আজ শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪ ইং
শাহাব উদ্দিন শিহাব, সিডনি অস্ট্রেলিয়া থেকে :: গত কিছু দিন আগেও ধাও ধাও করে জ্বলছিল অস্ট্রেলিয়ার উত্তর উপকূলের বিশাল বনভূমি ইস্ট গিপসল্যান্ড আর ভিক্টোরিয়া ও গ্লে-নেরাগ এলাকা। বন্যপশু, মাটি আর গাছ-গাছালির পোড়া গন্ধে যখন জীবন ওষ্ঠাগত ঠিক সে সময়ই শুরু হলো মুষলধারে বৃষ্টি। ভয়াবহ দাবানলে ছাই হওয়া অস্ট্রেলিয়ার উপকূল এখন বন্যার পানিতে টইটুম্বুর। ফলে প্রাণ ফিরে পেয়েছেন সব হারানো মানুষগুলো। বাসিন্দাদের আশা জাগিয়েছে বৃষ্টি। তবে অস্ট্রেলিয়া আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে আগামী সপ্তাহ জুড়ে বৃষ্টি থাকবে নিউ সাউথ ওয়েলস সহ বেশ কিছু উপকূল এলাকায়। সেই সাথে একটি নি্ম্নচাপের পূর্বাবাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়াবিদ জেন গোল্ডিং শুক্রবার বিকেলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন যে, চলতি সপ্তাহে নিম্নচাপ উপকূল এলাকায় আঘাত হানতে পারে। এতে ক্ষয়ক্ষতিরও আশংকা করছেন এই আবহাওয়াবিদ।
তিনি জানান, "আমরা গত ২৪ ঘন্টার মধ্যে যা দেখেছি তা হল উত্তর নিউ সাউথ ওয়েলস উপকূলে একটি তীব্র ক্ষয়ক্ষতির। তিনি বলেন, বৃষ্টি এবং ঝড়ের বিষয়টি ইতিমধ্যে পূর্বাভাসে ছিল। এদিকে ভয়াবহ দাবানলে সব হারানো মানুষগুলো বৃষ্টি আর বণ্যার পানি দেখে স্বপ্ন দেখছেন ঘুরে দাঁড়ানোর।
কফস হারবারের উত্তরে গ্লে-নেরাগ শহরের স্থানীয়রা বলছেন, মানুষ এবং দুর্গন্ধযুক্ত ভূমি এখন বৃষ্টির পানিতে দীর্ঘশ্বাস ছাড়তে পারছে। তাই তারা সৃস্টিকর্তাকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছেন। গত সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া ভয়াবহ দাবানলে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে ২৮ জন মানুষ। বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৫০ কোটি প্রাণীরও মৃত্যু হয়েছে। অসংখ্য গাছ পুড়েছে, হাজার হাজার বনভূমি উজাড় হয়েছে, ভস্মীভূত হয়েছে কয়েক হাজার বাড়িঘর। দাবানলে ১৫০,০০০ হেক্টর জমিও পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
তবে অবশেষে বৃষ্টির জন্য স্থানীয়রা তাদের আনন্দের কথা জানিয়ে বলেছেন, গত ২৪ ঘন্টা প্রায় ১০৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হওয়ায় আমরা আনন্দিত। তারা বলেন "আমরা সকলেই বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করেছিলাম এবং এর জন্য প্রার্থনা করেছি এবং আমরা এটি পেয়েছি,"।
গ্লে-নেরাগ এলাকার বাসিন্দা লিয়েন বার্নার্ড জানিয়েছেন, "প্রবাহিত এবং ভীষণ শ্রবণশক্তিটি খুব সুন্দর, এটি সত্যই মানুষের প্রফুল্লতা উঁচু করে তুলেছে।" তিনি আনন্দের সাথে জানান, বৃষ্টি সপ্তাহ জুড়ে অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে, ইতিমধ্যে জমিতে সবুজ ফিরিয়ে আসতে শুরু করেছে।
গ্লে-নেরাগ এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বৃষ্টি চমৎকার, এটি আমাদের বাঁচিয়েছে। গবাদি পশুর খামারিরা জানিয়েছেন বৃষ্টি আসবে সেই আত্মবিশ্বাসটি তাদের ছিল। তারা আশাবাদি ছিলেন যে, ভয়াবহ দাবানলের পর বৃষ্টি হবেই। যদিও তারা দক্ষিণ উপকূলের জনগণের জন্য দুঃখিত, তবে তারা আশা করছেন তারাও বৃষ্টি পাবে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০/শিহাব/ জুনেদ