবরের পরকিয়া, ভাতিজা খুন
  •   দোয়ারাবাজারে হামলায় সম্ভাব্য ইউপি সদস্য প্রার্থী আহত, উত্তেজনা
  •   গ্রামে এসে নৌকা নিয়ে ঘুরলেন পরিকল্পনামন্ত্রী